ডেমোক্র্যাট ব্লকরা কেন শুধু মুসলমানদের নিওট্রাল হতে বলে ?

ডেমোক্র্যাট ব্লক -  রিপাবলিকান ব্লক



বর্তমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রীক সমাজ্যবাদ দীর্ঘস্থায়ী ও বিস্তৃতি লাভ করার পেছনের কারণ আমি বলেছিলাম- তারা দুইটি বিপরীত মতবাদের ব্লক বিশ্বজুড়ে
ছড়িয়ে দিয়েছে। একটি ডেমোক্র্যাট ব্লক, অন্যটি রিপাবলিকান ব্লক।

রিপাবলিকানদের কাজ হলো – ডাইরেক্ট মুসলিম মারা।
আর ডেমোক্র্যাটদের কাজ হলো- তারা উপর দিয়ে রিপাবলিকানদের বিরোধীতা করবে, কিন্তু একইসাথে তারা মুসলমানদের নরম করবে, প্রতিরোধ গড়তে দিবে না।
তাদের এই দুই হাত পলিসি ধরতে না পারার কারণে দীর্ঘদিন ধরে মুসলমানরা মাইর খেয়ে যাচ্ছে। কিছুই করতে পারছে না।

বাংলাদেশে মিডিয়া ও সুশীল সমাজে ডেমোক্র্যাট ব্লকের আধিপত্য থাকায় বাংলাদেশে ডেমোক্র্যাট মতাদর্শটা খুব ছড়ায়ইছে। বাংলাদেশের অনেক মানুষ জানেই না, তারা নিজেই সেই মতবাদ মাথায় ধারণ করতেছে।

এই ব্লকের খপ্পরে পরার লক্ষণ হইলো- তারা দিল্লীতে রিপাবলিকানদের দ্বারা (মোদি রিপাবলিকান ব্লকের সদস্য) মুসলিম নিধন চলতেছে সেটা তারা মুখে মুখে খুব খারাপ বলবে, ঘৃণা করবে। কিন্তু একই সাথে তারা মুসলমানদের নিওট্রাল করবে, প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ কোনটাই করতে দিবে না। আপনারা যদি ফেসবুকে চোখ রাখেন, এমন বহু মানুষ পাবেন। তারা ২-১ বার দিল্লী দাঙ্গা নিয়ে মোদিকে দুষবে, প্রয়োজনে প্রোপিক চেঞ্জ করে সাধু সাজবে, কিন্তু ১ দিনের মধ্যে মুসলমানদের সহানুভূতি অর্জন করে বলবে - না মুসলমানরা শান্ত হোন, আপনারা উদার জাতি, আসুন আমরা মন্দির রক্ষার জন্য সারা রাত মন্দির পাহাড়া বসাই, হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই। ঘুড়িয়ে পেচিয়ে এগুলো শিক্ষা দেয়া শুরু করবে।

আমরা সবাই জানি, বিচারহীন পরিবেশ অন্যায় আরো বাড়িয়ে তোলে।
আজকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যে ঘটনাগুলো ঘটছে, সবগুলো হলো বিচারহীন পরিবেশের কারণে।

মুসলমানদের বিরুদ্ধে কোন অন্যায় হলেও তার বিচার হয় না, উল্টা বিচারকে যেন প্রবাহিত করা যায়, সেজন্য মুসলমানদের নিষ্ক্রিয় করা হইছে। যেমন – নিউজিল্যান্ডে মসজিদে ঢুকে মুসলমানদের গুলি করলো। সারা বিশ্ব ফুসে উঠলো উপযুক্ত বিচারের জন্য। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডেমোক্র্যাট সদস্য জেসিন্ডা আরডেন মাথায় হিজাব লাগায় কোরআনের আয়াত পড়া শুরু করা দিলো। ব্যস মুসলমানদের মন গলে গেলো। তারা নিউজিল্যান্ডের মসজিদের হত্যাকারীর হত্যার বদলা নেয়ার পরিবর্তের জেসিন্ডা আরডেনের ছবি প্রোপিকে ঝুলায় নিজে মহান সেজে গেলো।

আপনাদের মনে আছে ২০১৮ সালে কলকাতায় রাম নববীর মিছিলে হিন্দুরা অন্যায়ভাবে সিবতুল্লা রশিদি নামক ছেলে হত্যা করেছিলো। পরে বিষয়টি নিয়ে যখন পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছিলো, তখন নিহতের পিতা আসানসোল মসজিদের ইমাম ইমদাদুল রশিদিকে দিয়ে বলানো হলো- সে চায় না তার ছেলের জন্য কোন প্রতিবাদ হোক। ব্যস ইমদাদুল রশিদিকে ডেমোক্রাট ব্লকরা হিরো বানিয়ে দিলো, সবাইকে তার মত হতে বললো। তাকে মানবতার জন্য নোবেল দিতে বললো। অর্থাৎ ইমদাদুল রশিদির মুখ দিয়ে মুসলমানদের ক্ষোভ প্রশমিত করে মুসলমানদের নিওট্রাল করা হতো।

কথা হচ্ছে- ডেমোক্র্যাট ব্লকরা কেন শুধু মুসলমানদের নিওট্রাল হতে বলে ?
তারা কেন রিপাবলিকানদের থামাতে পারে না ?
তারা বার বার শুধু মুসলমানদের চুপ করায়,
কিন্তু হিন্দুদের আক্রমণ তো দিনে দিনে বাড়তেছে। সেটা তো থামাইতে পারতেছে না।

প্রথমে যখন হিন্দুরা ১ জন, ২ জন করে হত্যা করা শুরু করলো, তখনই যদি তাদের উপযুক্ত শিক্ষা দেয়া হইতো, তাহলে কিন্তু আজকে হিন্দুরা পুরো শহরজুড়ে গণহত্যা চালানোর সাহস পেতো না।
এটা শুধু পেরেছে ডেমোক্র্যাট ব্লক দ্বারা প্রতিবার মুসলমানদের নিষ্ক্রিয় করার কারণে।

আচ্ছা, বাংলাদেশের মুসলমানদের প্রতিবাদ যদি আপনাদের কাছে হিন্দু নির্যাতনের লক্ষণ বলে মনে হয়,
তবে এক কাজ করুন, বাংলাদেশে যে হিন্দুরা তাদেরকে বলুন,
তারা যেন ভারতের উগ্রহিন্দুদের দাঙ্গার প্রতিবাদ করে, দাঙ্গা থামাতে হিন্দুদের অনুরোধ করে।

পৃথিবীর কোন স্থানে কোন হামলা হলে তো ঠিকই বাংলাদেশের হুজুরদের মাঠে নামতে হয় জঙ্গীবাদের বিরদ্ধে, মাদ্রাসায় মাদ্রাসায় জঙ্গীবাদ বিরোধী সমাবেশ করতে হয়। মুসলমানদের যদি সেটা করতে হয়, তবে হিন্দুদের কেন করতে হয় না ?

তাদের পূজার অধিকার দেয়ার জন্য তো ঠিকই সবাইকে মাঠে নামতে বলা হয়, তবে তারা কেন আবরার মারা গেলে, মাঠে নামে না ? কেন ভারতে দাঙ্গা হলে তারা ভারতের হিন্দুদের চুপ করতে বলে না। তাদের ধর্মের দোহাই দেয় না। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, পূজা উদযাপন পরিষদ, ইসকন, হিন্দু মহাজোট তারাও ভারতের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার নিন্দা জানাক, হিন্দুদের চুপ করতে বলুক। 

তারা যদি এসব ক্ষেত্রে চুপ থাকে, তখন তো বোঝাই যায়, এসব ক্ষেত্রে তাদের নিরব সমর্থন আছে । এবং বাংলাদেশেও যদি পুলিশি পাহাড়ায় তারা একই সুবিধা পায়, তবে তারাও সেটা কাজে লাগাবে, মুসলমানদের বাড়ি বাড়ি হামলা করে পুরুষকে মারবে, নারীদের ধর্ষন করবে।

নিষ্ক্রিয় করার ডেমোক্র্যাট পলিসি যতদিন মুসলমানরা বুঝতে না পারবে, ততদিন মুসলমানরা কিছুই করতে পারবে না, শুধু মাইর খাবে, আর হা-হুতাশ করবে। দিনে দিনে সেই মাইরের পরিমাণ বাড়তেই থাকবে, কমবে না কিছুতেই। যদি আমার কথা বিশ্বাস না হয়, তবে এই পোস্ট প্রিন্ট দিয়ে লেমিনেটিং করে রেখে দিন, কাজ লাগবে।
- নয়ন ৬ 
Next Post Previous Post