Islamic Book Bangla PDF | বই: শয়তানের বেহেশত লেখক: এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ | Bengali Books Review

Islamic Book Bangla PDF বই: শয়তানের বেহেশত লেখক: এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ | Bengali Books Review

Bengali Books Pdf
Photo Credit: Ittadishop


মূল বক্তব্য : 

শাহাদর থেকে দূরের এক পাহাড়ে নাকি খোদার দূতের আগমন ঘটেছে। হাজার হাজার মানুষ ষ্পষ্ট চোখে দেখছে আলোর ভেলায় ভেসে ভেসে শুভ্রপোষাক ধারী একজন মানুষ পাহাড়ের উপর নেমে এসেছে! তিনি শুনাচ্ছেন দৈববাণী! যে তার কথা শুনবে সে এ দুনিয়াতেই পেয়ে যাবে তাঁর কাঙ্ক্ষিত বেহেশত! নামাজ,রোজা,হালাল,হারাম মেনে চলে আর কষ্ট করে অপেক্ষা করতে হবেনা পরকালের বেহেশতের জন্য!!!


বই রিভিউ : 


৪৫০ হিজরীর কাহিনী!!কৈশোরের কলকাকলিকে মুখরিত তিন কিশোর বন্ধুত্বের বন্ধন বহাল রাখতে প্রতিজ্ঞা করেছিলো "তাদের মাঝে যে কেউ উচ্চপর্যায়ে সমাসীন হতে পারলে অপর দুই বন্ধুকে সাহায্য করবে " এই তিন কিশোর ছিলো নিশাপুরের ইমাম মুওয়াফিকের ছাত্র। আর ইমাম মুওয়াফিক তার অধীনে বাছাই করে ছাত্র নিতেন খুবই অল্প! তাঁর ছাত্ররা দেশের বড় বড় পদমর্যাদায় নিয়োগ পেতো!
সে তিন কিশোর ছিলো, খাজা হাসান তুসী!

যিনি পরবর্তিতে সে দেশের উজীরে আজম পদে সমাসীন হন। তিনি ছিলেন পাক্কা মুসলমান একজন বড় ফকীহ ও মুহাদ্দিস! পরবর্তিতে তাকে নেযামুল মুলুক তথা দেশের শ্রেষ্ঠ পরিচালক উপাধিতে ভূষিত করা হয়। তিনিই ইসলামের প্রথম মাদ্রাসা "মাদ্রাসায়ে নেযামিয়া" প্রতিষ্ঠা করেন।সুলতান সালাহউদ্দীন আইয়ুবী ও বিখ্যাত ইতিহাসবিদ বাহাউদ্দীন সাদাত এ মাদ্রাসা থেকেই উচ্চশিক্ষা অর্জন করেন!

আরেক কিশোর ছিলো ওমর খৈয়াম!
হ্যা,সেই বিখ্যাত শায়ের বা কবি! যার সাহিত্য ও দর্শনশাস্ত্র থেকে বড় বড় দার্শনিকরা জ্ঞান লাভ করতেন!যার কল্পনার কালিতে অংকিত গভীর পংক্তিমালায় সাজানো রুবাঈয়াত পাঠকের অন্তরে আজো লাবণ্য ছড়ায়। তিনি শুধু কবিই না,বরং চিকিৎসাবিদ ও ছিলেন!! সেই জগৎ বিখ্যাত ওমর খৈয়াম ও এসেছিলেন নিজামুল মুলুকের কাছে। নেযামুল মুলুক তার অঙ্গিকারনামা স্বরণ করে তার বার্ষিকভাতা নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন যেন খৈয়াম নিশ্চিন্তে মানুষের কল্যানে দর্শন ও চিকিৎসা শাস্ত্রের প্রসার করতে পারেন!

আর সেই আরেক কিশোর ছিলো "হাসান ইবনে সবাহ"
যে ছিলো রূপবন্ত এক বলিষ্ঠ যুবক, যার মুখে ছিলো যাদুময় মিষ্টি ভাষা! সে যখন কথা বলতো তাঁর কথার মাধুর্য্যতায় সে চারিদিকে মোহাবিষ্ট করে রাখতো,চোখে ছিলো তার ধাঁরালো দিপ্তি! চোখে চোখ রেখে সে মানুষকে সম্মোহিত করে ফেলতে পারতো।
সর্বপ্রকার বাহ্যিক, অভ্যন্তরিণ গুনে সে ভরপুর ছিলো!
কিন্তু সে ছিলো এক সাক্ষাত শয়তান!!

তার পিতা,দাদা ছিলো ইসমাইলী নামের এক ভ্রান্ত ফেরকার। তার পিতা তাকে জগৎকুখ্যাত করে তোলার জন্য এক উস্তাদের কাছে পাঠায়,সেখানে সে চূড়ান্ত যাদুবিদ্যার দীক্ষা লাভ করে এক শয়তানী শক্তির জন্ম দেয় নিজের মাঝে। বিশ্বমানব জয়ের নেশা চেপে বসে তার মাথায়!! নিজেকে সে নবী ভাবতে থাকে মনে মনে!!

তারপর সে তার কদাকার ইচ্ছা চরিতার্থ করার জন্য প্রথম লক্ষ্য অর্জনের পথ নিযামুল মুলুকের কাছে যায়। গিয়ে তাকে সেই অঙ্গিকারনামার কথা স্বরণ করিয়ে দেয়!
নিযামুল মুলুক ছিলেন খুবই সাদাদিধে এক সলজ্জ মানুষ। তিনি বন্ধুকে ভালোই জানতেন। তার বিদ্যা,বুদ্ধিতে তিনি ও ধোকা খেয়ে তাকে এক বড় পদমর্যাদা দিয়ে দেন!!
তিনি ঘুণাক্ষরেও টের পেলেন না যে এক শয়তানের জন্য তিনি এক বেহেশতের দরজা খুলে দিচ্ছেন!!!

তারপর কি হয়েছিলো?
কিরুপে খেসারত দিতে হয়েছিলো শত লক্ষ সুন্নী মুসলমানের এক ধূর্ত মুসলমান নামধারী শয়তানের কর্মকান্ডে??
কিরূপে বন্ধুর উপকারের বদলা পেয়েছিলো নিযামুল মুলক??


Islamic Book Bangla PDF | Bengali Books Review

পাঠ প্রতিক্রিয়া:

 উপন্যাস মানেই প্রেমরসে পূর্ন গল্প নয়! কোনো জাতীর স্বর্ণযুগ ধ্বংসের করুণ, বিষাদ কালজয়ী ইতিহাস ও যে উপন্যাসে হতে পারে এই লেখকের বইখানা পড়লে তা সহজেই বোধগম্য হয়! একমাত্র মুসলিমজাতি ই তাদের অতীত নিয়ে গর্ব করতে পারতো। তাঁদের সেই সোনালী অতিত কিভাবে মুসলমান নামধারী কিছু কালনাগ বিষাক্ত দংশনে জর্জরিত করেছিলো তারই বাস্তবরূপ প্রতিফলিত হয়েছে উপন্যাসটিতে!!
ধোঁকা,লোভ,নারীও ক্ষমতার নেশা যে কতটা প্রলয়ঙ্করী হতে পারে তা উপন্যাসটির ভাঁজে ভাঁজে দৃশ্যমান।

এর পরতে পরতে ছিলো রহস্য,রোমাঞ্চকর করুণ পরিনীতি! "
বইটি আপনাকে স্তব্ধ হয়ে ভাবতে বাধ্য করবে নিজেদের ইতিহাস নিয়ে!!পাঠকরা এটাকে একঘেয়েমী ইতিহাস বই ভেবে মোটেও ভুল করবেন না!!

বইটি দুখন্ডে লিখিত! এনায়েতুল্লাহ আলতামাসের কলমে যে কিরুপ নিটোল-নিখুঁত ভাবে মুসলিম ইতিহাসের ঐতিহ্য ফুঁটে উঠে সে আর বলার অপেক্ষা রাখে না!!
বইটি আমি প্রায় ৭,৮ বছর পূর্বে পড়েছিলাম,সেই কিশোরী বয়সেই বইটা আমাকে মুগ্ধ করেছিলো ভীষনভাবে!!

আপনাকে ও বইটি অনেক কিছু জানতে,বুঝতে,শিখ
তে অনুপ্রাণিত করবে আশা করি!
(শুভকামনা)
- কার লেখা কপি করে এখানে পোস্ট দিছি তা ভুলে গেছি (২০২০ সাল) আমি ক্ষমাপ্রার্থী 
Next Post Previous Post