কুরবানির আলোচনা | কুরবানি - সামাজিক প্রথা ও ঐতিহ্যে হারিয়ে যাওয়া একটি ইবাদত
কুরবানি - সামাজিক প্রথা ও ঐতিহ্যে হারিয়ে যাওয়া একটি ইবাদত
বর্তমানে সমাজে কুরবানিকে কোনো ইবাদত মনে করা হয় না। আমেজ, বংশ পরাম্পরার রুসুম, এবং অন্য বিষয়ের মত এই বিষয়কেও প্রতিযোগিতার বস্তু মনে করা হয়।
লোক দেখানোর জন্য, বা সমাজের জন্য কুরবানি হয় তা আমরা অনেকে বলি। বলি মনের পশু জবাই করার কথা।
কিন্তু সব কিছু ছাড়িয়ে আমরা খেয়াল করি না, কুরবানি ইবাদত হিসেবে আমাদের মন থেকে মুছে গিয়ে স্থান নিয়েছে কেবল একটি সামাজিক প্রথায়।
অধিকাংশ মানুষ যুগ যুগ ধরে চলা প্রথা হিসেবে কুরবানি দেয়। তাই তো
যারা নামাজ পড়ে না, যাকাত বের করতে চায় না তারা মাস খানেক আগে থেকে কুরবানির পশু কেনার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠে।
কুরবানি কেন্দ্রিক বিষয় গুলো- পশু ক্রয়, হাটে ঘোরা ফেরা, কসাই ঠিক করা, গোস্ত বন্টন ইত্যাদিতে তারা খুব আত্ননিয়োজিত থাকে।
কিন্তু একই ব্যক্তি নামাজের প্রতি অবহেলা করে। ঈদের দিন ওয়াজিব গরু জবাই এবং গোস্ত বন্টন করতে গিয়ে যহর আসরের ফরজ নামাজ পড়ে না।
ঈদের দিনের ফজরের সালাত না পড়লেও সকালে উঠে পশু জবাইয়ের প্রস্তুতি ঠিকই নিয়ে রাখে। এই ধরনের লোকেরা কুরবানি নামক একটি ইবাদাতের দিকে দ্রুত ধাবিত হচ্ছে তা কি দাবী করা যায়?
বরং তারা বাবা-দাদার ঐতিহ্যের দিকে ধাবিত হয়। সমাজের ট্রেন্ডের পিছনে দৌড়ায়। যেখানে ইবাদত নিজেই গৌণ হয়ে গেছে সেখানে রিয়া'র বিষয় নিয়ে আলোচনা গুরুত্বহীন।
বাকি যারা আছে তাদের মধ্যে খুব কম ব্যক্তি রিয়া মুক্ত কুরবানি দিতে পারে। নিয়ত খুব গুরুত্বপূর্ণ।
কুরবানির প্রধান শিক্ষা ও উদ্দেশ্য ভুলে গিয়ে সমাজে খ্যাতি লাভ করার উদ্দেশ্যে কুরবানি দিলে তা আল্লাহর নিকট কবুল হবে না।
বরং শিরক করার পাপে পাপী সাব্যস্ত হতে হবে। অংশীদারে কুরবানি দিলে খুব চিন্তা করে অংশীদার বাছাই করতে হবে।
কারোর নিয়ত মন্দ হলে, বা ইনকাম হারাম হলে মহা বিপদে পড়বেন। অংশীদার ব্যবসা করার সময় যেমন ভাবে অংশীদার নির্বাচন করেন, তার চাইতে বেশি যাচাই-বাছাই ও চিন্তা-ফিকির করে কুরবানির অংশীদার নির্ধারণ করতে হবে।
কেননা এখানে দুনিয়ার সামান্য কোনো অর্থ ইনভেস্ট হচ্ছে না, হচ্ছে আখিরাতের মহা মূল্যবান আমলের।