সর্বোত্তমভাবে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের বিস্তারিত রূপরেখা : তাহাজ্জুদ নামাযের নিয়ম
সর্বোত্তমভাবে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের করার কিছু টিপস
❂ তাহাজ্জুদ আদায়ের ইচ্ছা করলে যথাসম্ভব গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে হবে। এই ব্যাপারে নেককার ব্যক্তিগণ অনেক কথা বলে গেছেন।
.
❂ রাতের বেলা অবশ্যই দ্রুত ঘুমাতে হবে; বেশি রাতজাগা চলবে না। রাতে পানাহার কম করতে হবে। বেশি করলে শরীর অলস হয়ে পড়ে। এরপর, সতর্কতাবশত অ্যালার্ম দিয়ে রাখা উত্তম।
.
❂ ঘুমানোর সময় মাসনুন আমলগুলো করার পর তাহাজ্জুদের জন্য ওঠার আন্তরিক ইচ্ছা নিয়ে ঘুমাতে যান। তাহলে, ঘুমের কারণে ওঠতে না পারলেও তাহাজ্জুদের নেকি পেয়ে যাবেন। এই মর্মে সহিহ হাদিস রয়েছে। [আবু দাউদ, আস-সুনান: ১৩১৪; নাসায়ি, আস-সুনান: ১৭৮৩; হাদিসটি সহিহ]
.
❂ সম্ভব হলে নিজ স্বামী/
.
❂ যথাসম্ভব তাহাজ্জুদের জন্য শেষ রাতে জাগ্রত হোন। মিসওয়াক করুন। কমপক্ষে টুথব্রাশ ব্যবহার করুন। নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের বেলা যখন তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য উঠতেন, তখন মিস্ওয়াক দ্বারা তাঁর মুখ পরিষ্কার করে নিতেন। [বুখারি, আস-সহিহ: ১০৭০]
.
❂ এরপর অজু করুন। প্রথমেই সংক্ষেপে দুই রাকাত দিয়ে নামাজ শুরু করুন। এটি সুন্নাত। [মুসলিম, আস-সহিহ: ৭৬৮]
.
❂ এরপর যথাসম্ভব দীর্ঘ কিয়াম ও কেরাতের মাধ্যমে নামাজ পড়তে থাকুন। কেরাত ও কিয়াম দীর্ঘ করতে একই রাকাতে অনেকগুলো সূরাও পড়তে পারেন। দীর্ঘ কিয়াম তথা দাঁড়িয়া থাকা হয় যে নামাজে, সেটিকে হাদিসে উত্তম নামাজ বলা হয়েছে। [মুসলিম, আস-সহিহ: ৭৫৬]
.
❂ রুকু-সিজদার তাসবিহ ৫/৭ বার অথবা আরও বেশি করে পড়ে রুকু-সিজদাকে দীর্ঘ করুন। সিজদায় তাসবিহ পাঠের পর আল্লাহর কাছে দু‘আও করতে পারেন। (এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট আমরা লিখেছিলাম। কমেন্টে লিংক পাবেন।)
.
❂ নামাজের স্থানটি নিরিবিলি হওয়া উচিত। মনোযোগ ঠিক থাকে। অন্ধকারে তাহাজ্জুদ পড়া জায়েয। তবে, সামান্য আলো থাকলে সেটা উত্তম। বিশেষত সিজদার স্থানটি। তাহলে, কোনো পোকা-মাকড় বা অন্য কিছুর ভয় থাকে না।
.
❂ নামাজ দুই রাকাত করে পড়তে থাকুন। এটিই উত্তম। [বুখারি, আস-সহিহ: ৪৭২]
.
❂ সর্বনিম্ন ২ রাকাত থেকে শুরু করে ৪, ৬, ৮, ১০ রাকাতও পড়া যায়। এটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত। [আবু দাউদ, আস-সুনান: ১৩৫৭ ও ১৩৬২; আহমাদ, আল-মুসনাদ: ২৫১৫৯]
.
❂ নবিজি অধিকাংশ সময় রাতে ৮ রাকাত তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেন। [বুখারি, আস-সহিহ: ১১৪৭]
.
❂ যতক্ষণ স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে পড়তে পারবেন, ততক্ষণ পড়ুন। ঘুম পেলে শুয়ে পড়ুন। [বুখারি, আস-সহিহ: ২১২]
.
❂ তাহাজ্জুদের নামাজের বিশেষ কোনো নিয়ম নেই। সাধারণ সুন্নাত বা নফল নামাজের মতই এই নামাজ পড়তে হয়। বিশেষ কোনো সুরা দিয়ে এই নামাজ পড়তে হয় না। যেকোনো সুরা দিয়ে তাহাজ্জুদ পড়তে পারেন। তবে, যথাসম্ভব বড় সুরা পড়ুন। না পারলে একাধিক সুরা পড়ুন। নামাজ শেষে দু‘আ করা জরুরি নয়। তবে, শেষ রাতে দু‘আ কবুল হয়। তাই, সুযোগ হাতছাড়া করা উচিত নয়। যথাসম্ভব নিজের আমলকে গোপন রাখার চেষ্টা করুন।
.
তাহাজ্জুদের গুরুত্ব উপলব্ধির জন্য একটি আয়াত ও একটি হাদিস জেনে নিন।
.
❂ আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি রাতের বেলা সিজদারত থাকে বা (ইবাদতে) দাঁড়ানো থাকে, আখিরাতের ব্যাপারে শঙ্কিত থাকে এবং নিজ রবের অনুগ্রহ প্রত্যাশা করে, সে কি তার সমান, যে এমনটি করে না?’’ [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৯]
.
❂ আয়িশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, ‘কিয়ামুল লাইল (রাতের নামাজ) ত্যাগ করবে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (কখনো) এটি ত্যাগ করতেন না। যখন তিনি অসুস্থ থাকতেন বা ক্লান্তি অনুভব করতেন, তখন বসে আদায় করতেন।’ [আবু দাউদ, আস-সুনান: ১৩০৯, আহমাদ, আল-মুসনাদ: ২৪৯১৯; হাদিসটি সহিহ]
.
#তাহাজ্জুদ
#রবের_সান্নিধ্যে (দশম পর্ব)
আলহামদুলিল্লাহ,
.
#Tasbeeh