পর্দা, নন- মাহরাম, ফ্রি মিক্সিং, দ্বীন ইসলাম এবং আমরা - Sajid Islam

পর্দা, নন- মাহরাম, ফ্রি মিক্সিং, দ্বীন ইসলাম এবং আমরা...





এই ইস্যুতে লিখতে সত্যি বলতে আমার ভয় লাগে। এমন আহামরি দ্বীনদার তো নিজে নই! কিন্তু হঠাৎ কয়েকটা ঘটনায় এই বিষয়ে কিছু লিখতে ইচ্ছে হল। আল্লাহ আমার সীমাবদ্ধতাগুলো ক্ষমা করে এই লেখায় নিয়্যতের বিশুদ্ধতা দান করুন। আল্লাহর কাছে বিতাড়িত শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বিরত থেকে আমার মুসলিম ভাই বোনদের জন্য বরকত প্রার্থনা করছি।
এক ছোট ভাই বলল, “অমুক দীনী বোন following you” এই নোটিফিকেশন দেখলে সে ঈমানী পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যায়, সে ফিতনা অনুভব করে! আলহামদুলিল্লাহ! কিছু মুসলিম থাকে যারা নিজেদের ঈমান নিয়ে খুব বেশী ভীত সন্ত্রস্ত থাকে। সবসময় নিজেকে ফিতনার মধ্যে মনে করে। এবং এর ফলে তারা মানসিক হীনমন্যতায় ভোগে তারা বুঝি খুব খারাপ মুসলিম!! সুবাহানাল্লাহ! এমন অনেক সাহাবী ছিলেন যারা নিজেদের মুনাফিক মনে করতেন, ভাবতেন তারা বুঝি মুনাফিক হয়ে গেছেন!! It’s a sign of তাকওয়া। it’s a sign that you fear Allah Subahana wa tayala! আলহামদুলিল্লাহ্‌!
বাংলাদেশের মত একটা দেশে যেখানে ৯০% মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও ইসলামটা স্রেফ কিছু আচার অনুষ্ঠান যেখানে নারী পুরুষের মধ্যে যে একটা পর্দার বিধান আছে এবং এই বিষয়ে যে স্ট্রিক্ট কথাবার্তা আছে কুরআন এবং হাদিসে সে শিক্ষা আমাদের সন্তানদের দেওয়া হয়না। দেওয়ার কথাও না যেখানে এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও কোন কেয়ার নেই! পরিবার, আত্মীয়- স্বজনদের মধ্যে ইসলামী চর্চার অভাব, কো- এডুকেশন, ছেলেমেয়েদের “বন্ধু আড্ডা গান” এর অবাধ স্বাধীনতা, জাফর ইকবাল গঙদের সেক্যুলার মগজ ধোলাই, নোংরা সংস্কৃতি, সস্তা গল্প উপন্যাস, মুভি এসবের পর্দাহীন জীবনের আহবান সবকিছু মিলিয়ে সহজেই অনুমেয় আমরা, আপনারা, আপনাদের সন্তানেরা কিভাবে বড় হচ্ছে।

কিভাবে আমরা আশা করব যে ছেলে মেয়েরা নারী পুরুষের মধ্যে পর্দা, নন মাহরামের সাথে নিরাপদ দুরুত্ব বজায় রেখে চলা এসবের প্রতি সচেতন হবে? এটা আমরা আশা করতে পারি না বলেই আমরা এটাও আশা করতে পারছি না যে সমাজ থেকে অশ্লীলতা, ফ্রি মিক্সিং এর মত বিষয়গুলো দ্রবীভূত হবে। কিন্তু আমরা এটাও জানি সবাই যখন স্রোতের টানে গা ভাসিয়ে দেয় তখন স্রোতের বিপরীতে কিছু মানুষ থাকে। কিছু মানুষ অবশ্যই থাকে যারা ইসলামটাকে কয়টা আচার অনুষ্ঠান হিসেবে নয় একটি জীবন বিধান হিসেবে দেখে! এটাই ইসলাম আর এরাই মুসলিম যারা জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে ইসলাম দিয়ে judge করে। এটাই ইসলাম যেখানে মুসলিমরা নিজেদের প্রবৃত্তি আর কামনা বাসনাগুলো নিয়ে শয়তানের সাথে যুদ্ধ করবে এবং নিজেকে মহান আল্লাহর দরবারে সঁপে দেবে। এরাই তো মুসলিম যারা জীবনের প্রতিটি বাঁকে বাঁকে খোঁজ করবে ইসলাম কি বলে, ইসলাম কি শেখায়, ইসলামের সমাধান কি!
ইসলামে পর্দার কথা আসলেই আমরা চোখ বন্ধ করে মনে করি এক টুকরো কালো কাপড়। তার চেয়েও বড় কথা পর্দা প্রসঙ্গ আসলেই মেয়েদের কথা ছাড়া ছেলেদের প্রসঙ্গ উঠেই না, ব্যাপারটা এমন যেন ছেলেদের জন্য পর্দার কোন বিধান নেই। কিন্তু আমরা যদি কুরআন খুলে দেখি তাহলে দেখব মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে প্রথমেই বলেছেন ছেলেদের পর্দার কথা। আল্লাহ বলছেন,
“ মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন"। [সূরা নূরঃ ৩০]
আল্লাহ আমার আপনার মত গুনাহগার মুসলিমদের তো বটেই মুমিনদের পর্যন্ত সতর্ক করে বলছেন তারা যেন দৃষ্টি সংযত রাখে। সুবাহানাল্লাহ! তাহলে পর্দার কথা আসলে সবার মনোযোগ মেয়েদের দিকে ফেরানোর আগে চিন্তা করা উচিত আল্লাহর কাছে আমি কতটুকু সততার পরিচয় দিতে পেরেছি। তারপরই আল্লাহ কুরআনে বলেছেন মেয়েদের পর্দার কথা। আল্লাহ বলছেন,
“(হে নবী), তুমি মুমেন নারীদেরকেও বল, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নিন্মগামি করে রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানসমুহের হেফাজত করে, তারা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন করে না বেড়ায়, তবে তারা (শরীরের) যে অংশ(এমনিই) খোলা থাকে(তার কথা আলাদা), তারা যেন তাদের বক্ষদেশ মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে, তারা যেন তাদের স্বামী, তাদের পিতা, তাদের শ্বশুর, তাদের ছেলে, তাদের স্বামীর (আগের ঘরের) ছেলে, তাদের ভাই, তাদের ভাইর ছেলে, তাদের বোনের ছেলে, তাদের (সচরাচর মেলা মেশার) মহিলা, নিজেদের অধিকারভুক্ত সেবিকা দাসি,নিজেদের অধীনস্থ (এমন) পুরুষ যাদের (মহিলাদের কাছ থেকে) কোন কিছুই কামনা করার নেই, কিংবা এমন শিশু যারা এখনো মহিলাদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে কিছুই জানেনা- (এমন মানুষ ছাড়া তারা যেন) অন্য কারো সামনে নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, (চলার সময়) জমিনের উপর তারা যেন এমনভাবে নিজেদের পা না রাখে যে সৌন্দর্য তারা গোপন করে রেখেছিল তা (পায়ের আওয়াজে) লোকদের কাছে জানাজানি হয়ে যায়; হে ঈমানদার ব্যক্তিরা,( ত্রুটি বিচ্যুতির জন্য) তোমরা সবাই আল্লাহর দরবারে তাওবা কর, আশা করা যায় তোমরা নাজাত পেয়ে যাবে”। [আন নুরঃ ৩১]
আমরা আয়াত দুইটা লক্ষ্য করি ইনশাআল্লাহ। ছেলেদের ক্ষেত্রে অল্প কথায় শেষ হলেও মেয়েদের আয়াতে আরও কিছু যোগ করা হয়েছে। দৃষ্টি অবনতের পাশাপাশি এসেছে সৌন্দর্য প্রকাশ করে না বেড়ানো, হিজাব, মাহরামদের স্পেসিপিক করে দিয়ে বাকি নন মাহরামদের সাথে পর্দা করা এমনকি বলা হয়েছে গোপন সাজ সজ্জা প্রকাশ না করার জন্য জোরে পদচারনা না করে!
সুবাহানাল্লাহ! আর কোথায় আছি আমরা। কোথায় আছে আমাদের বোনেরা!! এবার আমরা কুরআনের অন্য একটা আয়াতে দৃষ্টিপাত করি যেখানে আল্লাহ স্বয়ং নবী পত্নীদের সতর্ক করে বলেছেন,
“ হে নবী পত্নীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও; যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে পরপুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষনীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না, ফলে সেই ব্যক্তি কুবাসনা করে, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে তোমরা সঙ্গত কথাবার্তা বলবে”। [সূরা আহযাবঃ ৩২]
এবার আমরা একটু চোখ বন্ধ করে চিন্তা করি নবী পত্নীদের জন্য আল্লাহর আদেশ যদি এরকম হয় তাহলে আমাদের অবস্থা কি হবে!! এসব হচ্ছে কুরআনের কথা, মহান আল্লাহর কথা। এখানে কোন “না মানে ইয়ে” কিংবা মন খুঁতখুঁত করার কিছুই নেই। কোন যুক্তি নেই নারী পুরুষের সম্পর্ককে সহজ মনে করার। “মুমিন মুমেনা একে অপরের সহযোগী” আয়াত দেখে যারা এইসব সুস্পষ্ট আয়াতগুলোকে হালকা ভেবে পর্দা ভেঙ্গে যাচ্ছেন, অপ্রয়োজনীয় কথা বলা কিংবা লুতুপুতু করে যাচ্ছেন তাদের বলব সেই আয়াতের তাফসীর খুলে দেখুন “সহযোগী” মানে কি বুঝানো হয়েছে। সেখানে কোনভাবেই আপনাকে টেম্পু চালানোর লাইসেন্স দেওয়া হয়নি! কোনভাবেই আপনাকে শয়তানের জন্য ফিতনার দরোজা খুলে রাখার কথা বলা হয়নি। আমাদের ভাবটা এমন যেন শয়তানের সাথে আমরা চুক্তি করে রেখেছি যে শয়তান আমাদের পিছু নেবে না! দীনী বোনেরা ফেসবুকে ছবি আপলোড দেবে আর দীনী ভাইয়েরা সেখানে মাশাআল্লাহ, সুবাহানাল্লাহ কমেন্ট করে সওয়াব হাসিল করবে (!!)!
দীনী ভাইয়েরা ভাবুক ভাবুক স্ট্যাটাস হাঁকাবে আর দীনী বোনেরা সেখানে ভেংচি, চোখ মারা ইমুশনের জোয়ার বইয়ে দীনী ফাজলামো করবে!! কি জায়েজ?? ফেসবুকে উঁচু লেভেলের দীনী স্ট্যাটাস থাকা ভাইরাও তলে তলে ফেসবুক ইনবক্সে টেম্পু চালায় এটাও দেখি আর হিজাব, নিকাব এমনকি তীব্র গরমে হাত মোজা পরার প্রশংসনীয় মুমেন নারীরাও টেম্পু চালিয়ে দীনী ভাইদের মনে ঝড় তুলেছে এমনও আছে!
আরেকটা কথা হল ব্যাপারটা এমন না যে বিয়ে করে, বাচ্চা কাচ্চার বাবা মা হয়ে যাওয়া মানে সব কিছু ওকে হয়ে গেল। কিছু মানুষের আচরন দেখে মনে হয় সূরা নূরের ৩০ আর ৩১ নং আর সূরা আহযাবের ৩২ নং আয়াতগুলো যেন শুধু অবিবাহিতদের জন্য। তারা কি ভাবতে শুরু করেছে তাদের জন্য আয়াতগুলো invalid হয়ে গেছে? দ্বীনের বুঝ আর ঈমান এত বেশী হয়ে গেছে যে যাবতীয় ফিতনাকে damn care ভাব দেখাচ্ছে?? আল্লাহ আক্বল দান করুন। আল্লাহ দ্বীনের বুঝ বাড়িয়ে দিন। আমীন।
"মানুষ দুর্বল সৃজিত হয়েছে। (মেয়েদের প্রতি)" [সুরা নিসাঃ ২৮]
কথা হচ্ছে তাদের সাথে যারা চান দ্বীন ইসলামকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরতে। আলহামদুলিল্লাহ কিছু মানুষের সাথে আমার পরিচয় হয়েছে যাদের ঈমান সবসময় আমাকে অনুপ্রেরণা দেয়। যে বিষয়গুলো আমার কাছে একসময় খুবই তুচ্ছ মনে হত কিংবা মনেই হত না এসবের কোন গুরুত্ব আছে দ্বীনের এমন বিষয়েও কিছু কিছু মানুষের সিরিয়াসনেস আমাকে প্রায়ই ঈমানের তাগিদ দেয়। নিজের ভুলগুলো তখনই স্পষ্ট হয়ে যায়। নিজের দ্বীনকে তখনই অর্থহীন মনে হয়! আল্লাহর দ্বীনকে যারা সিরিয়াসলি নেন আমার ক্ষুদ্র জীবনের অভিজ্ঞতা বলে তারা অবশ্যই একদিন নারীদের সাথে ফ্রি মিক্সিং, পর্দা maintain না করা এসবের ভয়াবহতা বুঝতে পারে। একদিন কুরআনের আয়াতগুলো তাদেরকে ভাবায় যারা সত্যিই মনে করে কুরআনের এক একটা আয়াত এক একটা উপদেশ, সমাধান, আদেশ আর নিষেধ মহান আল্লাহর পক্ষ্য থেকে। যে আদেশ নিষেধের বাধ্যতা আর অবাধ্যতার মাঝেই একজন সত্যিকারের মুসলিম আর নামমাত্র মুসলিমের পার্থক্য! আপনার ভূরি ভূরি জ্ঞান নয় আল্লাহ দেখবেন আপনার action. আপনার ডেটিকেশন আপনার দ্বীনের প্রতি। আপনার সিরিয়াসনেস প্রতিটি আয়াত আত্মস্থ করায়!
সে সময়টা আসে যখন দ্বীনের পথে পথচলা আপনাকে শিখিয়ে দেবে এসব মেয়ে প্রীতি, টেম্পু চালানো, ফ্রি মিক্সিং, নন মাহরামকে তোড়াই কেয়ার করে অপ্রয়োজনীয় মেলামেশা এসব কত তুচ্ছ। এসব দ্বীনের পথে কাজ করাকে ব্যাহত করে, নিয়্যতের পরিশুদ্ধতা নষ্ট করে, শয়তানকে মনের ভেতর অবাধ বিচরণের সুযোগ করে দেয়। ইসলামের সবগুলো ইশ্যুর মত এই ইস্যুটাও উপলব্ধির। দ্বীনের জন্য এগুলো ক্ষতিকর এবং শয়তানের জন্য ফিতনার দুয়ার খুলে দেওয়ার মত, এটা বোঝার ক্ষমতা আল্লাহ হয়ত সবাইকে দেন না। এগুলো ফিতনা মনে করার মত অন্তরের বুঝ হয়ত সবার ভেতর থাকেনা! আল্লাহর হেদায়াত কারো কাছে বলে কয়ে আসেনা। একান্ত চেষ্টা, মহান রবের কাছে আকুতি আর শুদ্ধ নিয়্যতের মাধ্যমেই আমরা মহান আল্লাহর কাছে হেদায়াত আশা করতে পারি। ইনশাআল্লাহ আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করব আমাদের অন্তরে তিনি ফিতনাকে ফিতনা হিসেবে গন্য করার তাক্বওয়াটুকু যেন দেন। আল্লাহ আমাদের অন্তরকে যেন শয়তানের জিম্মায় ছেড়ে না দেন। খুবই ক্ষুদ্র একটা জীবন, অল্প কিছু সময়। অর্থহীন কিছু ফ্যান্টাসি, রঙিন দুনিয়ার জাহেল ভাবাবেগ, বিপরীত লিঙ্গের প্রতি শয়তানী সুড়সুড়িতে অযাচিত সময়ক্ষেপণ করে আমরা যেন আল্লাহর নিকট লজ্জিত না হই। দিনশেষে আখিরাতের জন্য কিছু মূল্যবান পাথেয় নিয়েই যেন মহান রবের কাছে ফিরে যেতে পারি ,আমীন।

লেখা: সাজিদ ইসলাম




















এক সাহাবা এক মহিলার গোসল করার দৃশ্য দেখায় যা হয়ে ছিল তার সাথে মহিলার গোসল করার দৃশ্য- আল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একজন সাহাবা, নাম থা’লাবা (Tha’laba, বাংলায় অনেক সময় সা’লাবা বলা হয়)। মাত্র ষোল বছর বয়স। রাসূল (সা) এর জন্য বার্তাবাহক হিসেবে এখানে সেখানে ছুটোছুটি করে বেড়াতেন তিনি। একদিন উনি মদীনার পথ ধরে চলছেন, এমন সময় একটা বাড়ির পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় তাঁর চোখ পড়ল দরজা খুলে থাকা এক ঘরের মধ্যে। ভিতরে গোসলখানায় একজন মহিলা গোসলরত ছিলেন, এবং বাতাসে সেখানের পর্দা উড়ছিল, তাই থা’লাবার চোখ ঐ মহিলার উপর যেয়ে পড়ল। সঙ্গে সঙ্গে উনি দৃষ্টি নামিয়ে নিলেন। কিন্তু থা’লাবার মন এক গভীর অপরাধবোধে ভরে গেল। প্রচন্ড দুঃখ তাকে আচ্ছাদন করল। তার নিজেকে মুনাফিক্বের মত লাগছিল। তিনি ভাবলেন, ‘কিভাবে আমি রাসূল (সা) এর সাহাবা হয়ে এতোটা অপ্রীতিকর কাজ করতে পারি?! মানুষের গোপনীয়তাকে নষ্ট করতে পারি? যেই আমি কিনা রাসূল (সা) এর বার্তা বাহক হিসেবে কাজ করি, কেমন করে এই ভীষণ আপত্তিজনক আচরণ তার পক্ষে সম্ভব?’ তাঁর মন আল্লাহর ভয়ে কাতর হয়ে গেল। তিনি ভাবলেন, ‘না জানি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আমার এমন আচরণের কথা রাসূল সা এর কাছে প্রকাশ করে দেয়!’ ভয়ে, রাসূল (সা) এর মুখোমুখি হওয়ার লজ্জায়, তিনি তৎক্ষণাৎ ঐ স্থান থেকে পালিয়ে গেলেন। এভাবে অনেকদিন চলে গেল। রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়ালাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যান্য সাহাবাদের কে থা’লাবার কথা জিজ্ঞেস করতেই থাকতেন। কিন্তু সবাই জানাল কেউ-ই থা’লাবা কে দেখেনি। এদিকে রাসূল সা এর দুশ্চিন্তা ক্রমেই বাড়ছিল। তিনি উমর (রা), সালমান আল ফারিসি সহ আরো কিছু সাহাবাদের পাঠালেন থা’লাবার খোঁজ আনার জন্য। মদীনা তন্ন তন্ন করে খুঁজেও থা’লাবার দেখা মিলল না। পরে মদীনার একেবারে সীমানাবর্তী একটা স্থানে, মক্কা ও মদীনার মধ্যখানে অবস্থিত পর্বতময় একটা জায়গায় পৌঁছে কিছু বেদুঈনের সাথে দেখা হল তাদের। দেখানে এসে তারা থা’লাবার সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে শুরু করলেন। ‘তোমরা কি লম্বা, তরুণ, কম বয়সী একটা ছেলেকে এদিকে আসতে দেখেছ?’ বেদুঈনগুলো মেষ চড়াচ্ছিল। তারা জবাব দিল, সে খবর তারা জানেনা, তবে তারা জিজ্ঞেস করল, ‘তোমরা কি ক্রন্দনরত বালকের সন্ধানে এসেছ?’ একথা শুনে সাহাবীরা আগ্রহী হয়ে উঠলেন এবং তার বর্ণনা জানতে চাইলেন। উত্তরে ওরা বলল, ‘আমরা প্রতিদিন দেখি মাগরিবের সময় এখানে একটা ছেলে আসে, সে দেখতে এতো লম্বা, কিন্তু খুব দুর্বল, সে শুধুই কাঁদতে থাকে। আমরা তাকে খাওয়ার জন্য এক বাটি দুধ দেই, সে দুধের বাটিতে চুমুক দেয়ার সময় তার চোখের পানি টপটপ করে পড়ে মিশে যায় দুধের সাথে, কিন্তু সেদিকে তার হুঁশ থাকেনা!’ তারা জানালো চল্লিশ দিন যাবৎ ছেলেটা এখানে আছে। একটা পর্বতের গুহার মধ্যে সে থাকে, দিনে একবারই সে নেমে আসে, কাঁদতে কাঁদতে; আবার কাঁদতে কাঁদতে, আল্লাহর কাছে সর্বদা ক্ষমা প্রার্থনা করতে করতে উপরে চলে যায়। সাহাবারা বর্ণনা শুনেই বুঝলেন, এ থা’লাবা না হয়ে আর যায় না। তবে তাঁরা উপরে যেয়ে থা’লাবা ভড়কে দিতে চাচ্ছিলেন না, এজন্য নিচেই অপেক্ষা করতে লাগলেন। যথাসময়ে প্রতিদিনের মত আজও থা’লাবা ক্রন্দনরত অবস্থায় নেমে আসলেন, তাঁর আর কোনদিকে খেয়াল নাই। কী দুর্বল শরীর হয়ে গেছে তাঁর! বেদুঈনদের কথামত তাঁরা দেখতে পেলেন, থা’লাবা দুধের বাটিতে হাতে কাঁদছে, আর তাঁর অশ্রু মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে। তাঁর চেহারায় গভীর বিষাদের চিহ্ন স্পষ্টভাবে প্রকাশ পাচ্ছে। সাহাবারা তাকে বললেন, ‘আমাদের সাথে ফিরে চল’; অথচ থা’লাবা যেতে রাজি হচ্ছিলেন না। তিনি বারবার সাহাবাদেরকে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন, ‘আল্লাহ কি আমার মুনাফেক্বী বিষয়ক কোন সূরা নাযিল করেছে?’ সাহাবারা উত্তরে বললেন, ‘না আমাদের জানামতে এমন কোন আয়াত নাযিল হয় নাই।’ উমর (রা) বললেন, রাসূল (সা) আমাদেরকে তোমাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য পাঠিয়েছেন। তুমি যদি এখন যেতে রাজি না হও, তাহলে তোমাকে আমরা জোর করে ধরে নিয়ে যাব। রাসূল (সা) এর কথা অমান্য করবেন এমন কোন সাহাবা ছিল নাহ। কিন্তু থা’লাবা এতোটাই লজ্জিত ছিলেন যে ফিরে যেতে চাচ্ছিলেন নাহ। এরপর সাহাবারা তাকে রাসূল (সা) এর কাছে মদীনায় নিয়ে আসেন। মহানবী (সা) এর কাছে এসে থা’লাবা আবারও একই প্রশ্ন করে, ‘আল্লাহ কি আমাকে মুনাফিক্বদের মধ্যে অন্তর্গত করেছেন অথবা এমন কোন আয়াত নাযিল করেছেন যেখানে বলা আমি মুনাফিক্ব?’ রাসূল (সা) তাকে নিশ্চিত করলেন যে এমন কিছুই নাযিল হয়নি।তিনি থা’লাবার দুর্বল পরিশ্রান্ত মাথাটা নিজের কোলের উপর রাখলেন। থা’লাবা কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল, এমন গুনাহগার ব্যক্তির মাথা আপনার কোল থেকে সরিয়ে দিন।’ উনার কাছে মনে হচ্ছিল যেন সে এসব স্নেহের যোগ্য নাহ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে সান্ত্বনা দিতেই থাকলেন। আল্লাহর রহমত আর দয়ার উপর ভরসা করতে বললেন। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে বললেন। এমন সময় থা’লাবা বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল আমার এমন মনে হচ্ছে যেন আমার হাড় আর মাংসের মাঝখানে পিঁপড়া হেঁটে বেড়াচ্ছে।’
রাসূল (সা) বললেন, ‘ওটা হল মৃত্যুর ফেরেশতা। তোমার সময় এসেছে থা’লাবা, শাহাদাহ পড়’। থা’লাবা শাহাদাহ বলতে থাকলেন, ‘আল্লাহ ছাড়া ইবাদাতের যোগ্য আর কোন ইলাহ নেই, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল’
উনি শাহাদাহ বলতে থাকলেন… বলতেই থাকলেন… এমনভাবে তাঁর রুহ শরীর থেকে বের হয়ে গেল। মহানবী (সা) থা’লাবাকে গোসল করিয়ে জানাজার পর কবর দিতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। আরো অনেক সাহাবা থা’লাবাকে বহন করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। মহানবী (সা) পা টিপে টিপে অনেক সাবধানে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। উমর রাদিয়ালাহু আনহু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল, আপনি এভাবে কেন হাঁটছেন যেন ভিড়ের মাঝে হেঁটে চলেছেন.. কতো রাস্তা ফাঁকা পরে আছে, আপনি আরাম করে কেন চলছেন না ইয়া রাসুল?’ উত্তরে রাসূল (সা) বললেন, ‘হে উমর, আমাকে অনেক সাবধানে চলতে হচ্ছে। সমস্ত রাস্তা ফেরেশতাদের দ্বারা ভরে গেছে । থা’লাবার জন্য এতো ফেরেশতা এসেছে যে আমি ঠিকমত হাঁটার জায়গা পাচ্ছি না’। এই সেই থা’লাবা যে ভুলক্রমে একটা ভুল করার জন্য এতো প্রায়শ্চিত্য করেছেন। গুনাহ-র কাজ করা তো দূরের কথা, গুনাহ না করেও আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে চেয়ে ব্যাকুল হয়েছেন। সুবহান আল্লাহ



























মুসলিমাহ হিসেবে আবেগ নিয়ন্ত্রণ
মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা নারীদের স্বভাবগতভাবে সংবেদনশীল এবং আবেগী করে সৃষ্টি করেছেন। আমরা এটা পছন্দ করি কিংবা না করি। আপনি স্বীকার করুন বা না করুন, একজন নারী সারাদিনে অনেক গুলো তীব্র মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যান। যা তাকে শারিরীকভাবে ক্লান্ত করে এবং তিনি মানসিকভাবেও ক্লান্তি বোধ করেন।
প্রিয় বোনেরা সাবধান! আপনার আবেগকে প্রশ্রয় দেবেন না। এটি এমন একটি জৈবিক সংবেদনশীলতা যা আমাদের মন-মানসিকতাকে অনিচ্ছাকৃত ভাবে পরিবর্তন করে দেয়।এখন প্রশ্ন হলো, আমরা কি করে এই আবেগ এর নিয়ন্ত্রণ করতে পারি?
আমি এ বিষয়ে কিছু টিপস নিয়ে আলোচনা করব। আশা করি এর দ্বারা আমরা উপকৃত হবো ইনশাআল্লাহ।
(১)আপনার আবেগের জায়গাগুলো খুঁজে বের করুনঃ
প্রথমে আপনার আবেগের জায়গাগুলো খুঁজে বের করুন।
তারপর যখনই আপনি আবেগ অনুভব করবেন তখন জোরে শ্বাস নিয়ে নিজেকে বলুন- আমরা প্রাকৃতিক ভাবেই এমন। সুতরাং অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানো ঠিক নয়। তবে সতর্ক থাকবেন! শয়তানের প্ররোচনায় পা দেবেন না, কারোর খারাপ মন্তব্য শুনে গালি গালাজ করবেন না, কারোর বিভ্রান্তিমূলক কথায় কান দেবেন না, অন্যের সাথে পার্থিব বিষয় নিয়ে অহেতুক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। নিঃসন্দেহে এসব শয়তানের প্ররোচনার অংশ। আবেগের পরিবর্তন করুন। মনকে আল্লাহর জিকিরে ব্যস্ত রাখুন। অবশ্যই আল্লাহ এসব পছন্দ করেন।
(২) আবেগকে মেনে নিতে শিখুনঃ
আমাদের সৃষ্টিকর্তা ও মালিক মহান আল্লাহ আমাদের এভাবে ডিজাইন করেছেন- একথা স্বীকার করুন। আমাদের আবেগ আমাদের সুন্দর ও সংবেদনশীল করেছে। আমাদেরকে বানিয়েছে ভালো বন্ধু, প্রেমময় স্ত্রী কিংবা মমতাময়ী মা। তবে আমাদের এটাও মেনে নিতে হবে যে আমাদের আবেগগুলো পরীক্ষাস্বরূপ। কোনো ভালোবাসাই যেনো রবের অসন্তুষ্টির কারণ না হয় সে খেয়াল রাখতে হবে আমাদের। কাউকে ভালোবাসার ক্ষেত্রে আমরা একটা হাদিস অনুসরণ করতে পারি। যদিও এটি মানা আমাদের জন্য অনেক কঠিন হবে। কারণ আমাদের নারী মন গভীরভাবে ভালোবাসতে ভালোবাসে। আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সংযম সহকারে ভালোবাসতে বলেছেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
“যাকে তুমি ভালোবাসো তাকে নির্দিষ্ট মাত্রায় ভালোবাসো। হতে পারে একদিন সে এমন কেউ হয়ে যাবে যার প্রতি তুমি ঘৃণা প্রকাশ করবে। যাকে ঘৃণা করো তার প্রতি নির্দিষ্ট মাত্রায় ঘৃণা প্রকাশ করো। হতে পারে সে একদিন এমন কেউ হবে যার প্রতি তুমি ভালোবাসা প্রকাশ করবে। (আত তিরমিযি, হাদিস নং- ১৯৯৭)
আমাদের সমস্ত ভালোবাসা মহান আল্লাহর জন্যই হওয়া উচিত। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেছেনঃ
“বলুন (হে মুহাম্মাদ সাঃ) নিশ্চয়ই আমার সালাত, আমার ত্যাগ, আমার জীবনাচরণ এবং আমার মৃত্যু আমার রব আল্লাহ তায়ালার জন্য।” (আল -আন'আম ৬: ১৬২)
আমরা আমাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম নাও হতে পারি। তবে আমরা আমাদের কর্ম নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। আমরা আমাদের জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। আমাদের জিহ্বার জন্য শেষ বিচারের দিন জবাবদিহিতা করতে হবে। আমরা আমাদের কর্মের জন্য দায়বদ্ধ থাকবো। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়! বিশেষত নারীদের জন্য। কারণ নারীদের মধ্যেই অধিক ক্রোধ এবং হিংসা কাজ করে। অবশ্যই গীবতের ক্ষেত্রেও নারীরাই অনেকাংশে এগিয়ে আছে। আমরা আমাদের এসব পাপকর্ম থেকে আত্মরক্ষা করে চলবো ইনশাআল্লাহ।
(৩) আবেগকে সাগ্রহে গ্রহণ করুনঃ
এটা প্রত্যেকের ব্যক্তিগত জিহাদ। আমাদের মধ্যে কেউই অত্যধিক সংবেদনশীল হওয়া পছন্দ করেন না। আমরা প্রায়শই যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া অশ্রু ঝড়াই। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়,
হয়তো একদিন আগে কারোর সাথে পরিচয় হয়েছে। তাকে পছন্দ করে ফেলেছি। তার একটু অবহেলা আমাদের অশ্রু ঝরাতে বাধ্য করে। কিংবা হতে পারে কারোর কোনো কথায় আপনি এতটা রেগে গেছেন যে রাগের ফলে আপনার ঘাড়ের রগ উঠানামা করছে। তবে এই রাগগুলো দীর্ঘস্থায়ী হয় না। আমি ব্যক্তিগত ভাবে বেশিক্ষণ রাগ করে থাকতে পারি না। অবশ্য এ জন্য নিজের প্রতি কিছুটা বিরক্তও হই।
আমি কারোর প্রতি বিরক্ত হলে তার প্রতি বিরক্ত হওয়ার কারণ এবং নিজের মতামত প্রকাশ করি। তবে রাগের সময় আমি সাধারণত চুপ থাকি। যখন প্রচন্ড রেগে যাই তখন আমি সঠিক ভাবে বাক্যবিন্যাস করতে পারি না। সে-কারণেই চুপ থাকি। আমার মুখ বন্ধ থাকে সে সময় টুকু। আলহামদুলিল্লাহ।
রাগের সময় আমি নিজেকে যেকোনো কথা বলা থেকে বিরত রাখি এবং রাগ কমা অব্দি অপেক্ষা করি। রাগের এই সময়টুকু আমি ভাবার সময় পাই- আমার মূলত কি বলা উচিত সে বিষয়ে।অবশ্যই এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে আমার জন্য একটি বিশেষ রহমত। কারণ তিনি জানেন আমার ঠোঁট থেকে যে কথা বের হবে তা যদি হারাম কোনো কথা হয় তাহলে নিশ্চিতভাবেই জাহান্নামের আগুন আমাকে স্পর্শ করবে। যদি আমি তাওবার সুযোগ না পাই। আল্লাহু আলাম।
আমি স্বীকার করি যে, এটি আমার স্বাভাবিক প্রকৃতির একটি অংশ। আমি আমার আবেগকে সাগ্রহে গ্রহণ করতে শিখেছি এবং মোকাবিলা করতে শিখেছি। আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ আমাদের সকলকে আমাদের আবেগকে গ্রহণ করার এবং মোকাবিলা করার উপায় খুঁজতে সাহায্য করুন।
মনে রাখবেন, একজন মুসলিমাহ হিসেবে আমাদের ওরিও কুকি বিস্কিটের মত হওয়া দরকার। পুরো কুকিটি দেখতে বেশ সুন্দর। ভিতরটা নরম এবং মিষ্টি। তবে এর বাহিরের অংশ কিছুটা শক্ত। সহজে ভাঙ্গা যায় না। আমাদের হৃদয় অনেক নরম। বাহিরটা শক্ত। তবে খেয়াল রাখবেন, কোমল হৃদয় যেনো আমাদের কোনো পাপকর্ম করতে বাধ্য না করে।
“হে আল্লাহ! তুমি আমার পালনকর্তা। তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমার বান্দা। আমি আমার সাধ্যমত তোমার দেওয়া অঙ্গীকারে ও প্রতিশ্রুতিতে দৃঢ় আছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হ’তে তোমার নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি আমার উপরে তোমার দেওয়া অনুগ্রহকে স্বীকার করছি এবং আমি আমার গোনাহের স্বীকৃতি দিচ্ছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা কর। কেননা তুমি ব্যতীত পাপসমূহ ক্ষমা করার কেউ নেই।” - সাইয়্যেদ উল ইস্তিগফার।
>~~মূল~Amra Siddiqah
অনুবাদঃ রওশন আরা তাবাসসুম
Next Post Previous Post