দাজ্জালের ফিতনার রূপরেখা ও সীমারেখা নিয়ে বই “দাজ্জাল” – Rajib Hasan

দাজ্জালের ফিতনার রূপরেখা ও সীমারেখা নিয়ে বই “দাজ্জাল” –  Rajib Hasan


দাজ্জাল। ছোটবেলায় মেজ খালার মুখে সর্বপ্রথম এই নামটি শুনি। তিনি বেশ রসিয়ে কসিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে দাজ্জাল সম্পর্কে বলছিলেন। সে আসবে। ভীতিকর পরিবেশ তৈরী করবে। জনে জনে এসে বলবে আমাকে “আল্লাহ্‌” বলে মেনে নাও। খালার মুখে দাজ্জালের ভীতিকর গল্প শুনে সে রাতে আর ঘুমাতে পারিনি। এপাশ ওপাশ করে চোখেমুখে অজানা ভয় নিয়ে কোনমতে রাত পার করেছিলাম। এরপর কয়েকদিন এর রেশ ছিল। পরবর্তীতে ভুলে গিয়েছিলাম। ভয়ের জিনিস বেশী দিন মনে স্থায়ী হয়না। দুনিয়াবী সুখ আহ্লাদে মানুষ ভুলে যায়। ভোগ বিলাসিতা, আরাম-আনন্দ মানুষকে সত্য থেকে বঞ্চিত রাখে। মানুষ সত্য বিমুখ হয় মেকি সুখের মায়ায়।
  • দাজ্জাল কে 
  • দাজ্জালের বর্তমান অবস্থান 
  • দাজ্জালের আগমনের আলামত
  •  দাজ্জাল বর্তমানে কোথায় আছে
  •  দাজ্জাল কোথায় আছে
  •  দাজ্জাল কবে আসবে 
  • দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার দোয়া
  • দাজ্জালের ছবি

মানুষ যখন দাজ্জাল সম্পর্কে ভুলে যাবে। তার ব্যাপারে বেখেয়াল থাকবে। ঈমামগণ যখন মিম্বরে দাঁড়িয়ে তার ব্যাপারে কোন আলোচনা করবেনা। এমনকি মানুষ কুরআন পাঠ করবে কিন্তু এ কুরআন পাঠ তাদের কণ্ঠাস্থি অতিক্রম করবে না। এভাবে যখনই এক প্রজন্মের আবির্ভাব হবে তখনই তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। এক সময় তাদের বিশাল উপস্থিতিতে দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে।(১)

দাজ্জালের ফিতনার রূপরেখা ও সীমারেখা নিয়ে বই “দাজ্জাল” –  Rajib Hasan
.
প্রিয় পাঠক! সে সময় কি আসেনি? দাজ্জাল সম্পর্কে আমরা কতজন জানি? কতটুকই বা জানি? কতটুকুই বা জ্ঞান রাখি? কতটুকুই মানুষকে নসিহত করি। জানি, করিনা। দাজ্জাল আসবে। হয়ত কোন এক সকালে। অথবা কোন এক বিকালে। হুট করেই আসবে। তখন আমাদের এই ঈমান আর কোন কাজে আসবে না। এখনই ঈমান না আনলে, ঈমানের পরিচর্যা না করলে, এখনই সোচ্চার না হলে দাজ্জাল এসে গেলে আমার ঈমান আমাকে তার ফিতনার কবল থেকে বাঁচাতে পারবে না। আমাকে এখনই সতর্ক হতে হবে। আল্লাহ্‌ এবং আল্লাহর রাসূল (সাঃ) – এর প্রতি ঈমান আনতে হবে। মেকি মায়ার জীবন ত্যাগ করে সত্য বরণ করে নিতে হবে। দাজ্জাল আসবে। সত্যই আসবে। তার মত ভয়াবহ ফিতনা আর কখনই দৃষ্টিগোচর হবে না।
.
প্রত্যেক নবী রাসূল (আলাইহিমুস সালাম) – তার লোকদেরকে দাজ্জালের ফিতনা সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ) দাজ্জালের ফিতনার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। তার ভয়াবহতা থেকে বেঁচে থাকার তাকিদে দু’আ ও জিকির শিখিয়ে দিয়ে গেছেন। তিনি (সাঃ) প্রত্যেক সলাতের শেষে দাজ্জালের ফিতনা থেকে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্‌র কাছে আশ্রয় ভিক্ষা চেয়েছেন। অথচ দাজ্জাল সম্পর্কে আমরা আজ গাফেল হয়ে আছি। ঠিক যেন দাজ্জাল আসার ভিত্তি স্থাপন করে দিচ্ছি।
.
ইয়াহুদীরা দাজ্জালের জন্য অপেক্ষা করছে। তারা দাজ্জালকে আরমিলাস (Armilus) নামে ডাকে।(২) দাজ্জাল সম্পর্কে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি হল, সে ইয়াহুদীদের সম্রাট হবে। সকল ইয়াহুদীকে বাইতুল মুকাদ্দাসে আবাদ (প্রতিষ্ঠিত) করবে। সমগ্র বিশ্বের উপর ইয়াহুদীদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত করবে। পৃথিবীতে ইয়াহুদীদের জন্য শঙ্কা অবশিষ্ট থাকবে না। সকল “সন্ত্রাসবাদী” কে নির্মূল করে ফেলবে এবং সর্বত্র শান্তি, নিরাপত্তা ও সুবিচারের রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে। তাদের ধর্মীয় গ্রন্থ ইজাখিলে আছে,
“হে ইয়াহুদিকন্যা, তুমি আনন্দের সাথে চিৎকার দাও। ওহে জেরুজালেমের কন্যা, তুমি খুশিতে বাগবাগ হয়ে যাও। ঐ দেখ তোমাদের রাজা আসছেন। তিনি ন্যায় পরায়ণ। তিনি গাধার পিঠে আরোহণ করে আসছেন। আমি ইউফ্রিম থেকে গাড়িকে আর জেরুজালেম থেকে ঘোড়াকে আলাদা করে ফেলব। যুদ্ধের পালক উপড়ে ফেলা হবে। তার শাসন সমুদ্র থেকে জমিন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে”।(৩)

  1. দাজ্জালের জন্ম 
  2. দাজ্জাল সম্পর্কে হাদীস 
  3. দাজ্জাল ও তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ
  4.  দাজ্জালের ঘটনা 
  5. দাজ্জাল আগমনের আলামত 
  6. দাজ্জালের পরিচয়
  7.  দাজ্জালের কাহিনী 
  8. দাজ্জালের আগমন সুনিশ্চিত

খ্রিস্টানরাও কোন একজন মুক্তিদাতার অপেক্ষায় অপেক্ষামাণ। তারা দাজ্জালকে “এন্টিক্রাইস্ট” (Antichrist) বলে। কেননা ঈসা (আঃ) – যদি ক্রাইস্ট (Christ) হয়ে থাকে, তার বিরুধ্ববাদী দাজ্জাল হল এন্টিক্রাইস্ট।(৪)

তবে, ইয়াহুদিরা এক্ষেত্রে বেশি বিচলিত। ১৯৪৮ সালে ইসরাইল প্রতিষ্ঠা এবং ১৯৬৭ সালে বাইতুল মুকাদ্দাস দখলের আগে ইহুদিরা দু’আ করত, “হে খোদা, এ বছরটি আমাদেরকে জেরুজালেমে থাকতে দাও। আর এখন তারা প্রার্থনা করছে, হে খোদা, আমাদের মাসিহ যেন শীঘ্র এসে পড়েন।“

মোটকথা, যে সব ভবিষ্যৎবাণী ঈসা ইবনে মারিয়াম সম্পর্কে বর্ণিত আছে, ইয়াহুদীরা সেগুলোকে দাজ্জালের জন্য প্রমাণ করতে চায়। এক্ষেত্রে তারা খ্রিস্টানদেরকেও ধোঁকা দিচ্ছে যে, আমরা প্রতিশ্রুত মাসিহর অপেক্ষায় করছি আর মুসলমানরা হল মাসিহ’র বিরোধী। 

অথচ বাস্তবতা তার বিপরীত। মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয়েই ঈসা ইবনে মরিয়মের অপেক্ষায় অপেক্ষামাণ। পক্ষান্তরে ইয়াহুদীরা যার অপেক্ষা করছে, সে হল দাজ্জাল, ঈসা ইবনে মারিয়াম যাকে হত্যা করবেন। কাজেই বর্তমান পরিস্থিতিতে খ্রিস্টানদের উচিত ছিল মুসলমানদের সঙ্গ দেওয়া – ইয়াহুদীদের নয়। কেননা, ইয়াহুদীরা তাদের পুরনো শত্রু।
.
শুধুমাত্র মুসলিম জাতি ঘুমিয়ে আছে। দাজ্জালের ব্যাপারে তাদের কোন সতর্কতা বা চিন্তাভাবনা নেই। অথচ দাজ্জালের আগ্রাসন ও ফিতনার সীমারেখা মুসলিমদের উপরেই বর্তাবে। 


তার প্রতারণা, ধোঁকাবাজি, ভেল্কিবাজি সব হবে মুসলিমদের ঈমানহারা করার জন্য। দুর্বল ঈমানের মুসলিম বাহিনী সেদিন খেই হারিয়ে দাজ্জালের অনুসারী হয়ে যাবে। ঈমান হারিয়ে মুরতাদ হয়ে যাবে চোখের পলকেই। আজকে যাদের ঘুম ভাংছে না সেদিন তাদের ঘুম ভাংবে, অবশ্যই ভাংবে।
.
এই উম্মতের ঘুম ভাঙাতে। ঘুমন্ত চোখে এক আজলা পানির ছিটা দিতে। অবাধে স্রোতে ভেসে যাওয়ার মুখে কিছুটা বাঁধা সৃষ্টি করতে কলম হাতে তুলে নেওয়ার প্রয়োজন মনে করছি। দাজ্জালের ফিতনার রূপরেখা ও সীমারেখা নিয়ে “দাজ্জাল” – বইটি মলাটবদ্ধ করার ক্ষুদ্র প্রয়াস হাতে নিয়েছি বি-ইযনিল্লাহি তা’আলা। ওয়ামা তৌফিকি ইল্লা বিল্লাহ ‘আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া ইলাইহি উনিব।
.
আমরা অনেকেই দাজ্জাল সম্পর্কে সুস্পষ্ট ইলম রাখি না। দাজ্জাল দেখতে কেমন হবে? কোথা থেকে বের হবে? দাজ্জালের জন্ম হয়েছে কিনা? সে এখনও বেঁচে আছে কী না? দাজ্জাল কি মানুষ নাকি কোন সভ্যতা? 


– এই প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর আমাদের অনেকের কাছে নেই। এই সুযোগে বিভিন্ন ভ্রান্ত বিশ্বাস, অলীক বিশ্বাস, ভাসা ভাসা কাটছাঁট বিশ্বাস সময়ের সাথে সাথে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। 

দাজ্জালকে অনেকেই আবার অস্বীকার করে বসে আছে। অনেকেই আবার রূপক অর্থে নিয়েছে। অনেকেই ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা করেছে। এতে করে আলাভোলা মুসলিম সমাজ ভ্রান্তির স্বীকার হয়েছে, এবং হচ্ছে।
.
মুসলিম সমাজকে দাজ্জাল সম্পর্কে সচেতন এবং আগাছার মত গজিয়ে ওঠা যাবতীয় ভ্রান্ত বিশ্বাসের অপনোদন করা হয়েছে এই বইটিতে।
.
বইটির সম্পাদনায় যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের জন্য অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে দুআ ও ভালবাসা। মহান আল্লাহ্‌ সবাইকে যাজায়ে খইর দান করুন। যাবতীয় প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার জন্য। 


প্রকাশ্য, অপ্রকাশ্য, ইচ্ছাকৃত, অনিচ্ছাকৃত রিয়া ও লৌকিকতা থেকে মহান আল্লাহ্‌র কাছে পানাহ চাই। সেই সাথে বইটি যদি উম্মাহর কোন উপকারে আসে তার বিনিময়ে মহান আল্লাহর রহমত ও সন্তুষ্টি চাই। দাজ্জালের ফিতনাকে ভয় পাই, মহান আল্লাহ্‌র কাছে তার ফিতনা থেকে রেহাই চাই।
.
আল্লাহুম্মা তাক্বাব্বাল মিন্না!

.- Rajib Hasan



 “দাজ্জাল”  ও ইলুমিনাতি নিয়ে বাংলা বই PDF



বই : ইলুমিনাতি , আবদুল কাইয়্যুম আহমেদ
রচনা : আবদুল কাইয়্যুম আহমেদ
প্রকাশক : তাজকিয়া পাবলিকেশন

তরুণ, যে বই পড়তেই হবে আপনাকে! - Musa Aman
.
‘একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আধুনিক বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তির অভাবনীয় উন্নতির যুগে নিজেকে একজন যোগ্য ও অগ্রসর ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তোলা অপরিহার্য। বিজ্ঞান যেমন আলোর গতিতে এগোচ্ছে, তেমনি প্রতিনিয়ত আমাদের দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে বিশাল একেক প্রশ্নবোধক চিহ্নের সামনে। প্রযুক্তির উৎকর্ষের ফলে যে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। শুধু ইতিবাচক নয়, নেতিবাচকও। অথচ আমরা অভুক্তের মতো সামনে যা আসে বাছ-বিচার ছাড়াই তা গোগ্রাসে গিলতে থাকি। যুগান্তরে বয়ে আসা এই মানসিকতা আজ গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।


জীবন আর আঞ্চলিক পরিধির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, এটা এখন বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে রূপ ধারণ করেছে। আমরা খালি চোখে দেখছি—আমেরিকা-ইংল্যান্ড-রাশিয়া-ফ্রান্স-জার্মান-চিনের নেতৃত্বে জাতিসংঘের মতো প্রমোদতরীতে চড়ে বিশ্ব শান্তি-ভ্রাতৃত্ব-মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত শিখরে আরোহণ করতে যাচ্ছে। সৌম্য-শান্ত চেহারা নিয়ে বয়ে চলা এই স্রোতের আরও একটা রূপ আছে—কালো রূপ। যা অতলস্রোতার মতো খুব নীরবে বয়ে চলে। কুৎসিত, বীভৎস আর ভয়ংকর তার চেহারা। প্যাসিফির ওশানের সেই রেখায় সাদা আর কালো পানির স্রোত যেমন কখনো মিশে যায় না, অথচ একইসাথে বয়ে চলে। কত কাছাকাছি, পাশাপাশি। তেমনি সমাজে বয়ে চলা এই কুৎসিত স্রোতের অস্তিত্বও আমরা খালি চোখে অনুভব করতে পারি না।

পাঠক, এতক্ষণে হয়তো ঘোরলাগা এক কৌতূহলের ভেতর আছেন আপনি, হয়তো সমাজের কালো অংশে বয়ে চলা সেই স্রোতের ব্যাপারে জানার প্রবল আগ্রহ জন্মেছে আপনার। ভাবছেন, কী সেই রহস্যগাঁথা—সেই কৃষ্ণগহ্বর! হ্যাঁ, আপনি ঠিকই ধরেছেন। সমাজের সেই কুৎসিত, বীভৎস, ভয়ংকর স্রোতই হলো ইলুমিনাতি। হাজার বছর ধরে অন্তরালে কলকাঠি নাড়া যে ফ্রিম্যাসনারি গোষ্ঠী, তারই আপডেটেড ভার্সন এই ইলুমিনাতি। স্রোত নিয়ন্ত্রণের যে পরিকল্পনা ইলুমিনাতির ছিল—তা অনেকাংশেই ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রযুক্তি, যুদ্ধাস্ত্র, অর্থনীতি, রাজনীতি, খাদ্য—সবই এখন তাদের হাতে। এখন শুধু জাল গুটিয়ে আনার অপেক্ষা, আমরা অপেক্ষায় আছি ডাঙায় তোলা মাছের মতো খাবি খেতে খেতে মারা যাবার।..’
(লেখকের কথা থেকে...)
Next Post Previous Post