শর্ট কার্টে জান্নাত জেতে চান? তাহলে লেখাটা আপনার জন্য। বাংলা ইসলামিক পোস্ট

শর্ট কার্টে জান্নাত জেতে চান? তাহলে লেখাটা আপনার জন্য। বাংলা ইসলামিক পোস্ট


ইসলামিক


পাঁচবার কোনোমতে নামেমাত্র সালাত,ঘুমে ঘুমে কাটিয়ে দেয়া ৩০টি সিয়াম বা রিয়াযুক্ত হজ্জ-যাকাতের বিনিময়ে জান্নাত এর মতো বিশাল এক পুরুষ্কার ভোগ করার স্বপ্ন দেখেন আপনি? বাহ! দারুন শর্টকাট তো। 
ইকবাল হোসেন

আচ্ছা আপনাদের কি কখনো একবারো মনে হয় না এই যা হচ্ছে তা ঠিক হচ্ছে না। এই যে ধরুন না মসজিদের ব্যাপারটাই। পেছনের কাতারের জন্য এক প্রকার যুদ্ধ। কোনো রকম ফরয টুকু আদায় করেই এক ছুট ইহকালের জন্য। 

হেলেদুলে খুশু খুজু না রেখে,টাখনুর উপর কাপড় আছে কি না শরীরের পর্দা ঠিক মতো আদায় হয়েছে কিনা বা আহকাম আরকানের পূর্নাঙ্গ খেয়াল না করেই একঘেয়েমি মনোভাব নিয়ে সালাত আদায় করাটাই যথেষ্ট? সত্যি করে ভাবুন তো কাকে বুঝ দিচ্ছেন এই ইবাদাত দিয়ে? কি আশা করেন এরূপ ইবাদত দিয়ে? এই আ'মল কি নিজের জন্য করেন নাকি সৃষ্টিকর্তার জন্য? 

সৃষ্টিকর্তার কি আ'মল এর দরকার নাকি আমার আপনার? দুনিয়ার সব কিছু একের এক হওয়া লাগবেই হোক পোশাকের ক্ষেত্রে হোক খাবারের ক্ষেত্রে কিংবা ক্যারিয়ার বা কর্মস্থল। সব পারফেক্ট হওয়া চাই তাহলে দ্বীনের ব্যাপারে এত অলসতা এত গাফেলতি কেন?

 আমাকে আপনাকে এই গাফেলতি এই খেয়ালখুশির তামাশার জন্য আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে পাঠানো হয়েছে? দ্বীন কি তামাশা নাকি যেটুকু মানতে কষ্ট হয় বা মানেনই না সেটুকু তামাশা?
রাসূল সাঃ এর হাদিসে আছে, তিনি সাহাবীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন-যখন তোমরা জান্নাতের জন্য চাইবে অবশ্যই জান্নাতুল ফিরদাউস কে চাইবে। খালি ইমামের সাথে আল্লাহুম্মা আমিন আমিন বলেই কি জান্নাতুল ফিরদাউস এর মতো গ্র‍্যান্ড প্রাইজ পাওয়া যাবে?
দুঃখিত যদি আমার কথায় কষ্ট পেয়ে থাকেন।তবে আমার জিজ্ঞাসু মন বার বার এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে চায়।

জগতটাকে দেখলে বড়ই অবাক লাগে যে দুনিয়ার সব বিষয় খুটিনাটি নিয়ে জানার সময় আছে অথচ দ্বীনের কার্যাবলী আসলেই যেন অজুহাত আর অবজ্ঞার সুর বেয়ে পড়ে। মুসলিম হয়েও এত অধপতনের কারনটাই বা কি? আপনি মুসলিম ও বিবেকবান। একবারের জন্যেও কি বিবেকে ধাক্কা লাগে না যে যা হচ্ছে যা করছি তাতে ফলশুন্যের সম্ভাবনাই বেশি। দুনিয়ার সবাই যেভাবে আমরা এই ইহকালের রঙে মেতে উঠেছি সেখানে আল্লাহর বিধান ও রাসুলের অনুসরন এখন ঐচ্ছিক বিষয়ের মতো হয়ে গেছে। আল্লাহ নিজে বলছেন তিনি ইনসান ও জ্বিনজাতি সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদতের জন্য। যেখানে স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের জন্য মেইন সাব্জেক্ট নির্ধারন করে দিয়েছেন সেখানে দিত্ববার নতুন কিছু সংযুক্ত করার অবকাশ নেই। আল্লাহর হুকুম আর রাসুলের সুন্নাহই কিন্তু একমাত্র কার্যাবলির হওয়ার দাবিদার বেশি। আর সেখানে আমরা কি করে চলেছি দিনের পর দিন।


চলুন আরেকটু যদি চিন্তা করি তাহলে দেখুন আমাদের কে সালাত কায়েম করতে বলা হচ্ছে। যার অর্থ সালাত প্রতিষ্ঠা করো যার মানে নিজে পড়া এবং অপরকেও সালাত আদায় করার দাওয়াত দেয়া। এটা কি কঠিন কিছু? এতে কি রক্ত ঝরে? এতে কি অর্থ সম্পদের নিঃশেষ হয়? এটা কি ৫-১০ মাইল পথ পাড়িয়ে দিয়ে করার মতো কিছু? নাহ কিছুই না। আপনি সালাত আদায় করবেন পাশাপাশি আপনার নিকটস্থ সবাইকে সালাতের জন্য ডেকে সাথে নিবেন। এই তো কাজ। এই সামান্য ইবাদত করা সেই মানুষের পক্ষে কিভাবে অসম্ভব হয় যাদের কাছে অসম্ভব ও মাথা নত করে? কতটুকু সময় লাগে ৫ বার সালাত আদায় করতে? এই সামান্য সময়টুকু যদি নাই দিতে পারেন তাহলে কিসের স্বপ্নে বেচে আছেন? জান্নাত এমনি এমনি দিয়ে দিবে?

বলছিলাম মনের ভেতরে থাকা একরাশ জেদের সমারোহগুলো কে। কথাগুলো আমরা সবাই জানি সবাই বুঝি কেবল মানার ক্ষেত্রেই যতসব বাধা। প্রিয় ভাই বা বোন আমার! দয়া করে আজকে আমার কথা গুলো একবার শুনুন। ভেতরটাকে একবার নাড়া দিন। কলবটাকে একটু শক্ত করুন। ভেতরে সামান্য জেদের সঞ্চার করুন। বিসমিল্লাহ বলে শুরু করুন। আপনি কত বড় পাপী ভাববেন না।গতকাল কি করেছেন দেখার দরকার নেই বা গত ৫ মিনিট আগেও যদি অপরাধ করেছেন তাও দেখার প্রয়োজন নেই। আপনার প্রতিদিনের পাপের পরেও প্রতিটা মুহুর্তের নাফরমানির পরেও যেই সৃষ্টিকর্তা আপনার হৃতস্পন্দন থামিয়ে দেননি। 



আপনার ফুসফুসে এখনো বায়ুর কমতি দেন নি সেই রবই চেয়ে আছেন আপনার অপেক্ষায় যে আপনি ফিরে আসবেন আপনার পাহাড় সমান গুনাহ নিয়ে। আপনার ক্ষমার বুলি শুনার জন্য তিনি অধীরভাবে ভাবে অপেক্ষা করছেন। যেন ক্ষমা চাওয়া মাত্রই তিনি ক্ষমা করে দিবেন। সেই রহিম সেই দয়ালু রবকে আর কিভাবে উপেক্ষা করে চলবেন? আর কত কাল!
যদি পবিত্র না থাকেন পবিত্রতা অর্জন করে নিন। রুমটা আবছা অন্ধকার করে দাড়িয়ে যান রবের সামনে। আজ আল্লাহ তায়ালার নিকট আরেকবার ক্ষমা চেয়ে দেখুন। নিজের ভুলের সরল স্বীকারোক্তি দিন। সালাতে দাড়িয়ে যান,দাড়িয়ে যান। চলে যান এক লম্বা সিজদায়। চোখ ভিজিয়ে দিন। ভিজিয়ে দিন আপনার ভেতর আত্মাকেও। ক্ষমার দুয়ারে আজ আপনার পক্ষ থেকে টোকা পড়বেই। আপনি বান্দা,ভুলের সমুদ্র নিয়ে গেলে রব ক্ষমার মহাসাগর নিয়ে আসবে। আজই হোক সেই দিন যেদিন আপনি আবার চোখ থেকে পানি ছাড়বেন। এই মুহুর্ত হোক আপনার চেষ্টার সূচনা। গতকাল শয়তান যদি আপনাকে দিয়ে ১ গুন খারাপ কাজ ঘটিয়ে থাকে তার বদৌলতে ৩ গুন বেশি সওয়াব অর্জন করে শয়তানের চেষ্টায় পানি ছুড়ে মারুন। আসুন আজকেই শুরু করি তাঁর প্রিয় বান্দা/বান্দী হওয়ার নতুন অধ্যায়। ভুলের তওবা করে ফিরে আসুন সেদিনের আগেই যেদিন ২য় বার আর চোখ জোড়া মেলে এ দুনিয়া আর দেখতে পাবেন না। অন্তত সেদিনের ভয়ে হলেও কেদে দিন।


ফিরে আসুন ভাই/বোন। চলুন জান্নাতে দেখা করি।সেখানে গিয়ে না হয় নির্মল বাতাসে কিছু আন্দদঘন সময় কাটাবো।
মা'আসসালামা।
ইকবাল হোসেন
বিঃদ্রঃ--আমি নিয়মিত লেখক নই। লিখার মধ্যের ভুলভ্রান্তি ধরিয়ে দিলে খুবই উপকৃত হবো। জাযাকাল্লাহ/জাযাকিল্লাহ খাইরান।
Next Post Previous Post