দুনিয়া আর মৃত্যু পরবর্তী জীবনের মাঝের অদৃশ্য দেয়ালকে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন ‘বারযাখ’
দুনিয়া আর মৃত্যু পরবর্তী জীবনের মাঝের অদৃশ্য দেয়াল ‘বারযাখ’
ড: রেমন্ড এ মোডি । আমেরিকান এই ভদ্রলোক দর্শনের উপর পিএইচডি করেন । পরে মনস্তত্ত্ব আর মেডিসিনের উপর বিস্তর পড়াশুনা করেন ।
এক রোগীকে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করলেন । তখন সে মৃত লোক অনুভব করলো দীর্ঘ আর অন্ধকার একটা সুড়ঙ্গ খুব দ্রুত পার হচ্ছে সে । তারপর মনে হলো সে যেন তার দেহ থেকে বাইরে চলে এসেছে । দূরে দাড়িয়ে সে দেখতে পাচ্ছে তার মৃত দেহ পড়ে আছে খাটের উপর । ডাক্তার ঝুকে তার বুক ম্যাসেজ করছে আর কৃত্তিম উপায়ে শ্বাস চালু করার চেষ্টা করছে । এ অবস্হায় তার বোধ হলো তার আত্না নতুন একটা শরীর পেয়েছে আর দুনিয়ার শরীরটা পড়ে আছে একটু দূরে তার সামনেই । এ অবস্হায় সে পরিচিত বন্ধু বান্ধব আত্নীয় স্বজন অনেককে দেখতে পেল যারা তার আগেই দুনিয়া ছেড়ে চলে এসেছে । তাদের সাথে তার কথাও হলো ।
এরপর সে একটা নূরের সত্ত্বা দেখতে পেল যে তাকে বলছে ‘তোমার বিগত জীবনের হিসাব নাও।’ এবং সে তাকে দেখাতে লাগল তার জীবনের ঘটে যাওয়া সব কিছু । আশ্চর্য্য একটা সেকেন্ডও রেকর্ডের বাইরে ছিল না ।
এক পর্যায়ে সে একটা বাঁধা দেখতে পেল । এই বাঁধাটা যেন দুনিয়ার জীবন এবং মৃত্যুর পরের জীবনের মাঝখানে অদৃশ্য একটা দেয়াল । ঐ দেয়ালের কাছাকাছি পৌঁছার পর সে জানত পারল তাকে আবার দুনিয়াতে ফিরে যেতে হবে । এখনো মৃত্যুর ঘোষণা আসেনি ।
এরপর সে আবার আগের দেহে ফিরে আসে, একটু আগেও যে দেহটা সে দেখেছে খাটের উপর মৃত পরে আছে । সে ছিল অমুসলিম । সুস্হ হওয়ার পর এ ঘটনা যখন সে বলছিল তখন তাকে নিয়ে বিদ্রুপ হচ্ছিল ।
ক্লিনিক্যালি ডেড বিভিন্ন ধর্মের বিভিন্ন দেশের দেড়শত মানুষের উপর আট বছর গবেষণা করে এরকম অভিজ্ঞতা উপর একটি বই লিখেন ড: রেমন্ড এ মোডি । বইটির নাম ‘লাইফ আফটার লাইফ’ । ১৯৭৫ সালে প্রকাশিত হওয়ার পর এক বছরেই ত্রিশ লক্ষাধিক কপি বিক্রি হয় ।
ড: মেলভিন মোর্স একজন শিশু বিশেষজ্ঞ । ড: মোডির ‘লাইফ আফটার লাইফ’ বইটা পড়ে তার মনে হলো এটা বয়স্ক মানুষদের কল্পনা প্রসূত বক্তব্য হতে পারে । শিশুরা হয়তো এমন কল্পনার বাইরে থাকবে, তাই শিশুদের উপর গবেষণা করে সে একটা বই লিখে ‘ক্লোজার টু দা লাইট’ । যার বক্তব্য ‘লাইফ আফটার লাইফের’ মতোই ।
পলস্টার জর্জ গ্যালাপ নামে আরেকজন সমগ্র আমেরিকার জরিপ চালিয়ে ঘাবড়ে দেয়া তথ্য দেন ।
আমেরিকার মোট নাগরিকের মধ্যে প্রায় ৫% লোক মৃত্যুর দূয়ারে পৌছে এ দৃশ্য দেখেছে ।
আমেরিকার মোট নাগরিকের মধ্যে প্রায় ৫% লোক মৃত্যুর দূয়ারে পৌছে এ দৃশ্য দেখেছে ।
আরবী ‘বারযাখ’ শব্দের অর্থ অদৃশ্য দেয়াল ।
পাশাপাশি অবস্হিত দুটি অবস্হাকে অদৃশ্য দেয়ালে পুরোপুরি পৃথক করে রাখা । দুনিয়া আর মৃত্যু পরবর্তী জীবনের মাঝের অদৃশ্য দেয়ালকে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন ‘বারযাখ’ ।
পাশাপাশি অবস্হিত দুটি অবস্হাকে অদৃশ্য দেয়ালে পুরোপুরি পৃথক করে রাখা । দুনিয়া আর মৃত্যু পরবর্তী জীবনের মাঝের অদৃশ্য দেয়ালকে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন ‘বারযাখ’ ।
حَتَّى إِذَا جَاء أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ رَبِّ ارْجِعُونِ
যখন তাদের কারও কাছে মৃত্যু আসে, তখন সে বলেঃ হে আমার পালণকর্তা! আমাকে পুনরায় (দুনিয়াতে ) প্রেরণ করুন। [সুরা মু’মিনুন:৯৯]
যখন তাদের কারও কাছে মৃত্যু আসে, তখন সে বলেঃ হে আমার পালণকর্তা! আমাকে পুনরায় (দুনিয়াতে ) প্রেরণ করুন। [সুরা মু’মিনুন:৯৯]
لَعَلِّي أَعْمَلُ صَالِحًا فِيمَا تَرَكْتُ كَلَّا إِنَّهَا كَلِمَةٌ هُوَ قَائِلُهَا وَمِن وَرَائِهِم بَرْزَخٌ إِلَى يَوْمِ يُبْعَثُونَ
যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি, যা আমি করিনি। কখনই নয়, এ তো তার একটি কথার কথা মাত্র। তাদের সামনে (বারযাখ) পর্দা আছে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত। [সুরা মু’মিনুন:১০০]
যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি, যা আমি করিনি। কখনই নয়, এ তো তার একটি কথার কথা মাত্র। তাদের সামনে (বারযাখ) পর্দা আছে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত। [সুরা মু’মিনুন:১০০]
আর এই ‘বারযাখ’ বা অদৃশ্য দেয়াল কেমন হতে পারে, দুনিয়াতে আল্লাহ সুবহানুওতায়া’লা তা দেখিয়েও দিয়েছেন ।
অবাক হচ্ছেন !
রোম সাগর আর আটলান্টিক মহাসাগরের পানি দেখতে ভিন্ন আর একটা আরেকটার সাথে মিশে না । এ নিয়ে আল্লাহ পবিত্র কোরআনে সুরা আর রহমানে লিখেছেন । আর এখানেও আল্লাহ সুবহানুওয়াতায়া’লা ‘বারযাখ’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন ।
مَرَجَ الْبَحْرَيْنِ يَلْتَقِيَانِ
তিনি পাশাপাশি দুই সমুদ্র প্রবাহিত করেছেন। [সুরা আর-রহমান: ১৯]
তিনি পাশাপাশি দুই সমুদ্র প্রবাহিত করেছেন। [সুরা আর-রহমান: ১৯]
بَيْنَهُمَا بَرْزَخٌ لَّا يَبْغِيَانِ
উভয়ের মাঝখানে রয়েছে এক (বারযাখ) অন্তরাল, যা তারা অতিক্রম করে না। [সুরা আর-রহমান: ২০]
উভয়ের মাঝখানে রয়েছে এক (বারযাখ) অন্তরাল, যা তারা অতিক্রম করে না। [সুরা আর-রহমান: ২০]
এর চেয়ে স্পষ্ট উদাহরণ আর কি হতে পারে ?
কতটুকুই বা প্রস্তুতি আমাদের ।।
-
Golam Rabbii