বাংলা ইসলামিক বই তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ রিভিউ | Bangla Islamic Books Review By Muhammad Abu Abdullah
বাংলা ইসলামিক বই তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ রিভিউ | Bangla Islamic Books Review By Muhammad Abu Abdullah And Muhammad Nafis Nawar
বাংলা ইসলামিক বই তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ রিভিউ লেখক: মুহাম্মাদ নাফিস নাওয়ার
বইঃ তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ
সংকলকঃ আকিল আহমাদ রাদি
শারঈ সম্পাদনাঃ শাইখ মুনীরুল ইসলাম ইবনু যাকির
মূল্যঃ ১০০ টাকা (মুদ্রিত মূল্য)
প্রকাশনীঃ ফিরাসাহ
ইসলামিক বই তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহবই পরিচিতিঃ
বিসমিল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু 'আলা রাসূলিল্লাহ। ইসলামের সাথে যদি এক সুবিশাল জগতের তুলনা টানা হয় তবে তাওহিদ সন্দেহাতীতভাবেই
ইসলামিক বই তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ বই পর্যালোচনাঃ
তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ বইটি মূলত শারি'আহ দ্বারা শাসনের আবশ্যকতা এবং এ সম্পর্কে সৃষ্ট বিভ্রান্তির অপনোদনে অতীত ও বর্তমান আলিমগণের বক্তব্যের সংকলন। বইয়ের প্রাককথন অংশে বইটি লেখার প্রেক্ষাপট আলোচিত হয়েছে। মহান আল্লাহর প্রতি যথাযোগ্য প্রশংসা ও রাসূলুল্লাহর প্রতি সালাত ও সালাম পেশ করার পর সংকলক কিতাবুল্লাহ থেকে বিভিন্ন আয়াতের মাধ্যমে বক্তব্য উপস্থাপনের দিকে এগিয়ে গিয়েছেন। কালামুল্লাহর বাণী একের পর এক তুলে ধরার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীসও তুলে ধরা হয়েছে। এভাবে সংকলক তার মূল বক্তব্য তুলে ধরার জন্য চমৎকার একটা প্রেক্ষাপট তৈরি করেছেন। উম্মাহর ভয়াবহ বিপর্যয় আর অবনতির দিকে মনোযোগ আকর্ষণ করে তিনি দেখিয়েছেন, কিভাবে মুসলিমদের একটি অংশ "কোনমতে টিকে থাকা" ও "খাপ খাইয়ে নেওয়া"কে তাদের লক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেছে। পরাজিত মানসিকতা থেকে খাপ খাইয়ে চলা আর কুফফারদের সন্তুষ্ট করার যে সিস্টেমের উদ্ভব ঘটেছে, তার থেকেই জন্ম নিয়েছে তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহকে অস্বীকার করার, তাওহিদের এই গুরুত্বপূর্ণ অংশকে অবহেলা করার মত ভয়াবহ বিচ্যুতির। উম্মাহর একটি অংশ এমনসব বিষয়ে আপোষ করছে, যেগুলো অপরিবর্তনীয়। এই আপোষকামী মনোভাবের অসংখ্য উপসর্গের মধ্যে একটি হল আল্লাহর নাযিলকৃত শারী'আহ দিয়ে শাসনের আবশ্যকতার ব্যাপারে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করা। অসংখ্য আয়াত, হাদীস, সালাফদের ক্বওল থাকার পরেও এই বিভ্রান্তির উদ্ভব হওয়াটা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। এটা এমন এক ফিতনা যা উম্মাহকে ভেতর থেকে ফোকলা করে দিচ্ছে। কুফফারের আক্রমণের চেয়েও বেশি ক্ষতির শিকার হচ্ছে উম্মাহ এই ফিতনার কারণে। এরকম একটি দুর্যোগময় ক্ষণে, দাঈদের জন্য যে বিষয়গুলোর প্রতি উম্মাহকে দাওয়াহ করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে, তার মধ্যে তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ অন্যতম। কারণ তাওহিদের সাথে আপোষ করে ইসলামে দাখিল হওয়া অসম্ভব।
বর্তমান সময়ে একজন আদর্শ মুসলিম-মুসলিমাহ’র করণীয় - জোজন আরিফ
বইয়ের সূচি সাজানো হয়েছে বেশ গোছালোভাবে। প্রথমেই তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আল্লাহর কালাম দিয়ে আলোচনাকে এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। তুলে ধরা হয়েছে কিভাবে আজকের এই সময়ে আল্লাহর আইন দিয়ে শাসন করার আবশ্যকতার বিরুদ্ধে কথা বলা হচ্ছে। শাসকের আনুগত্যের দোহাই দিয়ে আল্লাহর আনুগত্যের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে দ্বীনের ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গি আর জ্ঞানতাত্ত্বিক পরিবর্তনের কথা। আল্লাহর আইনের সাথে বালখিল্য করা, অনায়াসে আল্লাহর আইন ভঙ্গ করা, নতুন বিধান প্রবর্তন করার মত ভয়াবহ কুফর সংঘটিত করার পরও ক্রমাগত আহবান করা হচ্ছে শাসকের আনুগত্যের। শারী'আহ পুনঃব্যাখ্যা, শারী'আহ সংস্কার করার মত জঘন্য কাজের প্রচলনও ঘটছে। উদ্ভব হচ্ছে আধুনিক সহনশীল ইসলামের, যা প্রতিটি ক্ষেত্রেই পশ্চিমা ফ্রেমওয়ার্কের প্রতিই শুধুমাত্র একনিষ্ঠ সহনশীলতার প্রদর্শনী করে থাকে। এসব ভয়াবহ বিচ্যুতির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহর উপর ঈমান আনার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
পরের পরিচ্ছদে তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ বলতে কি বোঝানো হচ্ছে সেটা পরিষ্কার করা হয়েছে। এরপর তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহর উপর করা একটি বহুল প্রচলিত প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়েছে। তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ বিদ'আহ কিনা এর জবাবে তাওহিদের শ্রেণিবিন্যাসের ইতিহাস সংক্ষিপ্তাকারে তুলে ধরে দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে এটা কোন বিদ'আহ নয়। বরং যুগের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে তাওহিদের উপেক্ষিত অংশের উপর গুরুত্বারোপ করাই হচ্ছে এর উদ্দেশ্য। এই পরিচ্ছদে তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহর আরো বিস্তারিত ব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়েছে। একই সাথে এর প্রচার প্রসারের গুরুত্ব সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে।
বইয়ের চতুর্থ পরিচ্ছদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহর আইন ব্যতীত অন্য কিছু দ্বারা শাসনকারী কাফির হবার ব্যাপারে অতীত বর্তমানের বেশ কিছু আলিমের ইজমা তুলে ধরা হয়েছে এতে।
পঞ্চম পরিচ্ছদে মুফাসসিরীনের বক্তব্যের আলোকে তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহর আলোচনা করা হয়েছে। প্রসিদ্ধ বেশ কয়েকজন মুফাসসিরীনের বক্তব্য এসেছে যা তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহর ব্যাখ্যাকে আরো সমৃদ্ধ করেছে।
ষষ্ঠ পরিচ্ছদে শারি'আহর তথাকথিত সংস্কার সংক্রান্ত বিভ্রান্তির জবাব দেওয়া হয়েছে। তুলে ধরা হয়েছে ইমাম ইবনু হাযমের বক্তব্য আল্লাহর বিধান পরিত্যাগ সম্পর্কে।
সপ্তম পরিচ্ছদে এসেছে আজকের সময়ের সবচেয়ে বিতর্কিত ইস্যুগুলির একটি নিয়ে আলোচনা। শাসকের আনুগত্য সংক্রান্ত বিভ্রান্তির জবাব ও কিতাবের আলোকে এই বিষয়ে সঠিক অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। কোন শাসকের আনুগত্য করতে হবে, সেই আলোচনাও সাবলীল ভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।
অষ্টম পরিচ্ছদে আরেকটি বিতর্কিত ও বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। শাসকের সুস্পষ্ট কুফরীকে "কুফর দুনা কুফর" এর নাম দিয়ে যারা পাশ কাটাতে চান, তাদের ভুল অথবা দ্বৈত অবস্থানের ব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়েছে এই অংশে। কিছুটা বিস্তারিত আলোচনায় কুফর দুনা কুফরের পরিচয়, আনুগত্যপন্থীরা এটা দিয়ে কি বোঝান, এ সংক্রান্ত ইবনু আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু 'আনহুর বক্তব্যের বর্ণনাসূত্রের পর্যালোচনামূলক আলোচনা স্থান পেয়েছে এই পরিচ্ছদে। কুফর দুনা কুফরের বর্ণনার সানাদকে সঠিক ধরেও যে আইন প্রণয়নের কুফরের ক্ষেত্রে শাসকের আনুগত্যের আহবান ধোপে টেকে না সেই আলোচনা করা হয়েছে আলিমগণের বক্তব্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে।
নবম পরিচ্ছদে তাগুতকে অস্বীকার করার আবশ্যকতা নিয়ে নাতিদীর্ঘ আলোচনা হয়েছে আল্লাহর কালামের ভিত্তিতে।
শেষ দুটো পরিচ্ছদে উপসংহার হিসেবে টানা হয়েছে আরো বেশ কিছু যুক্তিতর্ক এবং আলিমদের বক্তব্য।
পুরো বইটিতে দলিল আদিল্লাহর প্রাচুর্য এবং ব্যবহারের ভারসাম্য লক্ষণীয়। বানান ভুল চোখে পড়েনি খুব একটা, তবে কিছু কিছু শব্দের বানান একেবারেই উপযুক্ত মনে হয়নি। যেমন, তাওহিদ, শারিয়াহ, দীন, বিদয়াহ, সাহিহ। এই বানানগুলো আরবির সাথে যথাযথ সাদৃশ্যপূর্ণ মনে হয়নি। এছাড়াও চতুর্থ পরিচ্ছদে আলিমদের ইজমার আলোচনায় তিনজন সাহাবীর বক্তব্যকে সবার শেষে উপস্থাপন একটু বেশিই বেখাপ্পা লেগেছে। এগুলো ছাড়া বইয়ের আর কোন বিষয়ে অভিযোগ করবার মত বিশেষ কিছু নেই, আলহামদুলিল্লাহ। পৃষ্ঠাসজ্জা, ফন্ট, স্পেইস খুঁটিনাটি বিষয়গুলো বেশ চমৎকার ভাবেই ম্যানেজ করা হয়েছে।
বইটির গুরুত্ব আমভাবে সব মুসলিমের জন্যই সমান। তবে খাস করে এটা দাঈদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি দাওয়াতী উপকরণ, যখন উম্মাহ এ বিষয়ে অজ্ঞতায় নিমজ্জিত এবং চূড়ান্ত বেখবর। তাওহিদুল্লাহর জ্ঞান মুসলিম মাত্রের জন্যই ফরয এবং এই বইটি এই জ্ঞান অর্জনে একটি উত্তম সহায়িকা। আল্লাহ 'আযযা ওয়া জাল এই বইটির সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে উত্তম প্রতিদান দান করুন, নিরাপদে রাখুন এবং সিরাত্বাল মুস্তাক্বীমের উপর সাবিত রাখুন। আমীন।
ওয়ামা তাওফীক্বি ইল্লা বিল্লাহ।
বইয়ের সূচি সাজানো হয়েছে বেশ গোছালোভাবে। প্রথমেই তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আল্লাহর কালাম দিয়ে আলোচনাকে এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। তুলে ধরা হয়েছে কিভাবে আজকের এই সময়ে আল্লাহর আইন দিয়ে শাসন করার আবশ্যকতার বিরুদ্ধে কথা বলা হচ্ছে। শাসকের আনুগত্যের দোহাই দিয়ে আল্লাহর আনুগত্যের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে দ্বীনের ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গি আর জ্ঞানতাত্ত্বিক পরিবর্তনের কথা। আল্লাহর আইনের সাথে বালখিল্য করা, অনায়াসে আল্লাহর আইন ভঙ্গ করা, নতুন বিধান প্রবর্তন করার মত ভয়াবহ কুফর সংঘটিত করার পরও ক্রমাগত আহবান করা হচ্ছে শাসকের আনুগত্যের। শারী'আহ পুনঃব্যাখ্যা, শারী'আহ সংস্কার করার মত জঘন্য কাজের প্রচলনও ঘটছে। উদ্ভব হচ্ছে আধুনিক সহনশীল ইসলামের, যা প্রতিটি ক্ষেত্রেই পশ্চিমা ফ্রেমওয়ার্কের প্রতিই শুধুমাত্র একনিষ্ঠ সহনশীলতার প্রদর্শনী করে থাকে। এসব ভয়াবহ বিচ্যুতির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহর উপর ঈমান আনার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
পরের পরিচ্ছদে তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ বলতে কি বোঝানো হচ্ছে সেটা পরিষ্কার করা হয়েছে। এরপর তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহর উপর করা একটি বহুল প্রচলিত প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়েছে। তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ বিদ'আহ কিনা এর জবাবে তাওহিদের শ্রেণিবিন্যাসের
বইয়ের চতুর্থ পরিচ্ছদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহর আইন ব্যতীত অন্য কিছু দ্বারা শাসনকারী কাফির হবার ব্যাপারে অতীত বর্তমানের বেশ কিছু আলিমের ইজমা তুলে ধরা হয়েছে এতে।
পঞ্চম পরিচ্ছদে মুফাসসিরীনের বক্তব্যের আলোকে তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহর আলোচনা করা হয়েছে। প্রসিদ্ধ বেশ কয়েকজন মুফাসসিরীনের বক্তব্য এসেছে যা তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহর ব্যাখ্যাকে আরো সমৃদ্ধ করেছে।
ষষ্ঠ পরিচ্ছদে শারি'আহর তথাকথিত সংস্কার সংক্রান্ত বিভ্রান্তির জবাব দেওয়া হয়েছে। তুলে ধরা হয়েছে ইমাম ইবনু হাযমের বক্তব্য আল্লাহর বিধান পরিত্যাগ সম্পর্কে।
সপ্তম পরিচ্ছদে এসেছে আজকের সময়ের সবচেয়ে বিতর্কিত ইস্যুগুলির একটি নিয়ে আলোচনা। শাসকের আনুগত্য সংক্রান্ত বিভ্রান্তির জবাব ও কিতাবের আলোকে এই বিষয়ে সঠিক অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। কোন শাসকের আনুগত্য করতে হবে, সেই আলোচনাও সাবলীল ভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।
অষ্টম পরিচ্ছদে আরেকটি বিতর্কিত ও বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। শাসকের সুস্পষ্ট কুফরীকে "কুফর দুনা কুফর" এর নাম দিয়ে যারা পাশ কাটাতে চান, তাদের ভুল অথবা দ্বৈত অবস্থানের ব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়েছে এই অংশে। কিছুটা বিস্তারিত আলোচনায় কুফর দুনা কুফরের পরিচয়, আনুগত্যপন্থীরা এটা দিয়ে কি বোঝান, এ সংক্রান্ত ইবনু আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু 'আনহুর বক্তব্যের বর্ণনাসূত্রের পর্যালোচনামূলক আলোচনা স্থান পেয়েছে এই পরিচ্ছদে। কুফর দুনা কুফরের বর্ণনার সানাদকে সঠিক ধরেও যে আইন প্রণয়নের কুফরের ক্ষেত্রে শাসকের আনুগত্যের আহবান ধোপে টেকে না সেই আলোচনা করা হয়েছে আলিমগণের বক্তব্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে।
নবম পরিচ্ছদে তাগুতকে অস্বীকার করার আবশ্যকতা নিয়ে নাতিদীর্ঘ আলোচনা হয়েছে আল্লাহর কালামের ভিত্তিতে।
শেষ দুটো পরিচ্ছদে উপসংহার হিসেবে টানা হয়েছে আরো বেশ কিছু যুক্তিতর্ক এবং আলিমদের বক্তব্য।
পুরো বইটিতে দলিল আদিল্লাহর প্রাচুর্য এবং ব্যবহারের ভারসাম্য লক্ষণীয়। বানান ভুল চোখে পড়েনি খুব একটা, তবে কিছু কিছু শব্দের বানান একেবারেই উপযুক্ত মনে হয়নি। যেমন, তাওহিদ, শারিয়াহ, দীন, বিদয়াহ, সাহিহ। এই বানানগুলো আরবির সাথে যথাযথ সাদৃশ্যপূর্ণ মনে হয়নি। এছাড়াও চতুর্থ পরিচ্ছদে আলিমদের ইজমার আলোচনায় তিনজন সাহাবীর বক্তব্যকে সবার শেষে উপস্থাপন একটু বেশিই বেখাপ্পা লেগেছে। এগুলো ছাড়া বইয়ের আর কোন বিষয়ে অভিযোগ করবার মত বিশেষ কিছু নেই, আলহামদুলিল্লাহ।
বইটির গুরুত্ব আমভাবে সব মুসলিমের জন্যই সমান। তবে খাস করে এটা দাঈদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি দাওয়াতী উপকরণ, যখন উম্মাহ এ বিষয়ে অজ্ঞতায় নিমজ্জিত এবং চূড়ান্ত বেখবর। তাওহিদুল্লাহর জ্ঞান মুসলিম মাত্রের জন্যই ফরয এবং এই বইটি এই জ্ঞান অর্জনে একটি উত্তম সহায়িকা। আল্লাহ 'আযযা ওয়া জাল এই বইটির সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে উত্তম প্রতিদান দান করুন, নিরাপদে রাখুন এবং সিরাত্বাল মুস্তাক্বীমের উপর সাবিত রাখুন। আমীন।
ওয়ামা তাওফীক্বি ইল্লা বিল্লাহ।
ইসলামিক বই তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ এই রিভিউটি লিখেছেনঃ Muhammad Abu Abdullah
বইঃ তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ
প্রকাশনীঃ Firasah ― ফিরাসাহ
প্রকাশকালঃ ডিসেম্বর, ২০১৭
কলেবরঃ ১০৯ পাতা
মুদ্রিত মূল্য ১০০ টাকা
বিষয়বস্তুঃ আকিদা
সংকলনঃ আকিল আহমাদ রাদি
শারয়ি সম্পাদনাঃ শায়খ Munirul Islam Ibn Jakir
প্রকাশনীঃ Firasah ― ফিরাসাহ
প্রকাশকালঃ ডিসেম্বর, ২০১৭
কলেবরঃ ১০৯ পাতা
মুদ্রিত মূল্য ১০০ টাকা
বিষয়বস্তুঃ আকিদা
সংকলনঃ আকিল আহমাদ রাদি
শারয়ি সম্পাদনাঃ শায়খ Munirul Islam Ibn Jakir
ক। তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ বইটি কেনো পড়বো?
এটি এমনই একটি বই যা আপনার পাঠতালিকা বা দ্বীনি পাঠচক্রে না রাখলে তালিকা অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে। আলোচনা হয়েছে এমনই এক গুরুত্ববহ ব্যাপারে যা তাওহিদের বিশ্বাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ।'
শুধুমাত্র রব হিসেবে আল্লাহকে একক মানলেই খাটি তাওহিদে বিশ্বাসী হওয়া যায়না। রব হিসেবে আল্লাহকে এক মানতো মক্কার কুরাইশরাও, তবুও আল্লাহ তাদেরকে কাফির বলেছেন। তাই তাওহিদ শব্দটি অনেক গভীরভাবে অনুধাবনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
মানবজাতির শুরু থেকেই চলছে তাওহীদ আর কুফরের লড়াই। আর শয়তান সর্বদা এটাই চায় যে, মানুষের তাওহীদে যাতে ভেজাল ঢুকাতে পারে। এভাবেই শয়তান অসংখ্য মানবসন্তানকে বিপথগামী করে বানিয়েছে চির জাহান্নামি। তাই উলামাগণ তাওহীদকে ব্যাখ্যা ও শ্রেণীবিন্যাস করেছেন বিশদভাবে, যাতে উম্মাত তাওহীদের ধারণা সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারে।
তাওহীদের শ্রেণীবিভাগগুলো একটি অপরটির সাথে এত অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত যে একটি বাদ দিলে অপরটি কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। তাই উলামাগণ এগুলোর কোন একটিকে বাদ দিতেন না। অথচ বর্তমান যুগের বাস্তবতা হল, তাওহীদের যেসব বিষয় নিয়ে কথা বললে বিপদ আসতে পারে, অনেক উলামাগণ তাওহীদের সেসব অনুষঙ্গ বাদই দিয়ে দেন।
তাওহীদের রুবুবিয়াহ, উলুহিয়্যাহ আর আসমা উস সিফাত নিয়ে তো অনেক বয়ান আর বই প্রস্তুত হয়, কিন্তু তাওহীদে হাকিমিয়্যাহকে অনেকেই সজ্ঞানে এড়িয়ে যান।
বর্তমানে উম্মাতে মুসলিমাহ ভয়াবহ বিপর্যস্ত সময় পার করছে। এর সবচেয়ে ভয়ানক দিক হচ্ছে পরাজিত মনমানসিকতা আর সব কিছুতেই কম্প্রোমাইজ করার মনোভাব। অবস্থা এমন হয়েছে যে তাওদিদের সেসব বিষয় নিয়েও উম্মাতের একটি অংশ আজ সন্দিহান, যেসব বিষয় নিয়ে আহলুস সুন্নাহর কেউ কখনো সন্দেহ পোষণ করেন নি, যে বিষয়ে আপোষ অসম্ভব।
তওহীদুল হাকিমিয়্যাহ হচ্ছে সেধরনের একটি বিষয়। শাসন ও আনুগত্যের ব্যাপারে আল্লাহকেই একমাত্র বিধানদাতা মানা ও আল্লাহ যা নাযিল করেছেন সেই শরীয়্যাহ দিয়ে শাসনকাজ চালানো।
অথচ আমরা মানবরচিত তন্ত্র-মন্ত্র দিয়ে আল্লাহর আইন পরিবর্তন করে নিচ্ছি, সন্দেহ পোষণ করছি শারীয়াহ দ্বারা শাসনের আবশ্যকতা নিয়েও। ও এ সম্পর্কে সৃষ্ট বিভ্রান্তির অপনোদনে অতীত ও বর্তমান আলেমদের বক্তব্যের সংকলনই মূলত এ বই।
খ। বাংলা ইসলামিক বই তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ বই পরিচিতিঃ
বইটিতে কি এমন আছে যে আমাদের এই বইটি পড়তে হবে? বইটি পড়ে কি শিখতে পারবেন?
১। তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহঃ আল্লাহই আইন প্রণেতা। জমিন যে আল্লাহর, বিধানও তারই। অথচ মানুষ সেই মালিকের আইন বদলিয়ে দেয় মানবরচিত আইন দিয়ে। ইলাহ হিসেবে আল্লাহকে বর্জন করে যেন গ্রহণ করে লিংকন, মার্ক্সদের। আর দাসত্ব করে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র এসবের। সাইয়িদ কুতুব (রহ) বলেন, এটিই জাহিলিয়্যাহ। আকিদা এখানে প্রশ্নবিদ্ধ। ঈমান আক্রান্ত কুফরে।
কেউ যদি ভাবে যে, আল্লাহ শুধু আমাদের বিয়ে, জানাযা, উত্তরাধিকার আর নামাজ রোজা বিষয়ক কিছু নির্দেশনা মাত্র দিয়ে পাঠিয়েছেন, কিন্তু সামাজিক, ব্যাক্তিগত বা রাস্ট্রীয় ব্যাপারে কোন দিকনির্দেশনা দেননি, তবে সে তাওহিদই বুঝেনি। কারণ ইসলাম হচ্ছে সম্পূর্ণ ও সর্বোত্তম জীবনবিধান।
শাসন একমাত্র আল্লাহর আইনেরই করতে হবে - এ বিশ্বাস ছাড়া আকিদাহ শুদ্ধ হবেনা, ইমান থাকবেনা, তা সে ব্যাক্তি যতবড় আমলদারই হোক না কেন। কেউ যদি বিশ্বাস করে আল্লাহর বিধানের বদলে অন্য বিধানে শাসন করা বৈধ তবে সে কুফরি করল।
এব্যাপারটি বুঝতে ইসলামের উপর পিএইচডি করতে হয়না, সহজাত ফিতরাতের মাধ্যমেই মানুষ বিষয়টি বুঝতে পারে। এ বিষয়ে কখনোই আলেমদের মধ্যে ইখতিলাফ হয়নি। সকল নবি রাসূলগণ এই দাওয়াতই দিয়েছেন যে আল্লাহ আমাদের রব, বিধানদাতা, পালনকর্তা। আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। বইয়ের প্রথম ভাগে তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ নিয়ে আয়াতগুলো বর্ণনা করে সহজভাবে ব্যাপারটি বুঝানো হয়েছে।
২। তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ বিদয়াহ কিনাঃ সাহাবীদের তাওহিদের জ্ঞান ছিল সুস্পষ্ট ও বিশুদ্ধ। তখন তাওহিদকে এভাবে শ্রেণীবিভাগ করা হয়নি। পরবর্তীতে উম্মাতের মধ্যে নানা ফিতনাহ আগমন করে, যার ফলে তাওহিদকে এভাবে শ্রেণীবিভাগ করার প্রয়োজন হয় যাতে মানুষ ফিতনাহর মেঘ হটিয়ে বিশুদ্ধ তাওহিদ সহজে বুঝতে পারে।
উদাহারণস্বরুপ, ইবনে তাইমিয়্যাহর সময়ে আল্লাহর তাহরীফকারী ও অস্বীকারকারীদের ফিতনা দেখা যায়, তাইতো তিনি তাওহিদুল আসমা ওয়াস সিফাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেন। মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহাবের সময় কবরপূজা, মাজারপূজার আধিক্য থাকায় তিনি তাওহিদুল উলুহিয়্যাহকে গুরুত্ব দেন। তারা কোন নতুন তাওহিদ আনেননি, বিশুদ্ধ তাওহিদকেই বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেছেন মাত্র। আমাদের সময়েও হাকিমিয়্যাহর ব্যাপারে বিভ্রান্তি ছড়ানোয় এ ব্যাপারে দাওয়াহ দিলেই তা বিদয়াহ হয়না।
কারণ বিচার এবং আইন প্রণয়নের হকদার এক এবং একমাত্র আল্লাহ। এ ব্যাপার কুরআন, সুন্নাহ থেকে প্রমাণিত। তাই উসুল হল, দ্বীনের মধ্যে নতুন জিনিসের উদ্ভাবন না ঘটিয়ে দ্বীনের মধ্যে বিদ্যমান কোন বিষয়কে বিশদভাবে ব্যাখ্যা বা উপস্থাপনের নিমত্তে শ্রেনীবিন্যাস বিদয়াহ হবেনা। এব্যাপারে উল্লেখিত আরও কিছু প্রশ্নের সুন্দর জবাব দেয়া হয়েছে এ অধ্যায়ে।
৩। আলেমদের বক্তব্যঃ এ অধ্যায় বইয়ের প্রাণ। 'শারিয়াহ ছাড়া অন্য কিছু দিয়ে শাসনকারী কাফের' - এ কথা বিচ্ছিন্নভাবে অল্প কিছু লোক যে বলেননি, বরং আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের সকল আলেমগণের যে এব্যাপারে নিরংকুশ ইজমা আছে, তা প্রমাণে এখানে আলেমদের বক্তব্য সংকলন করা হয়েছে, যা সন্দেহবাদীদের সন্দেহের পর্দা উন্মোচন করে দিবে।
এ বক্তব্যগুলো আরো প্রমাণ করবে শারিয়াহ দ্বারা শাসনের আবশ্যকতা। যারা মানবরচিত আইন পছন্দ করে, তা গ্রহণ করে ও এর দাওয়াত দেয় তাদের কুফরির বিষয়ও আলেমদের বক্তব্যের আলোকে আলোচিত হয়েছে। বক্তব্য আরো স্পষ্ট করতে মাঝে মাঝে ব্যাখ্যাও যুক্ত করা হয়েছে আলাদাভাবে।
যেসব আলেমদের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে তারা হলেন- আহমাদ ইবনে হাম্বল, কাযি ইয়ায, ইবনে তাইমিয়্যাহ, ইবনুল কাইয়্যিম, ইবনে কাছির, বাদরউদ্দিন আইনি, মুহাম্মাদ আমিন আশ শানকিতি, বিন বায, ইবনে উসাইমিন, আহমাদ শাকির, আহমাদ মুসা জিবরিল, সুলাইমান বিন নাসিল আল উলওয়ান, সাহাবী ইবনে মাসউদ (রা), ইবনে আব্বাস (রা), জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা) প্রমুখ।
৪। মুফাসসিরিনদের বক্তব্যঃ উপরে উলামা ও সাহাবীদের বক্তব্যের পরে এ অধ্যায়ে যুক্ত করা হয়েছে কুরআনের দশটি আয়াত এবং প্রতিটি আয়াত সম্পর্কিত একাধিক খ্যাতনামা মুফাসসিরিনদের বক্তব্য। ইবনে কাসির, সুফিয়ান সাওরি, হাসান বাসরি, কুরতুবি, ইবনে তাইমিয়্যাহ, ইবনুল কাইয়্যিম, তাবারানি, ইবনে মাসউদ (রা) প্রমুখ মুফাসসিরগণের এত এত বক্তব্য যুক্ত করা হয়েছে যে এর পরে আর তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ সম্বন্ধে চক্ষুষ্মান কোন ব্যাক্তি সন্দেহ পোষণ করতে পারবেনা।
৫। বিভ্রান্তির জবাবঃ তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ নিয়ে নানা ধরনের বিভ্রান্তি আজকাল প্রচলিত। কেউ বলে আজকের যুগে শরিয়াহ সংস্কার করতে হবে। কেউ বলে শরিয়াহ মানা এত জরুরী না। কেউ বলে সকল জনগণ যখন চাইবে তখনই কেবল শরিয়াহ দিয়ে দেশ শাসন হবে। কেউ বলে আগে জামাতে নামাযে যাক সবাই, আকিদা সবার ঠিক হোক, পরে শরিয়াহ এমনিতেই চলে আসবে।
আবার কেউবা বলে শাসকের আনুগত্য ফরয। এ কথাগুলো কাফেররা নয়, বরং নামধারী কিছু আলেমরাও বলছে আজকাল। এ অধ্যায়ে দালিলিকভাবে তাদের ভণ্ড দাবীর মুখোশ উন্মোচন করা হয়েছে। এ অধ্যায়ে যেসব ব্যাপারে সংশয়ের জবাব দেয়া হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ কোন ধরনের শাসকের আনুগত্য করা ফরয ও কাদের আনুগত্য করা যাবেনা, কুফর দুনা কুফর এর সঠিক ব্যাখ্যা।
৬। তাগুতের পরিচয় ও তাগুতকে অস্বীকার করার আবশ্যকতা ও শেষ কথাঃ তাওহিদের রুকন, তাগুতের সংজ্ঞা ও পরিচয়, তাগুতের প্রকারভেদ, যে সব উপায়ে তাগুতের সীমালংঘন প্রকাশ পেতে পারে আর তাগুতকে অস্বীকার করার দলিল- এসব ব্যাপারে সালাফদের বক্তব্য থেকে সংক্ষিপ্ত ও সরলভাবে সুন্দর বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
পরিশেষে, শাইখ আবু হামযা আল মিশরি (ফা.আ) এর কার্যকর একটি বক্তব্য ও সুন্দর একটি উপসংহার দিয়ে সমাপ্তি টানা হয়েছে।
গ। তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ
আকিদার বইগুলো অনেক সময় নিয়ে পড়তে হয়, কাঠখোট্রা লাগে, অনেক কনফিউশন থাকে। কিন্তু এ বইটি এক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম। লেখনী সহজবোধ্য। সাধারণের বোঝার মত করে সহজ ভাষায় লেখা হয়েছে। কোন জিনিস বুঝাতে প্রচুর কোরআন হাদিসের দলিল, সালাফদের বক্তব্য, শরিয়াহর অবস্থান বুঝাতে প্রয়োজনে উসূলে ফিকহ থেকেও উদাহারণ দেয়া হয়েছে, যাতে আলোচ্য বিষয় সহজে বোধগম্য হয়।
প্রাঞ্জল অনুবাদ আর প্রমিত বানানরীতি মুগ্ধ করার মত। আশ্চর্য বিষয় হল, বানানে কোন ভুল খুজে পাইনি। পাতার কোয়ালিটি ভাল ছিল। বাধাই যদিও গতানুগতিক। দাম সাধ্যের মধ্যে।
বিষয়বস্তুর গুরুত্বের কথা চিন্তা করলে এই বইটির জন্য সংকলকদের জন্য অন্তরের গভীর থেকে দোয়া রইল। বইয়ে মেহনতের ছাপ স্পস্ট। শায়খদের বক্তব্যের জন্য প্রচুর কিতাবাদি ঘাটা হয়েছে, বাদ যায়নি ইউটিউব লেকচারও। ফুটনোটগুলোও জ্ঞানবহুল ছিল। তবে ভিডিও লেকচার থেকে নেয়া রেফারেন্সের জায়গায় সরাসরি ইউটিউব লিংক না দিয়ে ভিডিওর শিরোনাম দেয়া উত্তম হত।
বইতে মনে দাগ কাটার মত অনেক বিষয় ছিল। যেমন লেখক শুরুতে লিখেছেন, তাওহিদুল হাকিমিয়াহ হল ফিতরাত দিয়ে বুঝার ব্যাপার। আপনার ন্যাচারাল ডিস্পোজিশনই আপনাকে জানান দিবে, জমিন যার, মুলক যার, বিধানও তারই হবে। আবার তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ নিয়ে ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহর বক্তব্য অথবা কুফর দুনা কুফর নিয়ে শায়খ তারেফীর বক্তব্যই মনের সংশয় মেটাতে যথেস্ট ছিল। তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ এর ঘোষণা সালাফগণ কত দৃঢ়তার সাথে নির্ভয়ে দিতেন তা পড়লে চমৎকৃত হবেন।
বইয়ের বাধাই আরো শক্ত হলে ভালো হতো। প্রচ্ছদ সুন্দর হলেও প্রচ্ছদের কাগজ ভালো ছিলোনা, প্রচ্ছদের কালারও ভালোভাবে ফুটে ওঠেনি। পেজ কোয়ালিটি আরো ভালো হতে পারতো। মুদ্রণপ্রমাদ তেমন ছিলোনা।
★ঘ। বইটি পড়ে উম্মাহ কি শিখতে পারে?
বইয়ের শেষের দিকে আমাদের কার্যকারণ সম্পর্কে খুব সুন্দর দুটি কথা ব্যাক্ত হয়েছে। "আমাদের দায়িত্ব হল তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ এবং উম্মাহর ফরয দায়িত্বগুলো সম্পর্কে উম্মাহকে সচেতন করা। যারা আল্লাহর দুনিয়াতে আল্লাহর দীনকে প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছেন তাদের ব্যাপারে উম্মাহকে সঠিক ধারণা দেয়া ও সংশয়ের জবাব দেয়া, যাতে সত্য স্পষ্ট হয় সবার কাছে।"
তাই আমি রিভিউর শুরুর কথাই বলে শেষ করব। এ বই আপনার হালাকা বা পাঠচক্রে বা তারবিয়তের আসরে না রাখলে ভুল করবেন। যদি তাওহিদের জ্ঞানই অসম্পূর্ণ থাকে, তবে সেই তাওহিদ আর দীনি ইলম কি কাজের?
★ ঙ। রেটিংঃ ৮/১০।