ইসলামি বই মেলা Vs বাংলার তথাকথিত সুশীল মিডিয়া
'১৯ সালে যখন ইসলামী বইমেলায় গেলাম, যদ্দূর মনে পড়ে মাগরিবের পরের সময়টাতে সেখানে ক্রেতা বলতে শুধু আমিই ছিলাম।
.
আমি খেয়াল করেছিলাম, সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় প্রত্যেকটা স্টলের ভাই আমার দিকে তীর্থের কাকের মত তাকিয়ে ছিল,এই বুঝি একজন কাস্টমার এলো।
.
সেলার ভাইয়েরা এতই বেকার সময় কাটাচ্ছিলেন যে,
বই কয়টা নিয়ে আমি যখন আসছিলাম, এক স্টলের ভাই আমাকে ডেকে কয়টা বই নিলাম, কোনটা কত দিয়ে নিলাম, কত পার্সেন্ট ছাড়ে নিলাম এমনকি ওনি হিসাব করে করে আমাদের এখান থেকে নিলে অত করে রাখতাম ইত্যাদি বলতেছিলো।
.
কিন্তু এবারের বইমেলার চিত্রটা দেখুন।
বিকেলে বা সন্ধ্যার পর পা ফেলানোর জায়গা পাওয়া যাচ্ছেনা।সেলার ভাইয়েরা হয়তো ক্লান্তি দূর করার সময় পাচ্ছেনা।
.
দু'দিন আগে দেখলাম, আজিমপুরের এক ছেলের বাই-সাইকেল চুরি হয়েছে সেটা মিডিয়া কাভার করছে। কোন এক নায়িকার জন্মদিন পালন নিয়ে কয়েকশ' রিপোর্ট করেছে; কিন্তু ঢাকার এরকম একটা পয়েন্টে এত মানুষের মিলনমেলা, এটা কাভার করেনি তারা।
অথচ বাংলা একাডেমির বইমেলা ফুল টাইম লাইভ ব্রডকাস্ট হয় হয়।
.
ওরা চায়না আল্লাহর নূরে মানুষ আলোকিত হোক; মানব সমাজ সত্যিকারের সভ্যতা শিখুক; যুবকেরা দলে দলে দ্বীনে ফিরে আসুক; ঘরে ঘরে দ্বীনি মেসেজ পৌঁছে যাক;
তাই বলে কি?
.
ওরা যতই মুখের ফুৎকারে আল্লাহর আলোকে নিভিয়ে দিতে চাক না কেন, আল্লাহ্ তো তার নূরকে পূর্ণতা দিবেনই।যদিও তা কাফেরদের কাছে অপছন্দের। [সূরা তাওবাহ:৩২]
.
দেশে প্রচুর মাহফিল, মজলিস বা আরো অনেক দ্বীনি এন্তেজাম হয়;কিন্তু সেগুলো নিজ নিজ মতাদর্শে বিশ্বাসী, আদর্শে আদর্শিতদের নিয়েই হয়।
উনারা তাদের কাছে আসেন না, তারাও ইনাদের কাছে যান না।
.
কিন্তু এবার আল্লাহর রহমতে ভিন্ন ভিন্ন মাসলাকের উলামা-ত্বলাবার এক অভূতপূর্ব মিলনমেলা দেখলাম।
আলহামদুলিল্লা-হ্!
.
আগে এরকমটা হয়নি। কারণ এরকম কোন উপলক্ষ্যই তো তৈরী হয়নি।
যেখানে সব ঘরণার মানুষ মিলিত হতে পারবে।
.
মনে হয়েছে, বড় আশা জন্মেছে, বিশ্বাস দৃঢ় হয়েছে যে, উম্মাহর মধ্যে যতই মতানৈক্য আর মতভেদ থাকুক,
দ্বীনের যেকোনো বৃহৎ স্বার্থের প্রয়োজনে সকলে এক কাতারে শামিল হয়ে যাবে খুব সহজেই ইন শা আল্ল-হ্।
.
এই বই বিপ্লব উম্মাহর মাঝে যতটা প্রভাব ফেলছে, তার চেয়ে বেশী প্রভাব ফেলছে বিদ্বেষীদের অন্তরে।
এটাও পরম পাওয়া।
.
প্রতিবছর ইসলামী বইমেলার এরকম আয়োজন হলে, তরুণ ও নবীন লেখক তৈরীতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।
.
আশা করি পরবর্তী বইমেলায়ই প্রচুর তরুণ আলিম আর ইসলামী লেখক বের হয়ে আসবেন ইন শা আল্ল-হ্।
আর আগামীর বিশ্ব হবে ইসলামী লেখক আর বইয়ের বিশ্ব।
যেখানে প্রত্যেকটা মানুষ হবেন একেকজন দ্বীনি পাঠক।
.
লিখা:মাহ্দী ফয়সাল