এসো জান্নাতের গল্প শুনি

এসো জান্নাতের গল্প শুনি




বাচ্চাদের বাবা হঠাৎ এক সকালে অফিস থেকে একটা বই পাঠালেন। ছোটখাটো একটা পাণ্ডুলিপি। বাচ্চাদের পড়তে দিয়ে ফীডব্যাক জানাতে বললেন। বড় দু’জন তখন স্কুলে। ছোট ছেলের বয়স পাঁচ হয়নি এখনো, সব অক্ষর লিখতে জানে না। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ্‌ ভাইদের সাথে থেকে বই নাড়াচাড়া করতে করতে কেমন করে যেন পড়তে শিখে গেছে। ওকে প্রথমে পড়তে দিলাম স্ক্রিপ্টটা।

আমাকে সশব্দে পড়ে শোনাচ্ছে সে, “ছোট্ট বন্ধুরা, কেমন আছ তোমরা?....” আমি অভিভূত হয়ে গেলাম। বাচ্চাদের জন্য তো সবসময় এরকম কিছু একটা খুঁজে এসেছি। বাংলায় এধরনের বই একেবারেই দুর্লভ। ও পড়ে যাচ্ছে আর আমি শুনে যাচ্ছি। কোনো কোনো জায়গায় আটকে যাচ্ছিল; পড়তে সাহায্য করেছি, বিষয়বস্তু বিস্তারিত বুঝিয়ে বলেছি।

অল্প অল্প করে পুরোটা শেষ করতে আমার ছোট ছেলের কয়েক দিন লাগলেও আট বছরের বড় ছেলেটা এক বসায় শেষ করে ফেলেছিল। তিন ভাইয়েরই বইটি অত্যন্ত পছন্দ হয়েছে দেখলাম।

আযান প্রকাশনী থেকে প্রি অর্ডারের খবর পেয়ে সাথে সাথে অর্ডার করে ফেললাম। আজ বইটি হাতে পাওয়ার কথা শুনে দুপুরের ঘুম বাদ দিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছিল ছোট ছেলেটা। ডেলিভারির ভাইয়ের কাছ থেকে ওকেই পাঠালাম নিয়ে আসতে। ওর উচ্ছ্বাস দেখে কে! টাকা হাতে লাফাতে লাফাতে নিচে গেল, বইয়ের প্যাকেটটা বুকে জড়িয়ে উঠে এল। এখন গোগ্রাসে গিলছে ওটা। দুপুরের ঘুম কই চলে গেছে…। বড় ভাইরা স্কুল থেকে ফিরলে কাড়াকাড়ি শুরু হবে।

“এসো জান্নাতের গল্প শুনি”
যাদের বাসায় বই পড়ুয়া ছোট বাচ্চা আছে, তারা অবশ্যই সংগ্রহে রাখতে পারেন। যে সব বাচ্চারা পড়তে চায় না, তারাও এই বই পড়ে কল্পনায় জান্নাত থেকে ঘুরে আসতে দ্বিমত করবে না। বাবা অথবা মা পড়ে শোনানোর জন্যেও চমৎকার একটি বই। এতে সহজ সরল সাবলীল ভাষায় শুধু জান্নাতের গল্পই নয়, আনুষঙ্গিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। পাতায় পাতায় ছবি আর জলছাপ শিশুদের আকৃষ্ট করতে বাধ্য।

বইটি নিজে পড়ে আমার মনে হয়েছে - শুধু ছোটদের জন্যই নয়, বড়দের জন্যেও দারুন এক রিমাইন্ডার হিসেবে কাজ করবে এই বই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা লেখক আর সংশ্লিষ্ট সবাইকে উত্তম প্রতিদান দিন। আমীন।

- সিহিন্তা শরীফা
Next Post Previous Post