উট বাধুন আর আল্লাহ্‌র ওপর তাওয়াক্কুল করুন।

করোনা ভাইরাস ও আমাদের অতি বিজ্ঞানী সমাজের বেশি বুঝা

 Image result for কোভিড-১৯

১। কোভিড-১৯ সনাক্তকরণের জন্য টেস্টিং IEDCR-এ সেন্ট্রালাইযড করা হয়েছে। আর কারো টেস্ট করার ক্ষমতা নেই। টেস্টের রেযাল্ট ছাড়া হসপিটাল করোনার সিম্পটমওয়ালা রোগী অ্যাডমিট করবে না। আর আপনি যদি প্রবাসী না হন বা প্রবাসীর আত্মীয় না হন তাহলে IEDCR আপনার টেস্ট করবে না। এটা একটা ইনফিনিট লুপ। এটা চলতে থাকলে মানুষ হসপিটাল আর টেস্টের পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে কোন চিকিৎসা ছাড়া মারা যাবে।
.
২। হসপিটালগুলোর ডাক্তারদের প্রাইমারি প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট দেয়া হয়নি। অনেক হসপিটালে ডক্তারদের বলা হয়েছে ওয়ান টাইম গ্লাভস কিনে বার বার ধুয়ে ধুয়ে ব্যবহার করতে। কোথাও বলা হয়েছে 'সবাই মাস্ক পরে ঘুরলে পাবলিক ঘাবড়ে যাবে। মাস্ক পরার দরকার নেই।
যারা চিকিৎসা করবেন তাদের বেইসিক জিনিষপত্র দেয়া না হলে তারা কী করবেন? এই মানুষগুলোর তো পরিবার আছে। তারা নিজেরা আক্রান্ত হয়ে বাসায় ফেরার পর কী হবে? এধরণের সিচুয়েশানে ডাক্তারদের প্রটেক্টিভ গিয়ার দেয়াটা একদম রুটিন একটা কাজ। কিন্তু এটা করা হয়নি। সম্ভবত আতশবাজি আর মরিচা বাতির পেছনে খরচ বেশি হয়ে গেছে।
.
৩। অফিস ছুটি দেয়ার পর ইটালির মানুষ কিছুদিন মানুষ গিয়ে বীচে মৌজমাস্তি করেছে। মড়ক শুরু হয়েছে কিছুদিন পর। ইরানের লোকজন দেখলাম এখনো ডিসইনফেক্টেড স্প্রে নিয়ে পার্টি করছে, পারসিয়ান ক্যালেন্ডারের শেষ বুধবার উদযাপনের জন্যে। মালায়শিয়াতে লকডাউনের পর লোকজন গিয়ে ক্যাফে আর খাবার দোকানে টেইক-অ্যাওয়ে ফুড অর্ডার করে বাইরে বসে চিল করছে। আড্ডা হচ্ছে। ইউএস আর অস্ট্রেলিয়াতে টিস্যু পেপার আর টয়লেট টিস্যু নিয়ে সুপারশপে মারামারি করেছে মানুষ। লকডাউনের ঘোষণা দেয়ার পর নেদারল্যান্ডের লোকজন লাইন দিয়েছে গাঁজার দোকানের সামনে। অ্যামেরিকায় সকাল ৭টা থেকে লম্বা লাইন বারের সামনে।
.
বাংলাদেশের মানুষ হুজুগে। আমাদের অনেক দোষ আছে। মানলাম। কিন্তু করোনার ইস্যুটা সিরিয়াসলি না নিয়ে গায়ে বাতাস লাগিয়ে ঘুরে বেড়াবার টেন্ডেন্সিটা শুধু বাংলাদেশের মানুষের না। সিচুয়েশানের গুরুত্ব মানুষকে বোঝানোর দায়িত্ব, সরকার, মিডিয়া, এক্সপার্টদের। প্রথম দুটা তো দুধভাত, তারা জন্মদিন পালন নিয়েই আছে। কিন্তু সাধারণ বাঙ্গালকে গালি দেয়া এলিট এক্সপার্ট শ্রেণী গত দু মাসে কী করেছে? সস্তা ভাইরাল ভিডিও আর ইন্টারভিউ দিয়ে মানুষের মধ্যে একটা ভিত্তিহীন নিরাপত্তার অনুভূতি তৈরি করেছে। আম জনতার দোষ আছে। কিন্তু দোষ শুধু আমজনতার না।
.
৪। চরম পর্যায়ের মিসম্যানেজমেন্ট এবং অবহেলা অলরেডি বাংলাদেশে হয়ে গেছে। যদি গ্লোবাল প্যাটার্ন অনুযায়ী হিসেব করা হয় তাহলে কিছুদিনের মধ্যে আমরা শত শত, কিংবা হাজারের বেশি মৃত্যুর খবর পাবো। ১৫০ কিংবা ২৫০ আইসিউতে রোগীর বন্যা আটকানো যাবে না। বাজারে প্যানিক কেনাকাটা হবে। লকডাউন হবে। ব্যাংকেও হয়তো দেখা যাবে লম্বা লাইন। কিন্তু অলরেডি ক্ষতি যা হবার হয়ে গেছে। কন্ট্যাক্ট ট্রেইসিং এর কোন সুযোগ এখন আর নেই। এখন যা করার তা হল আপনার হাতে। নিজে সতর্ক হোন। নিজের পরিবারকে সতর্ক করুন। যারা আপনার কথা শোনে তাদেরকে সতর্ক করুন। আল্লাহর কাছে আশ্রয় চান, মাসনুন আযকার আকড়ে ধরুন। বাইরে চলাফেরা যথাসম্ভব কমিয়ে আনুন। হাত ধোঁয়া, মুখে হাত না দেয়া, এসব অলরেডি জানেন, এগুলো মেনে চলুন। আল্লাহ্‌ না করুন, পরিবারে কেউ ক্রিটীকালি আক্রান্ত না হলে, আইসিইউ পাবেন না, ধরে নিয়ে বিকল্প কী হতে পারে তা এখনই চিন্তা করুন। আর নিজের কিংবা নিজের পরিবারের জানের ব্যাপারে সরকার আর মিডিয়ার কথার ওপর ভরসা করে ৭৭ এ বাজি লাগাবেন কি না, সেটাও ভেবে দেখুন।
.
উট বাধুন আর আল্লাহ্‌র ওপর তাওয়াক্কুল করুন।
হাসবুনাল্লাহ...
Next Post Previous Post