বিষণ্ণতা দূর করার জন্য একটি ওষুধের কথা

বিষণ্ণতা দূর করার জন্য একটি ওষুধের কথা

বিষণ্ণতা দূর করার জন্য একটি ওষুধের কথা

শায়খ মুহাম্মাদ ইবনে সালিহ ইবনে উসাইমিন রহিমাহুল্লাহ্-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, “একজন মুমিন কি মানসিক অস্থিরতায় ভুগতে পারে?” উনি জবাবে বলেছিলেন,
“অবশ্যই সে বিভিন্ন মানসিক অস্থিরতায় ভুগতে পারে। সে ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে পারে। অতীতের ব্যাপারে তার মনে আফসােস সৃষ্টি হতে পারে।”[১]
হুট করেই আমাদের মন খারাপ হয়ে যায়। খুব বিষগ্ন লাগে। এ বিশাল পৃথিবীতে নিজেকে খুব একা একা লাগে। তবে সে একা সময়েও রাসূল -এর একটি নসীহা আমাদের সাথে আছে। তিনি আমাদের বিষণ্ণতা দূর করার জন্য একটি ওষুধের কথা। বলে গেছেন। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “যদি কেউ বিষন্ন হওয়ার পর বলে,
اللَّهُمَّ إِنِّي عَبْدُكَ ابْنُ عَبْدِكَ ابْنُ أَمَتِكَ ، نَاصِيَتِي بِيَدِكَ ، مَاضٍ فِيَّ حُكْمُكَ ، عَدْلٌ فِيَّ قَضَاؤُكَ ، أَسْأَلُكَ بِكُلِّ اسْمٍ هُوَ لَكَ ، سَمَّيْتَ بِهِ نَفْسَكَ أَوْ عَلَّمْتَهُ أَحَدًا مِنْ خَلْقِكَ ، أَوْ أَنْزَلْتَهُ فِي كِتَابِكَ أَوِ اسْتَأْثَرْتَ بِهِ فِي عِلْمِ الْغَيْبِ عِنْدَكَ ، أَنْ تَجْعَلَ الْقُرْآنَ رَبِيعَ قَلْبِي وَنُورَ صَدْرِي ، وَجِلاءَ حُزْنِي وَذَهَابَ هَمِّي
"‘আল্লাহ গাে, আমি তাে তােমারই দাস। তােমার দাসের পুত্র আমি। আমি পুত্র তােমারই এক দাসীর। আমার কপাল তােমার হাতে। আমার ওপর তােমার নির্দেশ অবশ্যই কার্যকর হবে। আর আমার ব্যাপারে তুমি যে ফয়সালাই দাও না কেন, সেটাই সঠিক। আমি তােমার কাছে চাচ্ছি, তােমার প্রতিটা নামের উসীলায়। যে নাম তুমি নিজের জন্য রেখেছ। কোনাে কিতাবে নাযিল করেছ। কাউকে শিখিয়েছ অথবা নিজের জন্যেই রেখে দিয়েছ। (আল্লাহ গাে, তুমি কুরআনকে বানিয়ে দাও আমার হৃদয়ের প্রশান্তি। আমার বক্ষের জ্যোতি। দুঃখের অপসারণকারী। আমার দুঃশ্চিন্তা দূরকারী।"
তবে আল্লাহ তার বিষণ্ণতা ও দুঃখ দূর করে দেবেন আর (অন্তরটা) আনন্দ দিয়ে পূর্ণ করে দেবেন।” সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন,
“হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের কি এই কথাগুলাে শেখা উচিত না?” রাসূল (সাঃ) বললেন, “হাঁ, অবশ্যই। যে কেউ এই কথাগুলাে শুনবে, তার এটি
শেখা উচিত।”[২]
সংশয়বাদীরা হয়তাে এই হাদিসটি শুনে ভ্রু কুঁচকে বলবে, “তাহলে মানুষ এত এত টাকা খরচ করে চিকিৎসা করায় কেন? এই দুআটি পড়লেই তাে পারে।” তবে আমরা তাে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ওপর ঈমান এনেছি। আমাদের জন্য। তাঁর কথাই যথেষ্ট। আর যারা সত্যিই মন দিয়ে বুঝে বুঝে এই দু’আ পড়েছে, তারা অবশ্যই এই দু’আর উপকারিতার কথা স্বীকার করবেন।
শায়খ মুহাম্মাদ ইবনে সালিহ ইবনে উসাইমিন রহিমাহুল্লাহও বলেছেন,
“মানুষের ঈমান আজ দুর্বল হয়ে গেছে। আজ তারা শরিয়াহতে যে আরােগ্যের কথা বলা হয়েছে, তা গ্রহণ করতে আগ্রহী নয়। শরিয়াহতে যে। আরােগ্যের কথা বলা হয়েছে তার চেয়ে তারা ওষুধের ওপরেই বেশি ভরসা
করে। কিন্তু যখন কারও ঈমান দৃঢ় থাকে, শরিয়াহর এই আরােগ্যগুলাে সম্পূর্ণ কার্যকর হয়। এমনকি ওষুধের চেয়েও এটি ভালাে কাজ করে।”[৩]
বর্তমান পৃথিবীতে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন মানুষ সুইসাইড করে।[৪] এদের মধ্যে অনেকেই সমাজের এলিট ক্লাসের লােক। সব থেকেও কী যেন নেই তাদের। আমি আমার অতি ক্ষুদ্র জীবনে কখনাে কোনাে ঈমানদার মানুষকে সুইসাইড করতে দেখিনি। সুইসাইড করার কথা শুনিওনি। কারণ, তারা আল্লাহর ওপর ভরসা করে। তাই তখন আর কষ্ট এলে সুইসাইড করতে ইচ্ছা করবে না। মনে হয় এই জীবন। আর কদিনের? একদিন ক্লান্তি শেষে বিশ্রাম নেব।।
আমরা আল্লাহর কাছে চাই যেন উনি সে দিনটা আমাদের দুই জীবনের শ্রেষ্ঠ দিন বানিয়ে দেন যেদিন আমরা তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করব। জান্নাতে তাঁর দেখা পাব।
[১] ফতওয়া ইসলামিয়া : ৪/৪৬৫
[২] ইবনে আবি শাইবা, হাদিস নং : ৩২৯।
[৩]ফতওয়া ইসলামিয়া : ৪/৪৬৫
[ "হারিয়ে যাওয়া মুক্ত" থেকে গৃহীত ]
বইটি ডাউনলোড করতে চাইলে নিচের লিংক থেকে ডাউনলোড করুন।
- Abdullah Al Hasan
Next Post Previous Post