আদর্শ, না তরবারি? “যখন কিতাব ও সুন্নাহর ইলম প্রচার লাভ করবে, আর তরবারি তার সঙ্গী হবে, তখনই প্রতিষ্ঠিত হবে এই দীন।”

আসমানি কিতাব কোরআন ও সুন্নাহর ইলম এবং তরবারি


ইসলাম একমাত্র ভারসাম্যপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। শান্তি ও শাস্তি, উদারতা ও কঠোরতার অসাধারণ সম্মিলন ঘটেছে এই দীনে। শুধু উদারনীতি প্রয়োগ করে পৃথিবীতে কোনো মতবাদ টিকতে পারেনি। এ জন্যই দেখা যায়, উদারনীতির সবক শেখানো মতবাদগুলোই পৃথিবীতে সবচেয়ে ভয়াবহতার ইতিহাস রচনা করেছে। এ জন্য প্রয়োজন উদারতা ও কঠোরতার সামঞ্জস্যকরণ। যা কেবলই ইসলামেই রয়েছে। এই দীনের প্রতিষ্ঠায় সর্বদায়ই ছিল পথপ্রদর্শনকারী কিতাব ও তার সাহায্যকারী তরবারি। আল্লাহ ﷻ কিতাবের সাথে হাদিদ নাযিল করেছেন, যারা কিতাব মানবে না তাদের শিফাস্বরূপ। এটাই ছিল সাহাবাদের বুঝ। সালাফুস সালিহিনও ছিলেন এই বুঝেরই উপর।

আদর্শ, না তরবারি?

আল্লাহ ﷻ বলেন, لَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا بِٱلْبَيِّنَٰتِ وَأَنزَلْنَا مَعَهُمُ ٱلْكِتَٰبَ وَٱلْمِيزَانَ لِيَقُومَ ٱلنَّاسُ بِٱلْقِسْطِۖ وَأَنزَلْنَا ٱلْحَدِيدَ فِيهِ بَأْسٌ شَدِيدٌ وَمَنَٰفِعُ لِلنَّاسِ وَلِيَعْلَمَ ٱللَّهُ مَن يَنصُرُهُۥ وَرُسُلَهُۥ بِٱلْغَيْبِۚ إِنَّ ٱللَّهَ قَوِىٌّ عَزِيزٌ আমি স্পষ্ট নিদর্শনসহ আমার রাসূলদেরকে পাঠিয়েছি এবং তাদের সাথে কিতাব ও (ন্যায়ের) মানদণ্ড দিয়েছি, যাতে মানুষ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করে। আমি লোহাও দিয়েছি, যার মধ্যে (যুদ্ধের জন্য সহায়ক) প্রচণ্ড শক্তি ও মানুষের জন্য অনেক কল্যাণ আছে; এজন্য যে, আল্লাহ জানতে (যাচাই করতে) চান, কে না দেখেও তাঁকে ও তাঁর রাসূলদেরকে সাহায্য করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী। [কুরআন, ৫৭:২৫]
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ﺑُﻌِﺜْﺖُ ﺑَﻴْﻦَ ﻳَﺪَﻱْ ﺍﻟﺴَّﺎﻋَﺔِ ﺑِﺎﻟﺴَّﻴْﻒِ ﺣَﺘَّﻰ ﻳُﻌْﺒَﺪَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻭَﺣْﺪَﻩُ، ﻻ ﺷَﺮِﻳﻚَ ﻟَﻪُ، ﻭَﺟُﻌِﻞَ ﺭِﺯْﻗِﻲ ﺗَﺤْﺖَ ﻇِﻞِّ ﺭُﻣْﺤِﻲ، ﻭَﺟُﻌِﻞَ ﺍﻟﺬِّﻟَّﺔُ ﻭَﺍﻟﺼَّﻐَﺎﺭُ ﻋَﻠَﻰ ﻣَﻦْ ﺧَﺎﻟَﻒَ ﺃَﻣْﺮِﻱ، ﻭَﻣَﻦْ ﺗَﺸَﺒَّﻪَ ﺑِﻘَﻮْﻡٍ ﻓَﻬُﻮَ ﻣِﻨْﻬُﻢْ “আমি কিয়ামতের পূর্বে তরবারি সহকারে এ উদ্দেশ্যে প্রেরিত হয়েছি যে, কেবলমাত্র এক আল্লাহ তায়ালারই ইবাদত করা হবে। আর আমার রিযিক রাখা হয়েছে আমার বর্শার ছায়াতলে। যারা আমার আদেশের বিরুদ্ধে যাবে তাদের জন্য অপমান (আর লাঞ্ছনা) নির্ধারিত রয়েছে। আর যে কেউ তাদের অনুকরণ করে সে তাদেরই একজন।” [আহমাদ: ৪৮৬৯, বুখারিতে তা'লিক হিসেবে বর্ণিত]
তিনি আরও বলেছেন, انا نبي الرحمة... وانا نبي الملحمة আমি রহমতের নবি... আমি যুদ্ধের নবি। [যাদুল মায়াদ, ১/৮৮] সাহাবা আজমাইনও এই বুঝই ধারণ করেছিলেন। জাবির ইবনু আবদিল্লাহ রা. একবার এক হাতে কুরআন অপর হাতে তরবারি নিয়ে ঘোষণা করেছিলেন- “রাসুলুল্লাহ ﷺ আমাদের আদেশ করেছেন, এটা (কুরআন) থেকে যারা মুখ ফিরিয়ে নেবে তাদেরকে এটা (তরবারি) দিয়ে আঘাত করার জন্য।” [তারিখু ইবনি আসাকির, ৫২/২৭৯]
“তোমরাই হলে সর্বোত্তম জাতি, মানবজাতির কল্যাণের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে...।”
[কুরআন, ৩: ১১০]

এই আয়াতটি সম্পর্কে আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, 'মানুষের জন্য মানুষ কল্যাণজনক তখনই হয় যখন তাদের গ্রীবাদেশে শিকল লাগিয়ে নিয়ে আসা হয়, এরপর তারা ইসলামে প্রবেশ করে।' [সহিহুল বুখারি: ৪৫৭৭]
ইসলামের ব্যাপারে সালাফদের বুঝও ছিল অনুরূপ। শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়াহ (রাহি.) বলেছেন,
“...আনুগত্য হবে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য, আর আল্লাহর কালিমা হবে সমুন্নত। আল্লাহর
কালাম হচ্ছে সর্বব্যাপী। আর আল্লাহ ﷻ বলেন, 'আমি আমার রাসূলদেরকে সুস্পষ্ট নিদর্শনসহ প্রেরণ করেছি এবং তাঁদের সাথে অবতীর্ণ করেছি কিতাব ও ন্যায়নীতি, যাতে মানুষ ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে।' [কুরআন, ৫৭:২৫]

আদর্শ, না তরবারি?  “যখন কিতাব ও সুন্নাহর ইলম প্রচার লাভ করবে, আর তরবারি তার সঙ্গী হবে, তখনই প্রতিষ্ঠিত হবে এই দীন।”
নবি-রাসূল প্রেরণ ও কিতাব নাযিলের মাকসাদ হচ্ছে মানবজাতি যেন আল্লাহর হক ও বান্দার হকের ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারে। এরপর আল্লাহ তায়ালা বলছেন, 'আর আমি নাযিল করেছি লৌহ, যাতে আছে প্রচন্ড রণশক্তি এবং মানুষের বহুবিধ উপকার। এটা এজন্যে যে, আল্লাহ জেনে নিবেন কে না দেখে তাঁকে ও তাঁর রাসূলগণকে সাহায্য করে।'
কাজেই যে বিচ্যুত হয়ে পড়ে আল্লাহর কিতাবের পথ হতে তাকে ফিরিয়ে আনতে হবে লৌহের শক্তি দ্বারা। এভাবেই এই দীনের ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা পায়- কুরআন ও তরবারির মাধ্যমে। জাবির ইবনু আবদিল্লাহ (রা.) বলেন, 'আল্লাহর রাসূল ﷺ আমাদেরকে আদেশ করেছেন এটা (তরবারি) দিয়ে আঘাত করতে, যে কেউ এটা (কুরআন) থেকে ফিরে যায়।” [মাজমুয়ুল ফাতাওয়া, ২৮/২৬৩]
তিনি আরও বলেন, “যখন কিতাব ও সুন্নাহর ইলম প্রচার লাভ করবে, আর তরবারি তার সঙ্গী হবে, তখনই প্রতিষ্ঠিত হবে এই দীন।” [মাজমুয়ুল ফাতাওয়া, ২০/৩৯৩] ইমাম ইবনু তাইমিয়াহর আরেকটা মশহুর কওল আছে- ﻓَﺎﻟْﻜِﺘَﺎﺏُ ﻳَﻬْﺪِﻱ ﻭَﺍﻟﺴَّﻴْﻒُ ﻳَﻨْﺼُﺮُ “কিতাব হলো পথপ্রদর্শক, তরবারি হলো সাহায্যকারী।”
ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহি.) বলেন, “আল্লাহ তাঁর রাসুলকে কিয়ামতের পূর্বে প্রেরণ করেছেন হিদায়াতের কিতাব ও বিজয়ী তরবারি সহকারে, যেন একমাত্র আল্লাহরই ইবাদাত করা হয় শরিকবিহীন অবস্থায়, আর তাঁর রিযিক নির্ধারিত হয়েছিল তরবারি ও বর্শার ছায়াতলে। আল্লাহ তায়ালা এই দীনকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একদিকে দলিল-প্রমাণ, আর অন্যদিকে তরবারি ও বর্শা দিয়ে। এই দু'টো বিষয় এমন ঔতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে, যার একটি থেকে অপরটি আলাদা করা যায় না।” [আল-ফারুসিয়্যাহ, পৃ. ১৮] . প্রজন্মপরম্পরায় অবিচ্ছিন্নভাবে মুসলিম উম্মাহ দীন-ইসলামের ব্যাপারে এই বুঝই বহন করছিল। কোনোকালেই ইসলামকে কেবলই শান্তি আর শান্তির ধর্ম হিসেবে উপস্থাপন করা হয়নি। মুসলিমরা কখনই কাফিরদের থেকে ইসলামের উদারনীতির সবক শিখেনি। কাফিররা এই সাহসও করতে পারেনি। কারণ, কিতাব ও তরবারি প্রয়োগের বাস্তব নমুনা তখন উপস্থিত ছিল।
কিন্তু কিতাব থেকে যখন তরবারি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল, দীর্ঘ একটা কাল পর্যন্ত যখন উম্মাহ
তরবারির প্রয়োগ দেখেনি, চারিদিক থেকে যখন উম্মাহর পতনের পর পতনের খবরই ভেসে আসছিল, তখন শত্রুরা নতুন এক ফাঁদ পাতলো। মুস্তাশরিকিন বা ওরিয়েন্টালিস্টদের পলিসি সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তারা ব্যাপারটা সহজেই বুঝতে পারবেন। ইসলামের এই প্রকৃত রূপটা তাদের কাছে খুবই অপ্রীতিকর। শঙ্কারও কারণ বটে। তাই তারা প্রথমে ইসলামের এই 'ভয়ঙ্কর' রূপটা চিহ্নিত করল, আদর্শ আর সংগ্রামকে আলাদা দু'টি মেরুতে নিয়ে দাঁড় করালো।

প্রশ্ন তৈরি করল- 'ইসলাম কি আদর্শের জোরে প্রসার লাভ করেছে, নাকি তরবারির জোরে?' অথচ এই প্রশ্নটার মধ্যেই আছে মারাত্মক চতুরতা। এর মানে দাঁড়াচ্ছে যে, আপনাকে যেকোনো একটা বেছে নিতে হবে। হয় আদর্শ, নয় তরবারি। আবার তারাই এর সল্যুশন দিলো, এক নয়া সহনশীল, উদারনৈতিক, অহিংস, শান্তিবাদি ইসলামের প্রচার শুরু করল। প্রাচ্যবিদ থমাস আরনল্ড তারﺍﻟﺪﻋﻮﺓ ﺇﻟﻰ ﺍﻹﺳﻼﻡ ‏ গ্রন্থে লিখল- ﺃﻥ ﺍﻹﺳﻼﻡ ﻟﻢ ﻳﻨﺘﺸﺮ ﺑﺎﻟﺴﻴﻒ ، ﻭﺇﻧﻤﺎ ﺍﻧﺘﺸﺮ ﺑﺎﻟﺪﻋﻮﺓ ﺍﻟﺴﻠﻤﻴﺔ ﺍﻟﻤﺘﺒﺮﺋﺔ ﻣﻦ ﻛﻞ ﻗﻮﺓ “ইসলাম তরবারির মাধ্যমে প্রসারিত হয়নি, বরং শান্তিপূর্ণ দাওয়াতের মাধ্যমে, কোন ধরনের শক্তি প্রয়োগ ছাড়াই ইসলাম প্রসারিত হয়েছে।”
ধর্মনিরপেক্ষতার জয়জয়কারের যুগে পরাজিত মানসিকতার বহু ইসলামিস্ট নিজেদেরকে সাধু প্রমাণার্থে চতুরতাপূর্ণ এই শ্লোগানকেই আঁকড়ে ধরল, তারাও ওরিয়েন্টালিস্টদের সহযোগি হয়ে সেই নয়া ইসলাম প্রচারে নেমে পড়ল। মূলত তারা চাইছিল, এই 'কলঙ্ক' থেকে ইসলামকে মুক্ত করতে।

তাই কুরআন, সুন্নাহর সুস্পষ্ট আদিল্লাহ, আসহাবুর রাসুল ও আসলাফ আল-ইসলামের ফাহম বা আন্ডারস্ট্যান্ডিং এবং দীনের সমস্ত উসুল ও উসলুবকে পাশ কাটিয়ে ওদের সুরে সুর মিলিয়ে বলতে লাগলো- “না, না, ইসলাম উদারতা, সহিষ্ণুতা, অহিংসতা ও শান্তির ধর্ম। ইসলাম শুধুমাত্র তার অন্তর্নিহিত আদর্শের বলেই প্রসার লাভ করেছে। আর যা-ও কিছু যুদ্ধ

হয়েছে, সবগুলোই ছিল আত্মরক্ষামূলক; কক্ষণই আক্রমণাত্মক নয়!” এই কথাগুলো আজ মুসলিমদের মধ্যকার সেলিব্রিটি দাঈ ও স্কলারদের মুখ থেকেই বেরিয়ে আসছে। এমনসব স্কলার, যাদের নাম শুনলেও আপনি হয়তো থ মেরে থাকবেন। জাকির নায়েকের মতো একজন ধীমান ব্যক্তিও শেষতক আটকা পড়েছেন এই ফাঁদে। প্রাচীনধারায় ইসলাম চর্চাকারিদের মধ্য থেকেও বেরিয়ে এসেছে ওয়াহিদুদ্দিন খান আর ফরিদুদ্দিন মাসুদের মতো ব্যক্তিরা।

কট্টর যাহিরি ড. আসাদুল্লাহ গালিব থেকে শুরু করে মুতাসাহিল হানাফি বলে খ্যাত আবদুল্লাহ জাহাঙ্গির পর্যন্ত পা বাড়িয়েছেন এ পথে। মুফতি মেঙ্ক, বিলাল ফিলিপস, ইয়াসির কাদি, নুমান আলি খান আর হামযা ইউসুফরা পুরো পৃথিবীটাই কুল আর পীস দিয়ে ভরে দিয়েছেন।

কুফ্ফারদের প্রতি সহনশীল, উদার, সহিষ্ণু, অহিংস একটা উম্মাহ গড়ে তুলেছেন। এমন এক ইসলাম তারা শিখিয়েছেন, যার নমুনা ইসলামের পুরো ইতিহাসজুড়ে পাওয়া যায় না। এমনসব উসুল প্রণয়ন করেছেন, যার অস্তিত্ব সম্পর্কেও আমাদের উসুলিয়্যিন ইমামগণ অবহিত ছিলেন না। আল-ইয়াযু বিল্লাহ। . এই শতাব্দির অন্যতম একটি ফিতনাহ হলো তথাকথিত পীসফুল এই ‘মডারেট ইসলাম’। যা যিনদিক আকবরের দীন-ই-ইলাহির চেয়েও ভয়ঙ্কর। কারণ দীন-ই-ইলাহির বিকৃতি সবাই বুঝতে পারলেও এই বিকৃত মডারেট ইসলামের বিকৃতি সবাই ধরতে পারে না। আর এই বিকৃত ইসলামকে যখন কুফ্ফারগোষ্ঠি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রমোট করে, তখন তো এর ঝলমলে পর্দার পেছনের রহস্য জানার সামর্থ্য অনেক শক্তিমান পুরুষেরও থাকে না। . -উস্তাজ Munirul Islam Ibn Jakir -AbdurRahman Muntasir,
আমি রহমতের নবি... আমি যুদ্ধের নবি। [যাদুল মায়াদ, ১/৮৮] সাহাবা আজমাইনও এই বুঝই ধারণ করেছিলেন। জাবির ইবনু আবদিল্লাহ রা. একবার এক হাতে কুরআন অপর হাতে তরবারি নিয়ে ঘোষণা করেছিলেন- “রাসুলুল্লাহ ﷺ আমাদের আদেশ করেছেন, এটা (কুরআন) থেকে যারা মুখ ফিরিয়ে নেবে তাদেরকে এটা (তরবারি) দিয়ে আঘাত করার জন্য।” [তারিখু ইবনি আসাকির, ৫২/২৭৯]


----- -AbdurRahman Muntasir,
ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহি.) বলেন, “আল্লাহ তাঁর রাসুলকে কিয়ামতের পূর্বে প্রেরণ করেছেন হিদায়াতের কিতাব ও বিজয়ী তরবারি সহকারে, যেন একমাত্র আল্লাহরই ইবাদাত করা হয় শরিকবিহীন অবস্থায়, আর তাঁর রিযিক নির্ধারিত হয়েছিল তরবারি ও বর্শার ছায়াতলে। আল্লাহ তায়ালা এই দীনকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একদিকে দলিল-প্রমাণ, আর অন্যদিকে তরবারি ও বর্শা দিয়ে। এই দু'টো বিষয় এমন ঔতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে, যার একটি থেকে অপরটি আলাদা করা যায় না।” [আল-ফারুসিয়্যাহ, পৃ. ১৮] -- ইসলামে স্ত্রীর সাথে সদ্ব্যবহার একটু সময় নিয়ে পড়লে ফায়দা পাবেন ইনশাআল্লাহ ______ আজকের সমাজে সব চেয়ে নির্যাতিত জন গুষ্টির নাম নারী । আমাদের দেশে চার ধরনের মানুষ পরিচিত এক দল যারা নারীদের অবহেলার চোখে দেখে তাদের দৃষ্টিতে নারী কেবল ভোগের বস্তু মাত্র এরা নষ্ট মেজাজের লোক আর এক দল যারা নারীদের কে সম অধিকারের নামে তাদের কে নগ্ন করে রাস্তায় নিয়ে যায় এরা সেই লোক যারা নারীদের পুরুষ আর ইসলাম বিদ্বেষী করে তোলছে তৃতীয় দল যারা নারীদের দেহ কে প্রিথীবীর নষ্ট মস্তিষ্কের মানুষের সামনে তুলে ধরে নিজেদের স্বার্থ হাতিয়ে নিচ্ছে । বিশ্ব সুন্দরী ,লাক্স সুপার স্টার , চলচিত্র অভিনেত্রী নামের লেভেল লাগিয়ে মুসলিম নারীদের ইজ্জত কে সল্প মোল্যে নিলাম করছে আর শেষ দল যারা নারীদের সম্মান ও ভালোবাসা ও সঠিক ইজ্জত দিয়ে নারীদের তাদের প্রাপ্য অধিকার ফিরিয়ে দিচ্ছে ইসলাম সেই ধর্ম যেখানে কার কি সম্মান প্রাপ‍্য তাই দিচ্ছে আল্লাহ তায়ালা বলেন وَٱخۡفِضۡ جَنَاحَكَ لِمَنِ ٱتَّبَعَكَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ٢١٥ ﴾ [الشعراء: ٢١٥] ঈমান ওয়ালাদের জন্য তুমি তোমার বাহুকে উন্মুক্ত রাখ।” (হিজ্‌র ৮৮আয়াত) অর্থাৎ যার অবস্থান যেখানে তাকে সেখানেই তার প্রাপ্য সম্মান প্রদর্শন কর এখন দেখি রাসুল (সা ) কি বলেন আবূ মূসা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘এক মু’মিন অপর মু’মিনের জন্য অট্টালিকার ন্যায়, যার এক অংশ অন্য অংশকে মজবূত করে রাখে।’’ তারপর তিনি (বুঝাবার জন্য) তাঁর এক হাতের আঙ্গুলগুলি অপর হাতের আঙ্গুলের ফাঁকে ঢুকালেন ( সহিহুল বুখারী ) অন্যত্র বলেন জারীর ইবনু আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি দয়া করবে না, আল্লাহও তার প্রতি দয়া করবেন না।’’ (বুখারী ও মুসলিম) তাই নারী পাবে তার মায়ের সম্মান তারপর পাবে বোনের সম্মান তার পর পাবে স্ত্রীর সম্মান তারপর পাবে কন্যার সম্মান এমন‌ই ভাবে যখন সে যে অবস্থায় থাকবে তাকে সম্মান কর অথচ আজকের সমাজের দিকে তাকালে দেখি ভিন্ন চিত্র নারী ঘরে নির্যাতিত শিক্ষাঙ্গনে নির্যাতিত নারী মিডিয়ার মাধ্যমে নির্যাতিত এমন কয়টা ঘর পাওয়া যাবে যেখানে নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে না এমন কয়জন শাশুড়ি পাওয়া যাবে যে পুত্রবধূকে আপন কন্যার মত আদর করে প্রতিদিন দিন এক‌ই নিউজ স্বামী পরিবারের সদস্যদের দ্বারা গৃহবধূ নির্যাতিত । তার পর হত্যা । মানুষ গুলো কি পশু হয়ে গেল নাকি সন্তান মায়ের প্রতি ভালোবাসার থাকবেই কিন্তু যে মেয়েটি তার পরিবার কে ছেড়ে আপনার হাত ধরে আপনার কাছ থেকে একটু ভালোবাসা পাওয়ার জন্য আপনি অপরিচিত মানুষটির হাত ধরে চলে আসল আপনার কি তার প্রতি কোন দায়িত্ব নেই । আল্লাহ তায়ালা বলেন وَعَاشِرُوهُنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ ﴾ [النساء: ١٩] অর্থাৎ “তোমরা তাদের সাথে সৎভাবে জীবন যাপন কর।” (সূরা নিসা ১৯ আয়াত) هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُن তারা তোমাদের জন্য পোশাক আর তোমরা তাদের জন্য পোশাক। (বাক্কারা ১৮৭ আয়াত ) অর্থাৎ নারীদের তোমাদের জন্য আর তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছি যেন তোমরা একে অপরের সাথে আনন্দ করতে পার । তোমাদের সুখ গুলো মিসে ভাগাভাগি করে নিতে পার তাই নারীদের তোমাদের সঙ্গীনী করে তোমাদের চক্ষু শিতল কারী করেছি ‌। তোমরা আনন্দ কর আর বংশ বিস্তার কর । হে ভাই নারী জান্নাতী নেয়ামতের মধ্যে একটি যা আল্লাহ তায়ালা আমাদের জন্য সেখানে রেখেছেন । যাদের সম্পর্কে বলেন إِنَّآ أَنشَأْنَٰهُنَّ إِنشَآءً নিঃসন্দেহ আমি ওদের সৃষ্টি করেছি বিশেষ সৃষ্টিতে;(ওয়াকিয়াহ আয়াত: ৩৫) فَجَعَلْنَٰهُنَّ أَبْكَارًا আর তাদের বানিয়েছি চিরকুমারী (ওয়াকিয়াহ আয়াত: ৩৬ ) عُرُبًا أَتْرَابًا সোহাগিনী, সমবয়স্কা, --(ওয়াকিয়াহ আয়াত: ৩৭) আল্লাহ তায়ালা আমাদের সেই নেয়ামতের নমুনা হিসেবে আমাদের স্ত্রী দের আমাদের জন্য হালাল করে দিয়েছেন আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমরা স্ত্রীদের জন্য মঙ্গলকামী হও। কারণ নারীকে পাঁজরের (বাঁকা) হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর পাঁজরের হাড়ের সবচেয়ে বেশী বাঁকা হল তার উপরের অংশ। যদি তুমি এটাকে সোজা করতে চাও, তাহলে ভেঙ্গে ফেলবে। আর যদি তাকে ছেড়ে দাও তাহলে তো বাঁকাই থাকবে। তাই তোমরা নারীদের জন্য মঙ্গলকামী হও।’’ (বুখারী ও মুসলিম) ইসলাম নারীদের সাথে ইনসাফের আখলাক পেশ করতে বলেছে তাই মনে রাখতে হবে আমার মা যেমন নারী আমার স্ত্রী তেমন নারী তাই যার যার অবস্থান থেকে তাদের হক আদায় করতে হবে । আমাদের সমাজে একটা কথা প্রচলন আছে মা বড় না ব‌উ বড় এই কথার কোন যুক্তি নেই কারণ মায়ের অবস্থান ভিন্ন স্ত্রীর অবস্থান ভিন্ন তার পর স্ত্রী গেলে স্ত্রী পাওয়া যাবে মা গেলে মা পাওয়া যাবেনা এই কথা গুলো আপনাকে ধোঁকা দিচ্ছে এই কথা গুলো আপনার স্ত্রী কে আপনার দৃষ্টিতে ছোট করে তোলার জন্য বলা হচ্ছে । মনে রাখবেন ভাই আল্লাহ তায়ালা যেমন মায়ের সম্মান রক্ষার ব্যপারে হুকুম করেছেন ঠিক তেমনি আপনার স্ত্রীর হক আদায়ের ব্যাপারে ও হুকুম করেছেন এখন বিবেকবান মানুষ চিন্তা করুন আপনার জন্য কি করনীয় ? আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘কোন ঈমানদার পুরুষ যেন কোন ঈমানদার নারী (স্ত্রীকে) ঘৃণা না করে। যদি সে তার একটি আচরণে অসন্তুষ্ট হয়, তবে অন্য আচরণে সন্তুষ্ট হবে।’’ (মুসলিম) অন্যত্র বলেন আমর ইবনু আহ্ওয়াস জুশামী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বিদায় হজ্জে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন, তিনি সর্বপ্রথমে আল্লাহর প্রশংসা ও স্তুতি বর্ণনা করলেন এবং উপদেশ দান ও নসীহত করলেন। অতঃপর তিনি বললেন, ‘‘শোনো! তোমরা স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহার কর। কেননা, তারা তোমাদের নিকট কয়েদী। তোমরা তাদের নিকটে এ (শয্যা-সঙ্গিনী হওয়া, নিজের পবিত্রতা রক্ষা করা এবং তোমাদের মালের রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি) ছাড়া অন্য কোনও জিনিসের অধিকার রাখ না। হ্যাঁ, সে যদি কোন প্রকাশ্য অশ্লীলতার কাজ করে (তাহলে তোমরা তাদেরকে শাস্তি দেওয়ার অধিকার রাখ)। সুতরাং তারা যদি এমন কাজ করে, তবে তাদেরকে বিছানায় আলাদা ছেড়ে দাও এবং তাদেরকে মার। কিন্তু সে মার যেন যন্ত্রণাদায়ক না হয়। অতঃপর তারা যদি তোমাদের অনুগত হয়ে যায়, তবে তাদের জন্য অন্য কোনো পথ অনুসন্ধান করো না। মনে রেখ, তোমাদের স্ত্রীদের উপর তোমাদের অধিকার রয়েছে, অনুরূপ তোমাদের উপর তোমাদের স্ত্রীদের অধিকার রয়েছে। তোমাদের অধিকার হল, তারা যেন তোমাদের বিছানায় ঐ সব লোককে আসতে না দেয়, যাদেরকে তোমরা অপছন্দ কর এবং তারা যেন ঐ সব লোককে তোমাদের বাড়ীতে প্রবেশ করার অনুমতি না দেয়, যাদেরকে তোমরা অপছন্দ কর। আর শোনো! তোমাদের উপর তাদের অধিকার এই যে, তাদেরকে ভালোরূপে খেতে-পরতে দেবে।’’ (তিরমিযী,) وَمَن يُعَظِّمۡ حُرُمَٰتِ ٱللَّهِ فَهُوَ خَيۡرٞ لَّهُۥ عِندَ رَبِّهِۦۗ ﴾ [الحج: ٣٠] অর্থাৎ “কেউ আল্লাহর (দ্বীনের) প্রতীকসমূহের সম্মান করলে তার প্রতিপালকের নিকট তার জন্য এটাই উত্তম।” (সূরা হাজ্জ্ব ৩০ আয়াত) দোস্ত !!! বিবেকবান ব্যক্তির পরিচয় তার দ্বারা কোন সৃষ্টির কষ্ট হয়না ------------- মাঝে মাঝে কিছু সময় আসে যখন আমাদের কিছুই ভালো লাগে না। হতাশ হতাশ লাগে, কিছুতেই মন বসে না, মনে হয় যেন বুকের উপর পাহাড় সমান কিছু এসে ভর করেছে-নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এই সময়গুলোতে সাধারণত আমরা “ফ্রেশ” হওয়ার জন্য অনেককিছুই করি। গান শুনি, মুভি দেখি, বদঅভ্যাস থাকলে অনেকেই সিগারেট ফুঁকে, গাঁজা টানে, দু'এক পেগ গিলেও ফেলে। কিন্তু সত্যিকারের বাস্তবতা হলো এর কোনকিছুই আমাদের অন্তরকে শান্ত করতে পারে না, হয়তো কিছু সময়ের জন্য ‘ব্যস্ত’ রাখতে পারে মাত্র। বরং এরপর আরো ভয়ংকরভাবে বিষাদগ্রস্থতা আর অবসাদ এসে গ্রাস করে নেয়.. এরকম সমস্যা নিয়ে অনেক জাহিল বন্ধুবান্ধব কাউন্সেলিং চাইতে আসে। অনেকে আবার মজা করে বলে তাদের মাথায় ফুঁ দিয়ে দিতে। তাদেরকে যখন বলা হয়, আচ্ছা আমাদের ক্ষিদে পেলে আমরা কী করি? খাই!এতে আমাদের পেট শান্ত হয়। চোখের শান্তির জন্য আমরা ভালো কিছু দেখি। কানের জন্য আনন্দদায়ক কিছু শুনি। তেমনি শরীরের প্রতিটা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কিছু স্পেসিফিক কাজ আছে, সেই অঙ্গগুলো দিয়ে যখন তার স্পেসিফিক কাজটা হয় তখন সে ভালো থাকে। কিন্তু আমাদের যখন পেটে খুব ক্ষিদে পায় তখন আমরা ভালো কিছু দেখি না কেন? যখন ভালো কিছু শুনতে ইচ্ছে করে তখন পেট ভরে খাই না কেন? কারণ আমরা জানি এতে কোন কাজ হবে না। পেটের খোরাক কান পূরণ করতে পারে না, চোখের খোরাক পূরণ করতে পারে না পেট! ঠিক তেমনি আমাদের শরীরে এক টুকরা জায়গা আছে যেটা আল্লাহর স্মরণ ব্যতীত কখনো শান্ত হয় না। কারণ সে সৃষ্টই হয়েছে আল্লাহর স্মরণের জন্য। ঠিক যেভাবে চোখ সৃষ্ট হয়েছে দেখার জন্য, কান শোনার জন্য। আর সেই হৃদয়ের জায়গাটুকু যখন তার কাজ ঠিকমত করে না তখন পুরো মানবশরীরই বিদ্রোহ করে বসে। কোন কিছুই আর ঠিক মত যায় না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “...সাবধান! আমাদের শরীরে এমন একটি মাংস পিণ্ড রয়েছে যা সুস্থ (পরিশুদ্ধ) থাকলে সারা শরীর সুস্থ থাকে, কিন্তু যদি তা কলুষিত হয়ে যায় সারা শরীর কলুষিত হয় এবং সেটি হচ্ছে হৃদয়।” [বুখারী] আর আল্লাহ তায়ালা বলেন, “আমি মানুষ ও জিন জাতিকে সৃষ্টি করেছি শুধু এই কারণেই যে, তারা আমার ইবাদত করবে”। [সূরা আয যারিয়াতঃ ৫৬] আর যখন শরীরের সেই মাংশপিণ্ড তার খোরাক পায় না তখন কী হয়? তখন আল্লাহর জমীন আমাদের জন্য সংকীর্ণ হয়ে যায়। জীবন সংকীর্ণ হয়ে যায়। আল্লাহ বলেন, “… যে আমার বাণী থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে তার জন্য রয়েছে সংকীর্ণ জীবন, আর বিচার দিবসে আমরা তাকে উত্থিত করবো অন্ধ করে।” [সূরা তা-হাঃ আয়াত ১২৪] এক আলেম বলেছিলেন, একবার এক ব্যক্তি এসে উনাকে বলল আমাকে যাদু করা হয়েছে, আপনি আমাকে ফুঁ দিয়ে দিন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কীভাবে বুঝলে তোমাকে যাদু করা হয়েছে? সে বলল, আমার কিছুই ভালো লাগে না, কোন কাজেই মন বসে না, মনে হয় যেন বুকের উপর ভারী কিছু এসে ভর করেছে, নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। শাইখ জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহর সাথে তোমার সম্পর্ক কেমন? সে বলল, খুব খারাপ। শাইখ তাকে উপদেশ দিলেন, তুমি আগে আল্লাহর সাথে সম্পর্কটা ভালো করো, নামাজ পড়ো আর যদি কোন গোপন গুনাহে লিপ্ত থাকো তা ছেড়ে দাও! এবং এর কয়দিন পর সেই লোকের সমস্যা সত্যি সত্যি কেটে গেল। সুতরাং দিনশেষে তাই আমাদের নিজেকে প্রশ্ন করা উচিত আসলেই আল্লাহর সাথে আমাদের সম্পর্ক কেমন? সাহাবীদের সাথে আমাদের মূল তফাৎ এই জায়গাতেই, আমরা আমাদের হৃদয়ের জমীনকে আল্লাহর স্মরণ দিয়ে প্রস্তুত করিনি। আমাদের ঐ জায়গাটা সবসময়ই অপূর্ণ রয়ে যায়, সে কখনো শান্ত হয় না, সে কখনো প্রশান্তির খোঁজ পায় না। অথচ আমাদের আজ সুখ শান্তি উপভোগের যত দুনিয়াবি উপকরণ আছে তার কিছুই সাহাবীদের ছিল না। তা সত্ত্বেও তারা সুখে থাকতো। তাদের কখনো হতাশ লাগতো না, তাদের হৃদয় সংকীর্ণ হয়ে নিশ্বাস নিতে কষ্ট হতো না। জান্নাতের একটা খেজুর গাছের বিনিময়ে পুরো সম্পত্তি দিয়ে দিয়ে আবু দারদা আর তার স্ত্রী খুব গরীব হয়ে গিয়েছিলেন বটে, কিন্তু এরপরও তারা সবসময় আনন্দিত থাকতো, হৃদয়ে প্রশান্তি থাকতো। চারদিন উপোষ থেকে অবশেষে একটা পচা খেজুর কুঁড়িয়ে খাওয়া আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অন্তরের প্রশান্তি ছিল তার রবের ইবাদত। সুতরাং আমরা আমাদের শরীরের বাহ্যিক অবয়ব সুন্দর রাখতে, ভালো রাখতে যে পরিমাণ মেহনত করি সেভাবে আমাদের হৃদয়টাকেও যেন একটু পরিচর্চা করি। তাকেও যেন একটু সময় দিই.. (Collected)
Next Post Previous Post