ক্রিকেট ফুটবল খেলাধুলা কে পেশা হিসাবে নেওয়া যাবে কি? এর সুফল ও কুফল কি কি?
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা'আলা বলছেন,
নিশ্চয় সফলকাম হয়েছে মুমিনগণ।
যারা নিজেদের নামাজে ভীত-বিনম্র,
যারা অসার কাজকর্ম হতে বিরত,
যারা জাকাত আদায়ে সক্রিয়।
এভাবে আল্লাহ আরো কয়েকটা গুণাবলীর কথা বলেছেন সফলকাম মুমিনদের। যৌনাঙ্গের হেফাজতকারী, আমানত ও ওয়াদা রক্ষাকারী এবং আবারো, নামাজের সংরক্ষণকারী মুমিন।
আশ্চর্যের বিষয় হল, বর্ণিত কাজগুলোর সবই পরিচিত, এসব করা, এসব থেকে বাঁচাকে সবাইই গুরুত্বপূর্ণ মনে করে এবং গাফিল থাকাকে ক্ষতিকর ভাবে। নামাজ পড়া, জাকাত দেয়া, পাপাচার হতে বাঁচা, ওয়াদা-আমানত রক্ষা এসব তো বড় বড় বিষয়।
কিন্তু একদম শুরুতে সফলকাম মুমিনদের গুণাবলী বর্ণনায় নামাজের পরপরই 'লাগও' বা অহেতুক ক্রিয়াকলাপ হতে বাঁচার কথা বলা হয়েছে যার ব্যাপারে সতর্ক করতে সচরাচর চোখে পড়ে না। অন্তত নামাজ, জাকাতের মত আলোচনার সাথে এর আলোচনা কিছুটা বিরল। আবার জাকাতের মত ইসলামের বুনিয়াদি বিষয়ের আগে একে রাখা হয়েছে! নিশ্চয়ই বড় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
আল্লাহ নিশ্চয়, অবশ্যই-ওয়ালা শব্দের সাথে সফলকাম মুমিন বলছেন। তাদের একটা গুণ হল, তারা অহেতুক ক্রিয়াকলাপ হতে বিরত থাকে। বেহুদা কাজে মত্ত হয় না। বহুত বড় গুণ এটা, নিশ্চিত সফলকাম মুমিনদের গুণ। নামাজ, জাকাত, যিনা-ব্যভিচার হতে বাঁচা, আমানত, ওয়াদার মত বড় বড় জান্নাতি গুণের সাথে আলোচিত গুণওয়ালা কাজ।
ক্রিকেট, ফুটবল দেখা তো একটা বেহুদা কাজই। অসার ক্রিয়াকলাপ। একটা বলকে পিটিয়ে সীমানা পার করলে ৩টা লাঠি ভাঙ্গলে কোটিপতি হওয়া, লাখটাকা বেতন দেয়াতো কোন বুদ্ধিমান মানুষের কর্ম, চিন্তার মধ্যে পড়ে না। এটা কোন মানদন্ড হতে পারে না বিত্তওয়ালা হওয়ার। এটা নিশ্চিতই ধোঁকাবাজরা আমাদের ভুলিয়ে রেখেছে। অহেতুক একটা বিষয়কে বড় করে দেখিয়ে আমাদের ধোঁকা দিচ্ছে।
আপনার উঠানে কেউ সারাদিন ধরে একটা বল পিটালে অথবা একটা গোলক দিয়ে ৩টা লাঠি ক্রমাগত ভাঙ্গতে থাকলে আপনি তাকে ১টা টাকাও দিবেন? কখনোই দিবেন না কারণ এটাতো বেহুদা কাজ আপনিই বোঝেন। এর জন্য কাউকে ৫ টাকা দিবেন না। আর কেউ একই স্থানে মিনিট বিশেক পরিশ্রম করে একটা গর্ত খুঁড়ে একটা গাছ যদি লাগায় তবে তাকে কমপক্ষে ৫০-১০০ টাকা দিবেন। সে তো একটা উত্তম কাজ করেছে। কোনটা বেহুদা আর কোনটা উত্তম আমরা তো বুঝিই।
তাহলে যারা সারাদিন ধরে একটা গোলক পেটায় তাদের খেলা নামক ধোঁকা কেন বসে বসে দেখব? তারা নিজেরাও বেহুদা কাজ করছে, আমাদেরও বেহুদা কাজে রেখেছে। এজন্য উল্টো তাদের লাখ টাকা দেয়া তো চরম ভন্ডামি। তারা জগতের কী উপকারটা করেছে? এটা কি পুরস্কারযোগ্য কোন কাজ হতে পারে?
কেউ শরীরচর্চার জন্য অবসর সময়ে ঘন্টাখানেকের জন্য খেলাধুলা করতে পারে। সেটা ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল যেকোন খেলা হতে পারে। ভোরে নামাজের পর খেলতে পারে বা আছরের পর। ব্যায়াম হবে আবার মনও প্রফুল্ল থাকবে, শারীরিক সক্ষমতা বাড়বে।
কিন্তু এটাকে পেশা বানিয়ে দিনরাত পড়ে থাকা, এটা দেখার জন্য রাত জেগে বসে থাকা নিতান্ত নির্বোধের কাজ।
সূরা মুমিনূন এ আল্লাহ অবশ্যই সফলকাম মুমিনদের গুণ বর্ণনায় ২ নাম্বারেই বলেছেন, যারা অসার ক্রিয়াকলাপ, বেহুদা কাজ হতে বিরত থাকে। এদেরকেই আল্লাহ ফিরদাউসের ওয়ারিস বানাবেন। জান্নাতুল ফিরদাউস। নবি সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাওয়ার সময় যে জান্নাত চাইতে বলেছেন, সবচে বড় পুরস্কার। 'লাগও' বা ক্রিকেট-ফুটবল নামক অহেতুক কাজকর্ম দেখা হতে যারা বিরত থাকে তাদের পুরস্কার।
সফলকাম মুমিনদের পুরস্কার।
- মোল্লা নিজাম
যেসব কারনে বর্তমানের ক্রিকেট ফুটবল খেলা পেশা হিসাবে নেওয়া ও দেখা হারাম
- এসব খেলায় হারাম কাজের উপস্থিতি। যেমন ফুটবলে ছেলেদের হাটুর উপরে কাপড় পরিধান করা। অথচ ছেলেদের জন্য নাভি থেকে হাটু পর্যন্ত ঢেকে রাখতে বলা হয়েছে।নারী কিংবা পুরুষ যারাই এসব প্লেয়ারদের দেখবে তারাই গুনাহগার হবে।
- নারী পুরুষের ফ্রি মিক্সিং। কাউকে বলা লাগবে না যে ক্রিকেট ফুটবল খেলায় কেমন ফ্রি মিক্সিং হয়।
- ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে রাখা। অনেকেই মাঠে প্লেয়ারদের সিজদা দেওয়া বা নামাজ পড়া দেখে আবেগ আপ্লুত হোন অথচ এটা দেখেন না যে ঐ প্লেয়ারদের খেলার কারনে কয়েক কোটি মুসলিম সালাত আদায় করা থেকে বিরত ছিলো। এসব খেলা মানুষ কে ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে রাখে।
- হারাম স্পন্সর। এখন খেলা আর খেলা নাই। এটি এখন বিলিওন ডলার মার্কেট। এখানে মদ জুয়ার ছড়াছড়ি।