Muhammod Ibne Kasim By Nasim Hijaji | Bangla Islamic History Book PDF মোহাম্মদ ইবনে কাসিম

Muhammod Ibne Kasim By Nasim Hijaji | Bangla Islamic History Book PDF |  Bangla Islamic Boi




হিজরি প্রথম শতাব্দিতেই সিন্ধুতে ইসলামের আগমন। আর বিজয়ের উদ্দাম সেনানি ছিলেন মাত্র সতেরো বছরের তরুন মোহাম্মদ ইবনে কাসিম।

DOWNLOAD PDF : - মোহাম্মদ ইবনে কাসিম লেখক : নসিম হিজাজি


তার বীরত্বপূর্ণ জীবনকাহিনী নিয়ে নসিম হিজাযির লেখা একটি ঐতিহাসিক উপন্যাস "মোহাম্মদ ইবনে কাসিম"
Read More : বই সানজাক ই ওসমান | লেখক প্রিন্স মুহাম্মদ সজল 

এ ধরনের উপন্যাসের বড়ই অভাব রয়েছে শতকরা 90% মুসলিমের দেশ বাংলাদেশে।
অনেক তরুন সঠিক ইতিহাস জানেনা।জানেনা মুসলমানদের নানা বিপর্যয় ও সফলতার কাহিনি সম্পর্কে।

ফলে এ জাতি নিজ স্বকীয়তা হারিয়ে নানা কুসংস্কার ও বিভ্রান্তিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। হারাম জাতীয়তাবাদের পিছনে দৌড়াচ্ছে অথচ উম্মাহর বীরত্বের লড়াই সম্পর্কে উদাস।
আমরা জানি ও বিশ্বাস করি সঠিক ইতিহাস চর্চাই জাতিকে আত্মসচেতন করে তোলে।মুসলিম ভূমির প্রতি ভালবাসা এবং এক উম্মাহ এক জাতি বোধে জাগ্রত করে।।
সিন্ধুতে মুসলমানদের বিজয়ের পর যে অগ্রযাত্রার সূচনা হয়েছিল তা অব্যাহত ছিল 1756 সাল পর্যন্ত।
কিন্তু পলাশীর পর উপমহাদেশে মুসলিমদের ইতিহাস যুগ পরম্পরায়
এক বিরাট বিপর্যয়ের ইতিহাস।
Muhammad Ibne Kasim
কিন্তু ইতিহাস বলতে যা বুঝি
তাতে এর কোন আলেখ্য খুজে পাওয়া দুষ্কর।
এই দুষ্কর ও কঠিন কাজটি কিছুটা হলেও করা সম্ভব ঐতিহাসিক উপন্যাস দ্বারা। ইনশাআল্লাহ।

তেমনি এক ঐতিহাসিক উপন্যাস মোহাম্মদ ইবনে কাসিম।
(প্রকাশকের কথা) { কিছুটা পরিমার্জিত }


মুহাম্মদ বিন কাসিম  সূচিপত্র :


১.মুহাম্মদ বিন কাসিম এর গল্পের  আবুল হাসান:

এ পর্বে আবুল হাসান নামের এক আরব ব্যবসায়ির পরিচয় হবে।
তিনি আরব থেকে লঙ্কায় আসেন বাণিজ্য করতে।
লংকা দ্বীপ ও অন্যান্য স্থানে যেসব আরবরা ব্যবসা করতো তারা তখনো আরবের অভ্যন্তরীণ বিপ্লবে প্রভাবান্বিত হয়নি। অধর্মের বিরুদ্ধে ইসলামের বিজয়কে এরা ইরান ও রোমকদের বিরুদ্ধে আরবদের বিজয় মনে করে বিশেষ উৎফুল্ল হয়েছিল।
আরবদের নতুন ধর্মের প্রতি তাদের পূর্ব ঘৃণা এখন আকর্ষনে পরিবর্তিত হলো।

এ সময় যাদের আরব দেশে যাবার সুযোগ হয়েছে তারা এই নতুন ধর্মে পূর্ন আশীষ নিয়ে ফিরে এসেছে।।

লংকায় আরব ব্যবসায়ীদের নেতা ছিল আবদুশ শম্স।এর পূর্ব পুরুষেরা অনেকদিন থেকে এ দ্বীপে বাস করে আসছে।তার জন্ম এ দ্বীপে।প্রবাসী আরব বংশীয় এক কন্যার সাথে হয় তার বিয়ে।

২: মুহাম্মদ বিন কাসিম  লঙ্কার রাজদরবার 

আবুল হাসানের বাণিজ্যদলের লঙ্কার রাজদরবারে যাওয়া এবং অন্যান্য ঘটনা নিয়ে সাজানো পর্ব।
আর না বলি! সব বলে ফেললে বই পড়ার আগ্রহ হারিয়ে যাবে।



মুহাম্মদ বিন কাসিম বই নিয়ে আমার মতামত,


অনেকদিন পর একটানা বই পড়লাম।
কিছু বই থাকে যা পড়ার পরেও টেনে ধরে রাখে।
মোহাম্মদ ইবনে কাসিম হইলো সেই ধরনের বই।
পাতায় পাতায় আবেগ,ভালবাসা, ইসলামের মহত্ত্ব, মুজাহিদিন দের দৃঢ় মনোবল, সাধারন মানুষের ভালবাসায় সিক্ত ইসলামের নেতা।
বইটার শুরু থেকে শেষপর্যন্ত আমি শতবার একজন নেতাকে মিস করছি।

বারবার শূন্যতা অনুভব করছি যে আমাদের একটা নেতা নাই , খলিফা নাই,সেনাপতি নাই যে মুসলিমদের জন্য জানবাজি রেখে জিহাদ করবে।

আমাদের সময়ে আমি মনে করিনা ইসলামের জন্য লড়াই করতে ইচ্ছুক সৈন্যের অভাব, 
বরং একজন সেনাপতির অভাব।
একজন, মাত্র একজন মুসলিম মেয়ের আহ্বানে সেসময় মোহাম্মদ ইবনে কাসিম সিন্ধুর রাজা দাহিরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামছিলো।
বয়স কত ছিল?
মাত্র 17 বছর।


হাই স্কুলে থাকতে সমাজ বইয়ে তাকে নিয়ে স্বল্প একটু আলোচনা পড়ছিলাম যদিও সেখানে তাকে হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফের জামাতা হিসেবে পরিচিত করে দিছে(!) অথচ তার পরিচয় এরচেয়েও অনেক বেশি কিছু ছিল।

কতটা সাহসী,কতটা দৃঢ়,কতটা ঈমানে বিশ্বাসী হলে একজন 17 বছরের বালক মাত্র 10/12 হাজার সৈন্য নিয়ে অর্ধ লক্ষ+ সৈন্যেকে পরাজিত করার সাহস করতে পারে?

কাসিম যখন সিন্ধু অভিযানে যায় তখন তার সৈন্য ছিল 12 হাজারের মত কিন্তু পরে সিন্ধুর শত্রু সৈনিকরাই কাসিমের ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে তার হয়েই যুদ্ধ করতে শুরু করে। 
অমুসলিমরা মুসলিম হয়ে তার দলে যোগদান করে।


ঘটনার শুরুতে লংকা দ্বীপের রাজা সেও অমুসলিম, আবার সিন্ধুর রাজা দাহিরও অমুসলিম অথচ তাদের ব্যবহারে,নীতিতে কতততততত পার্থক্য!! 

বর্তমানে হিন্দুরা প্রচার করে ভারতর মুসলিমরা অবৈধভাবে তলোয়ার দিয়ে দখল করছে(!)

অথচ এটা স্বীকার করেনা মুসলিমদের উপর প্রথম আক্রমন দাহিরই করছিলো। 

কাসিমের দলে যোগদান করা সিন্ধুর 1লাখ সৈনিককে তলোয়ার দিয়ে ইসলামের পতাকার নিচে আনা হয়নি বরং তারাই ইসলামের মহত্ব ,কাসিমেন ব্যবহার দেখে তার সেনাদলে যোগ দিছিলো। মুসলিম হইছিলো।

800 বছর কম না, মুসলিমরা যদি তলোয়ার দিয়েই অমুসলিমদের শাসন করতো তাহলে ভারতে কিংবা স্পেনে কোন খানেই একটাও কাফের থাকতো না।


.
.
যায় হোক বইয়ে ফিরে আসি।
নাহিদ,যুবায়ের,খালিদ,সালমা, আলী,যুহরা, এরা প্রত্যেকে চোখের সামনে ভাসতিছে।
কেমন ফিল করছি পুরোটা পড়ার সময় তা লিখে প্রকাশ করতে পারবো না।

আমি বারবার বর্তমানে একজন মোহাম্মদ ইবনে কাসিমের শূন্যতাঅনুভব করছি।

জেরুজালেম,সিরিয়াইইয়েমেন,আফগান সবখানেই মুসলিমরা আজ মার খাচ্ছে, কেন?

কারন একজন খালিদ বিন ওয়ালিদ(Ra) নেই, মোহাম্মদ ইবনে কাসিম নেই যে ইসলামের পতাকা নিয়ে জিহাদ করবে সাধারন মুসলিমদের জন্য।


আরব নেতারা বিলাসিতায় মত্ত, আমরা আছি খেলাধুলায়, 
অনেক অনেক অনেকক খারাপ লাগছে সেসময়ের সাথে আমাদের সময়ের মুসলিমদের অবস্থা তুলনা করে।

হায়! একজন মেয়ের চিঠিতে ভারতবর্ষের ইতিহাস পাল্টে গেছে।
অথচ হাজার হাজার মুসলিম মেয়ে আজ কাফেরদের দ্বারা অপমানিত হচ্ছে কিন্তু আমাদের কোন খবর নাই আমরা আছি আর্জেন্টিনা ব্রাজিল নিয়ে(!) 

বনি ইজরায়েলকে যখন আল্লাহ জিহাদের জন্য বলছিলো তখন তারা মুসা (আ.) কে কিজবাব দিছিলো জানেন?
হে মুসা তুমি আর তোমার আল্লাহ্ জিহাদ করো, আমরা এখানে আছি!!! 

পরে বনি ইজরায়েলের ফল কি ছিল তা সবাই জানে।
আমাদের মুসলিমদের অবস্থাও বর্তমানে সেম।
ওরা তাও জিহাদকে অস্বীকার করেনি! 
আমরা জিহাদকে অস্বীকার করে বসে আছি।
জিহাদ করা তো দূর জিহাদ শব্দটা উচ্চারন করতেও ভয় পায় পাছে যদি কেউ জঙ্গী বলে (!!!)


বইটার বেশ কিছু পয়েন্ট খুবই নাড়া দিছে মন কে।
মোহাম্মদ ইবনে কাসিম মাত্র 20 বছরে মারা যান। খলিফার নির্দেশে তাকে হত্যা করা হয়। যদিও পরে সে হত্যার আদেশ ফিরিয়ে নিছিলেন কিন্তু অনেক দেরি হয়ে যায়।

কাসিমের অধিনে সিন্ধুতে 1 লাখের বেশি সৈন্য ছিল যারা তার জন্য জীবন দিতেএ রাজি তবুও তিনি খলিফার আদেশ মেনে সিন্ধু থেকে দামেস্কের পথে আসেন।

তিনি চাননি খলিফার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে মুসলমান মুসলমান যুদ্ধে জড়িয়ে যাক, তাই তিনি নিজের জীবন দিয়ে খলিফার আদেশ মান্য করে।

খলিফা সোলায়মান তাকে হত্যা না করলে হইতো ইতিহাস অন্যরকম হতো। মাত্র তিনবছরের যুদ্ধে সে ভারতের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত চলে গেছিলো।
ভারতের অমুসলিমরাই
তাকে ফেরত যেতে মানা করছিলো , তারা চাইনি সিন্ধু এমন একজন ন্যায় শাসককে হারাতে
কাসিম 715 সালে মারা যায়, এরপরে খলিফা আর কতদিন বেচে ছিলো?
মাত্র দুইবছর!

717 তে সেও মারা যায়। আর উমাইয়া খেলাফত ধ্বসে পড়ে 750 সালে।
জীবন মৃত্যু আল্লাহর হাতে। তিনি যেমন চেয়েছেন তেমন ই হবে। সবাইকেই মারা যেতে হবে যখন সময় হবে। আল্লাহ্ মোহাম্মদ ইবনে কাসিমে হায়াত দিছিলেন 20 বছর তাই তিনি বেচে ছিলেন 20 বছর। কেউ তো আর হায়াত বাড়াতে পারেন্ আল্লাহ্ ছাড়া।
ইবনে কাসিমের হত্যাকারি সালিহ কে আল্লাহ্ জাহান্নাম দিক।
মোহাম্মদ ইবনে কাসিম এবং তার সৈন্যদের আল্লাহ্ জান্নাত নসিব করুক, যাদের উছিলায় আজ আমরা ভারতবর্ষে ইসলাম ধর্ম পেয়েছি। আল্লাহ্ তাদের কবরে শান্তি দিক, শহিদের মর্যাদায় তাদের কবরকে বেহেশতের একটা বাগানে পরিনত করুক সেই দোয়া করি।  


মোহাম্মদ ইবনে কাসিম Bangla pdf


আর দোয়া করি আমাদের সময়েও যেন আল্লাহ্ একজন মোহাম্মদ ইবনে কাসিমের মত মানুষকে পাঠান যার নেতৃত্বে ইসলাম আবার মাথা তুলে দাড়াবে, মুসলিমরা হারানো গৌরব ফিরে পাবে।
বর্তমান মুসলিম নেতাদের দেখলে লজ্জা লাগে! এরা কাপুরুষ। এদের কারনে আমরাও কাপুরুষ হয়ে আছি।
আল্লাহ্ মুসলিম বিশ্বের উপর রহমত নাজিল করো, জেরুজালেম,ইয়েমেন,শামের উপর রহমত নাজিল করো আল্লাহ্।
আর সর্বশেষে ইচ্ছা ইমাম মাহদির সাথে একত্রে কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে মরার তৌফিক দিও আল্লাহ্।
.
.
.
আমাকে জঙ্গী জঙ্গী মনে হচ্ছে? জিহাদিস্ট মনে হচ্ছে? সাম্প্রদায়িক? 
যদি মনে হয়ে থাকে তাহলে নিজের ঈমান চেক করেন,কোরান হাদিস পড়েন, ইতিহাস পড়েন। চোখ খুলেন। মিডিয়ার চোখে না দেখে নিজের চোখে দেখা শেখেন। বুদ্ধি খাটান, তারপর সিদ্ধান্তনিতে শিখেন।
আর যারা কাফের তারা সবসময় মুসলিমদের বিরুদ্ধে বলবে যতক্ষন না মুসলিমরা এক আল্লাহর আনুগত্য ছেড়ে কাফেরদের মূর্তি /তিন গডের আনুগত্য না মানি। এই কথা আল্লাহ
কোরানে বলছে । টেস্ট করেও দেখতে পাবেন, সত্যতা পাবেন শতভাগ।
ভালো থাকুন ।



নবীজী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহিস সালাম) এক যুবককে জিহাদে যাওয়ার বদলে পিতা-মাতার খিদমতে ঘরে থাকতে বলেছিলেন -এই উদাহরণ দেখিয়ে অনেকে জিহাদে না যাওয়াকে বৈধ অজুহাত হিসেবে উপস্থাপন করতে চান। কিন্তু এর প্রেক্ষাপট ছিল, স্বয়ং আমীর নিজেই নির্দেশ দিয়েছন, এবং জিহাদটি ছিল কিফায়া। কিফায়ার ক্ষেত্রে তো আমারা সকলেই হয়ত জানি যে যথেষ্ঠ সংখ্যক লোক আদায় করলেই সকলের আদায় হয়ে যায়। আমরা যেই পয়েন্টটা মিস করি সেটা হল, নবীজী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহিস সালাম) সেই যুবককে পিতা-মাতার খিদমতে থেকে যেতে বললেও, বাকিদের কি বলেছিলেন? কারা তাহলে জিহাদে গেলেন? তারা কেন সেই যুবকের মত পিতা-মাতার খিদমতে থেকে গেলেন না? অর্থাৎ ওই যুবকের বিধানটা খাস, আর বাকিদেরটা ‘আম।
.
অথচ আমাদের বেশীর ভাগ ইনক্লুডিং মি, খাসটাই নিজের জন্য প্রযোজ্য করছি। কতক তো ‘আম বিধানটার বিপরীতে খাসটাকে উপস্থাপন করছে, কারণ শরীয়াহর একাংশ তার পছন্দের আরেকাংশ না। আমাদের নিজেদের ওজর এবং দূর্বলতার জন্য যেন আমরা শরীয়াহর কোন বিধানকে অপছন্দ না করি, কারণ এটা ইলহাদ-কুফর পর্যন্ত গড়িয়ে যেতে পারে। শয়তান তো আছেই আপনাকে পিছন থেকে ধাক্কা দেবার জন্য। এবং এইটুকু তো হল জিহাদ যখন ফরযে কিফায়ার ক্ষেত্রে। আর জিহাদ এ্যাটলিস্ট ফরযে কিফায়া। এর নীচে কখনো যাবে না। যারা বলে যে এর নীচে যেতে পারে, তারা যে জেনে না জেনে কাফির-মুশরিকদের দালাল এ ব্যাপারে আমার কোন সন্দেহ নেই। সন্দেহ কেবল তারা কি কাদিয়ানীদের মত মুরতাদ কিনা। তাহলে জিহাদ যখন এ্যাটমোস্ট ফরযে ‘আঈন হয়, তখন বিষয়টা কেমন হবে?
.
এবার একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে যাই। আর সেটা হল নারী ডাক্তার। আমাদের নারী ডাক্তার প্রয়োজন। শুধু নারী ডাক্তারই নয়, নারীদের জন্য নারী টেইলার্স থেকে শুরু করে আরো অনেক বিষয়ে কেবল নারীই প্রয়োজন। কিন্তু সমাজের সকল নারীই ডাক্তার হবে না, বা অন্য সেই প্রয়োজনীয়া পেশাগুলো গ্রহণ করবে না। তাই যত সংখ্যক নারী ডাক্তার কিংবা অন্য কোন প্রয়োজনীয় পেশার হলে সমাজের প্রয়োজন পূরণ হয়, ততসংখ্যকের ডাক্তার কিংবা অন্য কোন প্রয়োজনীয় পেশার হওয়া কিফায়ার মত বলা যায়, ওয়াজিবে কিফায়া। এবার একটু তাদের কথা মনে করুন, যারা ওই যুবককে ঘরে থেকে যাওয়ার আদেশকে তাদের নিজেদের জন্য জিহাদে না যাওয়ার অনুমতি বলে গ্রহণ করছে, তারা কি এক্ষেত্রেও একই রকম আচরণ করছে? তারা কি বলছে, যে বেশী থেকে বেশী হলে নারীদের ডাক্তার হওয়া ওয়াজিবে কিফায়া, তাই আমাদের নারীদের এর জন্য বের না হলেও চলবে, ঘরেই থাকুক?


.
জিহাদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে আমীরকে শর্ত ধরা হচ্ছে, আমীর থাকলে তার ইমারাহকেও শর্ত ধরা হচ্ছে, আবার ইমরাহ থাকলে সেটার এমন তামকীনকে শর্ত ধরা হচ্ছে, যে তামকীনে জাতিসঙ্ঘ সহ বিশ্ব তাগুতের স্বীকৃতি আছে। তারপর তাগুতের ‘ল এ্যান্ড অর্ডার মেনে তাগুতের বিরুদ্ধে জিহাদ করলে সেটা বৈধ জিহাদ হবে বলে দাবী করা হচ্ছে। বস্তুত এরকম জিহাদ বাস্তবে কখনো সম্ভব হবে না। এটা ঠিক যে, হয়ত এক তাগুতের বিরুদ্ধে আরেক তাগুত কিছু সময়ের জন্য এরকম জিহাদের অনুমতি দিবে। যেমন সোভিয়েতের বিরুদ্ধে ইউএসের অনুমতি। কিন্তু যখনই বন্দুকের নল ইউএসের দিকে ঘুরে গেল, জিহাদের অনুমতি আর থাকল না। বিষয়টা কি বুঝা গেলে যে ফতওয়ার মূল চেইন অব কমান্ড-টা কাদের হাতে দিয়ে বসে আছি? বাস্তবে জিহাদ করতে হলে আমীর নিয়োগ দিতে হলে, ইমারাহ কায়েম করতে হলে, তামকীন পেতে হলে তাগুতের ‘ল এ্যান্ড অর্ডার ভেঙেই করতে হবে। তাগুতের ‘ল এ্যান্ড অর্ডারকে স্বীকৃতি দিয়ে লুপ হোলে পড়ে থাকলে কখনোই ইমারাতে ইসলামিয়া কায়েম হবে না, ইফ নট গণতান্ত্রিক, সেকুলার ইমারত। কারণ কুফর বিত তাগুত করতেই হয় ঈমান বিল্লাহ জন্য।


.
আবার একটু ফিরি মাঝের কথায়। এই যে জাহিলিয়াতের পরিবেশ, নারীরা বাহিরে গেলেই ফিতনা হয়, তারা যানবাহনে উঠলে ঘষাঘষির কারণে গুনাহ হয়, ছেলেদের হয় না? তাহলে নারী শিক্ষা, নারী ক্ষমতায় যদি গুনাহর কাজ হয়, পুরুষ শিক্ষা ক্ষমতায়নও তো গুনাহর কাজ হবার কথা! এই বিষয়টাতে কিন্তু মুসলিমদের সকলেই একমত যে আমাদের এই দেশগুলো হচ্ছে দারুল জাহিলিয়াহ, এখন এটাকে কেউ জোর করে দারুল ইসলাম বলুক, অথবা দারুল হারব কিংবা দারুল আমান। মূল কথা হচ্ছে আমাদের দেশ দারুল জাহিলিয়াহ। এবং আমাদের সকল ঘরাণার মুসলিমদের ভাষার টোন, এ্যাপ্রোচ, সবকিছু এর স্বীকৃতি দেয়। তাই মুখে যতই শব্দের খেলা খেলুন, আপনি ইন্ড অফ দা ডে, সেটাই মানেন যা আপনি করেন। এখন দ্বীনের কিছু ‘ইলম অর্জন করা ফরযে ‘আইন নর-নারী উভয়ের জন্য আর কিছু ‘ইলম প্রকার ভেদে ফরযে কিফায়া। আর বাকি যেসমস্ত জায়িজ ‘ইলম আছে সেগুলো অন্য কোন ওয়াজিবের সাপেক্ষে হয়ত ওয়াজিব হয়। তাই নারী শিক্ষা ও ক্ষমতায়নের বিপরীতে পুরুষের শিক্ষা এমন ক্ষমতায়ন সর্বদা একই রকম না, সেটা বুঝতে হবে। আবার জায়িজ মানেই ওয়াজিব না। আবার জায়িজ মানেই এমনও না যে সেটার সম্পদনা করতে গিয়ে হারাম কাজে জড়িয়ে গেলে তা জায়িজ উরফে অনুমোদনের স্তরে উন্নিত হবে।



.
ননমাহরামদের সাথে ঘষাঘষি করাটা গুনাহর কাজ, এখন অনিচ্ছাকৃত হলে সেটাকে নিজের জন্য গুনাহর কাজ ভাবতে হবে। আর অনিচ্ছাকৃত নিয়মিত হলে সেটা আর অনিচ্ছাকৃত থাকে না। কিন্তু প্রশ্ন আসতে পারে যে আমরা তো বাধ্য হচ্ছি অনেক সময়! তখন কিন্তু নর-নারীর ব্যাপারে পার্থক্য করতে হবে। যেমন পুরুষের জন্য তার পরিবারের জন্য উপার্জন করা ওয়াজিব, নারীর জন্য নয়। এখন পরিবারের জন্য যথেষ্ঠ উপার্জন না করাও গুনাহ, আবার কোন গুনাহর পরিবেশে থেকে উপার্জন করা কিংবা উপার্জনের জন্য প্রশিক্ষণ নেয়াও গুনাহ। এক্ষেত্রে কস্ট-ক্ষতি হিসাব করতে হবে। এবং গুনাহকে গুনাহ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েই তুলনা মূলক বেশী গুনাহটা প্রথমে ছেড়ে দিতে হবে। এবং ভুলেও মন্দের ভালো মানহাজে বিশ্বাস করা যাবে না। বলতে হবে যে তুলনা মূলক বেশী মন্দটাকে এ্যাভোয়েড করছি।
.


আর যদি কখনো মন্দের ভালোতে মজে যান, তখন 'ভালো' শব্দটা ওই ব্যাপারটিতে আপনার জন্য গুনাহ হচ্ছে না এমন সাইকোলজি ক্রিয়েট করবে। আপনি আর সেটার জন্য ক্ষমা চাইবেন না, সেটা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার চেষ্টা করবেন না। নিজেই সিস্টেম হয়ে যাবেন সিস্টেম ইউস করতে গিয়ে। অথচ হয়ত আপনার জন্য গুনাহ লিখা হচ্ছিল না, অনুতপ্ত হওয়ার দরূণ হয়ত, আপনাকে সওয়াব দেয়া হচ্ছিল। কিন্তু যখনই ওজরের দোহাই দিয়ো সেটাকে নিজের জন্য গুনাহ ভাবা বন্ধ করে দিলেন, আপনার জন্য বরকতটা থেমে গেল। আপনি অন্যের জন্য সেটাকে অনুমোদিত ভাবুন। ভাবুন যে আল্লাহ হয়ত মাফ করে দিবেন। কিন্তু নিজের জন্য গুনাহ ভাবুন। হয়ত বিষয়টা আসলেই অনুমোদিত। এমন অনুমোদিত যে আল্লাহ ছাড় দিবেন। কিন্তু বিষয়টাকে গুনাহ হিসেবে স্বীকৃতি দিন, তাহলে তওবা করার রসদ পাবেন। আর তওবা করলে “হয়ত না” না, বরং নিশ্চিতভাবে আল্লাহ তা’আাল ক্ষমা করবেন।


.
একজন পুরুষ অথবা নারী উভয়ের জন্যই একই কথা। আপনি ডাক্তার হতে চাচ্ছেন? এর কস্ট-ক্ষতি কি সেটা হিসাব করুন। অথবা কোন কিছুর মধ্যে আছেন, জানতেন না যে এগুলোতে সমস্যা আছে, আবার হুট করে বের হতে পারছেন না, আবার এগুলোর কিছু প্রয়োজনীয়তাও আছে, তখন কস্ট মেজার করুন। গুরুতর গুনাহকে শুরুতে বাদ দেয়ার চেষ্টা করুন, এবং লঘু গুনাহগুলোর জন্যও ক্ষমা চাইতে থাকেন। কখনোই এটা ভাববেন না যে, আপনার এই হালতে আপনার জন্য এসব জায়িজ। যেমন আপনি একজন মেয়ে। ডাক্তারি পড়ছেন। হয়ত কিছু নাজায়িজ এবং হারাম কাজ জড়িয়ে পড়তে হচ্ছে। এটা কখনোই ভাববেন না যে আপনি বা মেয়েরা ডাক্তার না হলে তো মেয়েদেরই বিপদ, তাই এসব গুনাহ নিয়ে কিছু বলা হবে না। অথবা অন্য কোন পেশা বা প্রস্তুতি। আপনার ঘরে উপার্জনের জন্য কেউ নেই। আপনি বাধ্য হচ্ছেন। ভুলেও না, এবং এই এটা নিয়ে নসীহাহ দিলে, এমনকি সমালোচনা করলেও তেলে-বেগুনে জ্বলবেন না। এটা সেগুলোকে জায়িজ ভাবার ইঙ্গিত বহন করে। আপনি আল্লাহর কাছে গোপণে ক্ষমা চান, পরিত্রাণ চান, আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করবে, পরিত্রাণ করবেন।


.
কিন্তু যদি ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেন যে, মেয়েরা ডাক্তার না হলে, বের না হলে তুই তো মা-বোনরে নিয়া যাবি কই শালার পুত? অথবা আমি বিপদে পড়লে কি তুই খাওয়াবি? তাহলে ধরা খাবার সেই চান্স আছে! কারণ যারা সামালোচনা করবে, তাদের কারোকারো লজিকে সমস্যা কিংবা আচরণে বাড়াবাড়ি থাকলেও, রুট কিন্তু কোন একটা হারাম কাজকে ইঙ্গিত করে। তাই আপনি যদি তাদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে গিয়ে কোন হারামকে হারাম না বলেন, তখনকার জন্য বলছি ধরা খাবার চান্স আছে। কারণ শয়তান যেমন সমালোচককে ধাক্কা দিচ্ছে, আপনাকেও দিচ্ছে! যদি প্রচলিত পদ্ধতিকে ‘আমভাবে জায়িজ মানার টেন্ডেন্সী তৈরী হয় (হয়ে আছে অবশ্য) এ সিস্টেম চেইঞ্জ হবে না, আমরাও ‘আমভাবে পরিত্রাণ পাবো না। আমরা তওবা করার রসদ পাবো না, কারণ আমরা তো সেগুলোকে গুনাহর কাজই মনে করি না। টেন্ডেন্সী এমন যে দুনিয়ার প্রয়োজনের ওজর থাকলে গুনাহ আর গুনাহ থাকে না, সেটার জন্য তওবা করা লাগে না। তাহলে একবার ভাবুন অজানা গুনাহর জন্য সাহাবারা তওবা করতেন। এই কাজের হিকমাহ নিয়ে একটু ভাবুন।


.
জাহিলিয়াকে জায়িজ বানিয়ে দিলে কখনোই এর পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, এর আসর থেকে না দুনিয়াতে রক্ষা পাওয়া সম্ভব না আখিরাতে। কারণ জায়িজ ভাবার দরূন আপনি এর জন্য তওবা করছে না, আর দুনিয়াতেও এটাকে টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করছেন, তাই পরিত্রাণ পাচ্ছেন না। উদাহরণ সরূপ গণতন্ত্র, সেকুলারিসম, ফেমিনিসমকে যেভাবে জায়িজ করা হয়, অথচ আল্লাহর দেয়া ফরয বিধান জিহাদ অথবা খিলাফাহ, শরীয়াহ কায়েম এগুলোকে এমন করা হয় যেন এগুলো নাজায়িজ কাজ। এমন শর্তে তালা মারা হয় যে বাস্তবতায় এগুলো কায়েম অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে। অথচ ঠিকই গণতন্ত্র আর সেকুলারিসমকে জায়িজ করে টিকিয়ে রাখা হচ্ছে, এগুলোর মাধ্যমে কাফিরদের নাক গলানোর সুযোগ দেয়া হচ্ছে। কারণ আমরা শক্তের ভক্ত নরমের যম তবুও অন্তত তওবাটা যেন করি। দুনিয়াতে পরিত্রাণ না পেলেও যেন আখিরাতে অন্তত পাই।

Courtesy :

Ibn Mazhar > Naseehah (দ্বীনি পরামর্শ)

Next Post Previous Post