দুর্ভিক্ষ সংক্রান্ত নিজস্ব কিছু চিন্তা | ইসলাম, খিলাফাহ, শরিয়াহ
দুর্ভিক্ষ সংক্রান্ত নিজস্ব কিছু চিন্তা | ইসলাম, খিলাফাহ, শরিয়াহ
-দুর্ভিক্ষ সংক্রান্ত নিজস্ব কিছু চিন্তা
জমিনের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা মানুষের জন্য খাদ্য প্রেরণ করেন । যখন মানুষ কম ছিল, তখন একই পরিমান জমিতে খাদ্য কম উৎপাদন হত। এখন মানুষ যেমন বেড়েছে, আল্লাহ তায়ালা একই জমিতে ৫ গুনের বেশী খাদ্য প্রেরণ করতেছেন । আগে কম জনসংখ্যা থাকা সত্ত্বেও মানুষ দুইবেলা খাবার জুটাতে হিমশিম খেত, আর এখন অনেক মানুষ পৃথিবীতে(প্রায় ৭.৩ বিলিয়নের মত) । তবু মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশী খায়, খাদ্য নষ্টও করে প্রচুর, অনেকে তিন বেলা + দুপুরের আগে ও বিকালের পরে ভারি নাস্তাও করে । আমেরিকাতে বছরে ১২০ বিলিয়ন ডলারের খাদ্য নষ্ট হয়, অন্যদিকে আফ্রিকা অনেকেই না খেয়ে থাকে। বুঝতেই তো পারতেছেন, যে আল্লাহ তায়ালা মানুষ যেমন পাঠিয়েছেন, খাদ্য নিয়ামতকেও সেই পরিমান প্রেরণ করেছেন । কিন্তু আমরাই সম্পদকে কুক্ষিগত করে খাদ্য বৈষম্য তৈরী করে, কৃত্তিম সংকট তৈরী করি। অনেকে তো লোভে পরে খাদ্য মজুদ করতেছে । আল্লাহ খাওয়াবেন, আল্লাহ তায়ালাই একমাত্র রিযিকদাতা । মানুষ তার রিযিক অর্থাৎ দুনিয়াতে যে সকল নিয়ামত consume করবে তা নিয়েই দুনিয়াতে আসে ।
তারপরও কেন মানুষ না খেয়ে থাকবে, এই করোনা পরিস্থিতিতে কি হবেঃ
- করোনাতে ক্ষতি যাই হোক, জমিনের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা কিন্তু খাদ্য আগের মতই প্রেরণ করতে থাকবেন ।
- কিন্তু সবাই আগের মত কিনতে পারবে না বা কনজিউম করতে পারবে না । ক্রয়ের সুষমতা নষ্ট হবে । ফলে অনেক কিছু অবিক্রিত থাকবে, ফসল নষ্ট হবে, কৃষকরা লাভ হারাবে , তারা উৎপাদন কমিয়ে দিবে ।
- এর জন্য দায়ী মুলত মানুষই। এদের এক অংশের হাতে অঢেল টাকা, আরেক দলের হাতে কিছুই নাই।
- খাদ্য সামগ্রী পরিবহন ও বন্টনও সুষম হচ্ছে না।
- কৃষক ও ভোক্তার মাঝখানের সিন্ডিকেটটা মুল লভ্যাংশ খেয়ে ফেলে।
-পৃথিবীর বেশিরভাগ দুর্ভিক্ষ ছিল ইসলামহীন মানুষের হাতের কামাই ।
রিযিকদাতা আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াতে তার প্রতিনিধি খলিফা প্রেরণ করার কথা কুরআনে ঘোষণা করেছেন, যিনি আল্লাহর কালাম দ্বারা দুনিয়াকে পরিচালিত করেন এবং এমন এক অর্থ ব্যবস্থা, সমাজ ব্যবস্থা, নৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন যার দ্বারা সমাজে সুষম বন্টন প্রতিষ্ঠিত হয় । যেমন খলিফাদের সময় একটি বেওয়ারিশ কুকুরের চিন্তাও খলিফাকে করতে হত । ওসমানিরা তুরস্কের বরফে ঢাকা অঞ্চলে খাদ্য ছিটিয়ে দিত, যেন বরফের কারণে কোন প্রাণী অভুক্ত না থাকে । খিলাফাত এমনই এক ব্যবস্থা ছিল, যেখানে কাফেররা এসেও আশ্রয় গ্রহণ করত জীবনের নিরাপত্তার জন্য । খ্রিস্টান ইহুদীরাও ইসলামি খিলাফাতের অধিনে বহুবার আশ্র্যয় নিয়েছে , কারন খিলাফাত বা ইসলামি সম্রাজ্যের অধিপতি আল্লাহর প্রতিনিধি খলিফাই আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত বিধানের উপর আমল করে দুনিয়ার আশরাফুল মাখলুকাত থেকে সাধারণ জীব সবার জন্য খাদ্য ও ইনসাফের সুষম বন্টন করতে পারে, যা মানবতাবাদী বুলি আওড়ানো কাফের সম্রাজ্যের পক্ষে অসম্ভব । তার অনেকগুলা প্রমাণের একটি প্রমাণ হল আফ্রিকা ।
আমরা আল্লাহ তায়ালার সাহায্য চাই, নববী বরকত, রহমত চাই কিন্তু আল্লাহর প্রতিনিধিত্বশীল
আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত সফলতা ও সাহায্যের ওয়াদা শুধুমাত্র খিলাফাত ও শরিয়াত কায়েমের সাথে, মানব রচিত কিছুর সাথে নয় ।
খিলাফাত অর্থাৎ আল্লাহর বিধান কায়েম ছাড়া কখনই পরিপূর্ণ তাওবা সম্ভব না, কখনই বস্তুবাদী ফাপা সভ্যতার সমস্যা সমাধান সম্ভব না।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সহিহ বুঝ দান করুক। আমিন
- আদনান মুসলিম